দু’দলের ঝামেলা। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে।
দশ জনে পঞ্চাশ মিনিটেরও খেলে ম্যাচ ড্র রেখে ফাইনালে যাওয়ার পর কয়েক মিনিটও কাটেনি। জোসে মলিনা-সহ কলকাতার রিজার্ভ বেঞ্চ তখন উল্লাসের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ঠিক তখনই হঠাৎ শুরু হয়ে গেল হাতাহাতি, মারামারি।
ঘুষিতে চোখে আঘাত পেলেন কলকাতার প্রীতম কোটাল। দেখা গেল, রক্তঝরার জায়গাটা চেপে হতবাক এটিকে ডিফেন্ডার! তার আগে অবশ্য আরও বড় ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এটিকে স্ট্রাইকার বেলেনকোসো এবং মুম্বইয়ের স্যান্টোস কুনহা লালকার্ড দেখেছেন। কুনহা-ই প্রীতমকে ঘুসি মেরেছেন বলে অভিযোগ এটিকে শিবিরের। পাল্টা মুম্বই শিবিরের অভিযোগ, বেলেনকোসো প্রথম মারামারি শুরু করেন। শোনা যাচ্ছে, বেলেনকোসো নাকি মাথা দিয়ে মুম্বইয়ের প্লেয়ারকে ঢুঁসো মেরেছিলেন। সেখান থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। জবাবে আবার এলোপাথাড়ি মারতে থাকেন কুনহা। ঘটনা যাই হোক, সেটা এতটাই আকস্মিক ভাবে ঘটেছে যে, মারমুখী দুই ফুটবলারকে সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে দু’দলকে।
প্রীতম রাতে টিম হোটেল থেকে ফোনে বললেন, ‘‘খেলা শেষে আমি মাঠ থেকে বেরোচ্ছিলাম। হঠাৎ দৌড়ে এসে আমাকে মুম্বইয়ের ওই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারটা (কুনহা) ঘুসি মারল চোখে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি চোখ দিয়ে রক্ত ঝরছে। এখন বরফ লাগিয়ে কিছুটা ভাল আছি।’’
কলকাতার কর্তারা পুরো ঘটনায় এতটাই বিস্মিত যে, কেউ-ই ঠিক করে কিছু বলতে পারছেন না। কিন্তু সবার দাবি, ‘‘টিভি ফুটেজ দেখতে হবে। তবে মুমেবইয়ের ৩৭ নম্বর জার্সি (স্যান্টোস কুনহা) বেশি লাফালাফি করছিল। ও-ই ঝামেলা পাকিয়েছে।’’
সাংবাদিক সম্মেলনে এসে গণ্ডগোল এবং প্রীতমের রক্তাক্ত হওয়ার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন মলিনা। বলে দিয়েছেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’ ঝামেলা নিয়ে কিছু না বললেও তাঁর চমকপ্রদ স্ট্র্যাটেজি কাজে লেগে যাওয়ায় উচ্ছ্বসিত স্প্যানিশ কোচ বলে দিয়েছেন, ‘‘আমার টিমের চব্বিশ জন প্লেয়ারই যে তৈরি সেটা আজ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। এও বলছি, আমার টিমে কেউ অপরিহার্য নয়।’’ সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘স্ট্র্যাটেজি ছিল কিছুতেই আমার গোলের সামনে বল আসতে না দেওয়া। সে কাজটা সেরেনো-তিরিরা ঠিকঠাক করেছে।’’
প্রথম পর্বের সেমিফাইনালে কলকাতাকে জেতানো টিমের প্রথম একাদশের ন’জনই ফিরতি ম্যাচে বাদ। তা নিয়ে যখন ভারতীয় ফুটবলমহলে চূড়ান্ত আলোড়ন, তখন মলিনা শান্ত। মাথাই ঘামাচ্ছেন না। বলে দিচ্ছেন, ‘‘আমাদের সব ছেলেই যে তৈরি এবং তারা যে একই রকম প্রস্তুতি নিয়েছে, সেটা আজকের ম্যাচেই প্রমাণ।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ফাইনালে আপনি দিল্লি না কেরল কাকে চাইছেন? মলিনা বলে দেন, ‘‘ফাইনালে উঠেছি। যাদের সামনে পাব, তাদের সঙ্গেই খেলার জন্য আমরা তৈরি। এ বার আমাদের লক্ষ্য ট্রফি।’’
চোটের জন্য অর্ণব মণ্ডলকে ফাইনালে পাবেন না স্প্যানিশ কোচ। কার্ডের জন্য ছিটকে গেলেন বেলেনকোসো এবং রবার্ট। তাতেও মলিনার কপালে ভাজ পড়ছে না। বরং তার মুখে টিমগেমের জয়গান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy