বাগানের নতুন ফুটবল সচিব।
এটা তো হল। ওটা কবে হবে?
একশো চার বছর আগের এক ২৯ জুলাই। ইস্টইয়র্ককে হারিয়ে মোহনবাগানের সেই ঐতিহাসিক আইএফএ শিল্ড বিজয়ের বিকেলে মাঠে হাজির এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ সবুজ-মেরুনের নায়ক শিবদাস ভাদুড়িকে ফোর্ট উইলিয়ামে ওড়া ইউনিয়ন জ্যাক দেখিয়ে ছুড়ে দিয়েছিলেন এই প্রশ্নটাই!
রবিবার রাতে বাগানের ফুটবল সচিবের জোব্বা গায়ে চড়ানোর পর সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় কি এই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন? শুনেই হাসছেন মোহনবাগান তাঁবুতে আঠারো বছর আগে প্রথম বার জাতীয় লিগ আনার মরসুমের সেরা ফুটবলার। ‘‘আরে আজ সকাল থেকে যেখানেই যাচ্ছি তাড়া করেছে এই প্রশ্নটা। সকলেরই প্রশ্ন, ফুটবল সেক্রেটারি তো হলে। আই লিগ কবে আসবে সত্য?’’
কথাটা বলেই চোয়াল শক্ত হয়ে যায় চব্বিশ ঘণ্টা আগে বাগানের আর এক ঘরের ছেলে সুব্রত ভট্টাচার্যকে ক্লাব নির্বাচনে হারানো সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের। সটান জানিয়ে দিলেন, আপাতত তাঁর লক্ষ্য একটাই। মোহনবাগানে সাফল্য ফেরানো।
আর সেই লক্ষ্যেই দায়িত্ব পাওয়ার পরের দিন থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন সত্যজিৎ। জয়ের সার্টিফিকেট নিয়ে বালির বাড়িতে ফিরেছেন রবিবার গভীর রাতে। সোমবার অফিস যাননি সবুজ-মেরুন সমর্থকদের প্রিয় সত্যদা। বিকেলে ক্লাবে এসেছিলেন। সেখানেই কোচ সঞ্জয় সেনের সঙ্গে বৈঠক করেন সচিব অঞ্জন মিত্র, সহ-সচিব সৃঞ্জয় বসু এবং অর্থসচিব দেবাশিস দত্তরা। বৈঠকে হাজির ছিলেন নতুন ফুটবল সচিবও।
সেই সত্যজিৎ বৈঠক থেকে বেরিয়ে বললেন, ‘‘মোহনবাগানে গত পাঁচ বছর ধরে কোনও সাফল্য নেই। সেই সাফল্যটাই ফিরিয়ে আনতে হবে সবার আগে। সেটাই আমার প্রথম চ্যালেঞ্জ।’’ মঙ্গলবারই সবুজ-মেরুন কোচ আর ফুটবলারদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন ফুটবল সচিব। সেখানে কী নিয়ে আলোচনা করবেন সেটা জানতে চাইতেই বেরিয়ে এল বালির ‘বুবুন’-এর নিজের ফুটবলার জীবনের সেই দৃঢ় মনোভাবটা। ‘‘মঙ্গলবার টিমের সঙ্গে বসে একটাই আর্জি জানাব। তোমরা সামনের রয়্যাল ওয়াহিংডো এবং স্পোর্টিং ক্লুব ম্যাচ থেকে ছ’পয়েন্ট এনে দাও। তোমরাই পারবে।’’ একটু থামলেন। তার পর ফের সেই আজীবনের লুকোনো জোশটা বেরিয়ে এল যেন। ‘‘মোহনবাগান কখনও প্রতিপক্ষ কোথায় পয়েন্ট হারাচ্ছে সেটা দেখে না। আমাদের দু’টো ম্যাচ জিততে হবে। তা হলেই বেঙ্গালুরু ম্যাচে আমরা সত্তর ভাগ এগিয়ে মাঠে নামব। এই ধরনের ম্যাচ কী ভাবে বার করতে হয় তা মোহনবাগান জানে। তবে সেই আত্মবিশ্বাসটা আসবে দু’টো ম্যাচ জিতলেই।’’
আই লিগে টিমের এই পরিস্থিতিতে বাগানকে জোড়া জাতীয় লিগ দেওয়া কোচ সুব্রত ভট্টাচার্যকে কি সত্যজিৎ ডাকবেন ফুটবলারদের ভোকাল টনিক দেওয়ার জন্য? এ বার সতর্ক শোনায় সুব্রতর টিমের মিডিও সত্যর গলা। ‘‘ক্লাব তাঁবুতে বাবলুদা প্রাক্তন ফুটবলার হিসেবে সব সময় স্বাগত। কিন্তু টিমকে অনুপ্রেরণা দিতে ডাকা হবে কি না সেটা নির্ভর করবে কোচের সিদ্ধান্তের উপর। আমরা কোচের সিদ্ধান্তকেই সম্মান করি।’’
মোহনবাগান তাঁবুর এত দিনের গুমোট পরিবেশ আপাতত উধাও। গোটা তাঁবুই এ দিন বিকেল থেকে গমগম করেছে কর্তা, সদস্য, সমর্থকদের আগমনে। এরই মাঝে মোহনবাগান মাঠে অনুশীলন করতে এসে সচিব-সহ বাগান কর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে যান আটচল্লিশ ঘণ্টা পরের প্রতিপক্ষ রয়্যাল ওয়াহিংডো কোচ সন্তোষ কাশ্যপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy