Advertisement
E-Paper

নেইমার ৪ মেসি ২

বার্সেলোনার জার্সিতে তাঁরা যতই বন্ধু হোন না কেন বিপক্ষ হিসেবে কতটা বিপজ্জনক সেটা দিন তিনেক আগে বেজিংয়ে ব্রাজিল-আর্জেন্তিনার ম্যাচে দেখেছে বিশ্ব। মঙ্গলবার যা দুই এশীয় ফুটবল দল হংকং আর জাপানের বিরুদ্ধে ফের দেখা গেল। ফ্রেন্ডলি ম্যাচে নেইমারের হ্যাটট্রিক-সহ চার গোলের ঝড়ে ব্রাজিল ৪-০ হারাল জাপানকে আর লিও মেসির জোড়া গোলের দাপটে আর্জেন্তিনার কাছে ৭-০ উড়ে গেল হংকং।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০২:০৬
হংকংকে ওড়াতে মেসির ঠিকানা লেখা শট।

হংকংকে ওড়াতে মেসির ঠিকানা লেখা শট।

বার্সেলোনার জার্সিতে তাঁরা যতই বন্ধু হোন না কেন বিপক্ষ হিসেবে কতটা বিপজ্জনক সেটা দিন তিনেক আগে বেজিংয়ে ব্রাজিল-আর্জেন্তিনার ম্যাচে দেখেছে বিশ্ব। মঙ্গলবার যা দুই এশীয় ফুটবল দল হংকং আর জাপানের বিরুদ্ধে ফের দেখা গেল। ফ্রেন্ডলি ম্যাচে নেইমারের হ্যাটট্রিক-সহ চার গোলের ঝড়ে ব্রাজিল ৪-০ হারাল জাপানকে আর লিও মেসির জোড়া গোলের দাপটে আর্জেন্তিনার কাছে ৭-০ উড়ে গেল হংকং।

তবে বার্সেলোনার রাজপুত্রের জোড়া গোলের থেকে ম্যাচে এক সমর্থকের হঠাত্‌ ঢুকে পড়া নিয়েও কম হইচই হচ্ছে না। আর্জেন্তিনীয় ক্যাপ্টেন যাঁর গায়ে থাকা নীল-সাদা জার্সিতে সইও দেন। মাস ছ’য়েক আগে ব্রাজিলের ম্যাচের পর মাঠে হঠাত্‌ ঢুকে পড়া এক খুদে সমর্থককে কোলে তুলে নিয়েছিলেন নেইমারও। দুই মহাতারকা মানুষ হিসেবে ঠিক কেমন, তা নিয়ে কৌতূহল কম ছিল না। এই ঘটনার পর তা আরও বাড়ল।

‘লিওনেল মেসি আর নেইমার জুনিয়র সাধারণ মানুষ!’

মন্তব্যটা সদ্যই করেছেন মার্ক আন্দ্রে স্টেজেন। তিনি কে? বরুসিয়া মনচেনগ্লাডবাখ থেকে এ মরসুমে ১২ মিলিয়ন পাউন্ডে বার্সেলোনায় যোগ দেওয়া গোলকিপার। ২২ বছরের জার্মান কিপার স্প্যানিশ ক্লাবে যোগ দেওয়ার আগে ভাবতেই পারেননি মেসি, নেইমারের মতো মহাতারকারা বাস্তবে কতটা মাটির কাছাকাছি থাকেন। তাই এক সাক্ষাত্‌কারে তিনি বলে দেন, “ওরা এত ভাল আর সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকে বোঝাতে পারব না। মাঠের পারফরম্যান্সের কথা বলছি না। সেখানে ওরা মহাতারকা। ব্যক্তিত্বের দিক থেকে ওরা মাটির মানুষ। যেটা বার্সেলোনায় মানিয়ে নিতে আমায় বিরাট সুবিধা দিয়েছে।”

তবে মাঠের বাইরে এই ‘মাটির মানুষ’রাই সবুজ গালিচার সংস্পর্শে আসলে কী রকম জ্বলে ওঠেন সেটাও হংকং স্টেডিয়ামে দেখল ফুটবল বিশ্ব। জোড়া গোলে যেন ব্রাজিল ম্যাচে পেনাল্টি ফস্কানোর শাপমুক্তি ঘটালেন মেসি। যদিও ম্যাচের প্রথম থেকে তাঁকে মাঠে নামাননি আর্জেন্তিনার কোচ জেরার্দো মার্টিনো। ঠিক ঘণ্টাখানেকের মাথায় মেসিকে যখন তিনি মাঠে নামার নির্দেশ দেন, হংকং স্টেডিয়ামে তখন সাদা-নীল জার্সি পরা দর্শকদের তীব্র চিত্‌কার শুরু হয়ে গিয়েছে।


জাপানকে গুড়িয়ে লাফ নেইমারের।

পরীক্ষামূলকভাবেই এ দিন ব্রাজিল ম্যাচের টিমে প্রচুর পরিবর্তন করেছিলেন জেরার্দো। বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৬৪ নম্বর টিমের বিরুদ্ধে মেসি ছাড়াও, অ্যাঞ্জেল দি মারিয়া, সের্জিও আগেরো, জেভিয়ার মাসচেরানো আর মার্কোস রোজোকে প্রথমে বেঞ্চে রেখেছিলেন আর্জেন্তিনা কোচ। প্রথম দলের বেশ কয়েকজন সতীর্থকে না পেয়ে হংকংয়ের রক্ষণে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্বটা নিয়েছিলেন প্রথমে ইগুয়াইন। আর্জেন্তিনাকে প্রথমে এগিয়ে দেন যদিও বানেগা। এর পর নাপোলির স্ট্রাইকারের জোড়া গোলে হংকংয়ের ডিফেন্স আরও তছনছ হয়ে যায়। ম্যাচের প্রথমে যদিও ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে দু’নম্বর দলকে চাপে রেখেছিল হংকংই। কিন্তু ডিফেন্সের ভুলে গোলের ‘ফ্লাডগেট’ একবার খুলে যেতেই আর আর্জেন্তিনাকে রোখা যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে ছ’মিনিটের মধ্যে মেসির জোড়া গোলে যা সোনার ফ্রেমে রেকর্ড হয়ে যায় সমর্থকদের মনে। দলের বাকি দুই গোল নিকোলাস জাইতানের।

মেসির দাপটের দিনেই তাঁর ক্লাব দলের সতীর্থ আবার ইতিহাস গড়লেন। যা ব্রাজিলের জার্সিতে পেলেও কখনও করে দেখাতে পারেননি। সোনালী জার্সিতে প্রথম অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলার হিসেবে চার গোল করার রেকর্ড। শুধু তাই নয়, জাপানের বিরুদ্ধে পেনাল্টি ছাড়া এক ম্যাচে চার গোল করার রেকর্ড ব্রাজিলের আর কোনও প্লেয়ারের গত ২৫ বছরে ছিল না। বার্সেলোনার বোমা সেই শূণ্যতাও পূরণ করেন। ২২ বছর বয়সি মহাতারকার এই নিয়ে জাতীয় দলের হয়ে ৪০ গোলও হয়ে গেল। ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের মধ্যে এখন তিনি পাঁচ নম্বরে। শীর্ষে পেলে। ৯২ ম্যাচে ৭৭ গোল করে।

যে ম্যাচে আবার স্টেডিয়ামের মাঠ আন্তর্জাতিক মানের ছিল না বলে প্রবল সমালোচনা হচ্ছে। তবে প্রায় ৫২ হাজার দর্শকদের সামনে নিজের দুরন্ত ফর্ম আর দাপট দেখাতে নেইমারের তাতে কোনও সমস্যাই হয়নি। ফ্রি কিক, স্প্রিন্ট, হেড, পাস সবকিছুতেই এশীয় চ্যাম্পিয়নদের নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছেন সাওপাওলোর ওয়ান্ডার কিড। জার্মানির কাছে সাত গোলে বিশ্বকাপে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ব্রাজিলের উঠে দাঁড়ানোর পথে এটা ছিল চার নম্বর ম্যাচ। কার্লোস দুঙ্গা জাতীয় দলের কোচের দায়িত্বে দ্বিতীয় ইনিংসে শুধু তারুণ্য নয়, কাকা-রোবিনহোদের অভিজ্ঞতার মিশেল এনে যে ফর্মুলা তৈরি করেছেন সেটা এই চার ম্যাচেই সুপার হিট। চার ম্যাচ জিতে শুধু নয় এখনও পর্যন্ত কোনও গোল না খেয়ে সেটা প্রমাণ করে দিয়েছেন দুঙ্গার ছেলেরা।

সতীথর্দের এ ভাবে উদ্বুদ্ধ করার পিছনে অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসতে পারে ক্যাপ্টেনের আগুণে ফর্ম। বিশ্বকাপে চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ার পর দুঙ্গার যোদ্ধারা যেন সোনালি জার্সিতে মাঠে আগুন ছোটাচ্ছেন। জাপানও যেটা হাড়েহাড়ে টের পেল।

দেশের জার্সিতে

নেইমার

ম্যাচ ৫৮, গোল ৪০, গোলের পাস ২৩

মেসি

ম্যাচ ৯৫, গোল ৪৪, গোলের পাস ২৬

কেরিয়ারে

নেইমার

ম্যাচ ৩৩২, গোল ১৯৮, গোলের পাস ৯৯

মেসি

ম্যাচ ৫১৯, গোল ৪০৬, গোলের পাস ১৬২

মঙ্গলবার এশিয়ায় জয়জয়কার আর্জেন্তিনা, ব্রাজিলের। ছবি: এএফপি

neymer messi hong kong japan football goals brazil argentina wins sports news online sports news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy