অলিম্পিক্সে ব্রাজিল অধিনায়কের প্রথম সাংবাদিক বৈঠক। পাশে নেইমারের পার্টি অ্যালবাম থেকে। ছবি টুইটার
বার্সেলোনার হয়ে ত্রিমুকুট জিতেছেন।
সান্তোসকে কোপা লিবার্তাদোরেস জিতিয়েছেন।
ব্রাজিলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় পাঁচে রয়েছেন।
মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে নেইমার দ্য সিলভার ফুটবল সিভি সত্যিই চমকে দেওয়ার মতো। কিন্তু এর পাশাপাশি আরও একটা দিক রয়েছে ব্রাজিলিয়ান দশ নম্বরের। তাঁর নৈশ জীবন, তাঁর লেট নাইট পার্টি।
অলিম্পিক্সে নেইমারকে ঘিরেই এখন সোনার স্বপ্ন দেখছে ব্রাজিল। কিন্তু এই নৈশ জীবন আর পার্টি কি তাঁর খেলায় প্রভাব ফেলবে না? এই নেইমারকে নিয়ে কি সত্যিই স্বপ্ন দেখা যায়? অলিম্পিক্স অভিযান শুরুর আগে এ দিনই ছিল ব্রাজিল অধিনায়কের প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন। আর প্রশ্নটা শোনা মাত্রই মেজাজ হারালেন ব্রাজিলের ‘ওয়ান্ডার কিড’। ‘‘চব্বিশ বছর বয়সে আমি কী কী পেয়েছি, সেটা আপনি জানেন? আমার যা টাকা আছে, সেটা কি আপনার আছে? আমার যা যা আছে, সে সব আপনার থাকলে আপনি কী করতেন?’’ এর পর না থেমেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ক্যাপ্টেন, ‘‘বেশ করেছি পার্টি করেছি। কেন পার্টি করব না? কেউ আমায় পার্টি করা থেকে আটকাতে পারবে না।’’
ব্রাজিল অধিনায়কের এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠে যায়। বিশ্বের বিভিন্ন নিউজ ওয়েবসাইটের শিরোনামগুলোর রিং টোন মোটামুটি দাঁড়িয়ে যায়— অলিম্পিক্সের সময় পার্টি করার শপথ নেইমারের।
যতই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে যাক, নিজের রুটিন যে তিনি পাল্টাবেন না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন নেইমার। যিনি ফুটবলের পাশাপাশি জীবনে নাইটক্লাবকেও রাখতে চান। মহাতারকার মন্তব্য, ‘‘কাজ ঠিক করলে ম্যাচের আগে রাতে পার্টি করলেও কোনও অসুবিধা নেই। আমি বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে ভালবাসি। সেটা বন্ধ করব কেন?’’
পরে একটু শান্ত হয়ে নেইমার বলতে থাকেন, ‘‘আপনারা আমার লাইফস্টাইল দিয়ে আমাকে বিচার করছেন কেন? আমাকে বিচার করতে হলে মাঠে আমার পারফরম্যান্স দিয়ে বিচার করুন।’’ কিন্তু তাতেও যে নেইমার নিয়ে বিতর্কের ঝড়টা থামছে, এমন নয়।
আসলে অলিম্পিক্স শুরু হওয়ার আগে যখন বাকিরা প্রস্তুতিতে মগ্ন, ব্রাজিল দলের ত্রিসীমানাতেও দেখা যায়নি ওয়ান্ডারকিডকে। কখনও তিনি বার্বেকিউ পার্টি করছেন। কখনও সেরিনা উইলিয়ামসের সঙ্গে সুইমিং পুলের ধারে ছবি পোস্ট করছেন। এর মাঝে নাইটক্লাবের অসংখ্য ছবি আর প্রায় প্রতিদিনই চুলের স্টাইল পাল্টে একটা করে নতুন টুইট।
ব্রাজিল যখন শতবর্ষের কোপায় একটার পর একটা ধাক্কা খাচ্ছে তখন নেইমার পুল পার্টির আয়োজন করেছিলেন। প্রিয় বন্ধু জাস্টিন বিবার সেই পার্টিতে ছিলেন প্রধান অতিথি। যেখানে নাচগান থেকে মদ্যপান সব কিছুই চলেছে। ফলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়া মাত্র স্বাভাবিক ভাবেই উঠে এসেছে দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্নটা। যা শুনে অল আউট আক্রমণে চলে যান নেইমার। বলতে থাকেন, ‘‘আমাকে মাঠের খেলা দিয়ে বিচার করুন। বাকিটা প্রাইভেট। আমার ব্যক্তিগত জীবনকে কেন আক্রমণ করা হচ্ছে? মাঠে আমার ভুলত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই পারেন। আমি কিচ্ছু মনে করব না। কিন্তু মাঠ থেকে বেরোনোর পরে পুরোটাই প্রাইভেট। ভুলে যাবেন না আমার বয়স মাত্র চব্বিশ।’’
সাংবাদিক সম্মেলনের আক্রমণের ঝাঁঝ অবশ্য কিছুটা কমে যায় রাতে। যখন তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেন, ‘‘দেশের হয়ে খেলার থেকে বড় সম্মান আমার কাছে কিছু নেই।’’
কিন্তু এই বিতর্ককে চাপা দিতে গেলে সম্ভবত অলিম্পিক্স সোনার থেকে কম কিছু পেলে চলবে না নেইমারের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy