নর্থ-ইস্ট কোচ ভিনগাদা।
জিকোর পর এ বার নেলো ভিনগাদা! কিংবদন্তি ব্রাজিলীয়ের পরে প্রাক্তন পর্তুগাল জাতীয় কোচ। আটলেটিকো কলকাতা ম্যাচ শহরে খেলার পরে দু’জনেই রেফারিকে একহাত নিয়ে গেলেন। রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামের প্রেস কনফারেন্স রুমে একই চেয়ারে বসে!
বৃহস্পতিবার ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের সামনে নিজের ক্ষোভ, রাগ, হতাশা উগড়ে দিলেন নর্থ-ইস্ট কোচ ভিনগাদা। ঠিক কিছু দিন আগের জিকো মতোই।
‘‘লাইন্সম্যানের নিশ্চয়ই কাঁধে কিছু সমস্যা রয়েছে, তাই বারবার ফ্ল্যাগ যে হাতে রয়েছে, সেই হাতটা তুলে দিচ্ছিলেন,’’ ম্যাচের প্রায় শেষ মিনিটে এটিকের হিউমের সমতা ফেরানোর গোল সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশটা এ ভাবেই কটাক্ষের সঙ্গে করলেন ভিনগাদা। হাসতে হাসতে। আইএসএলের আইনে রেফারির প্রকাশ্যে সমালোচনা করলে শাস্তি অনিবার্য। তাই এ ভাবে ঘুরিয়ে কটাক্ষ কাতসুমিদের কোচের।
আসলে হিউমের গোলের সময় সে দিকের সহকারী রেফারিকে দেখা গিয়েছিল হঠাৎ-ই পতাকা তুলতে। আবার সঙ্গে সঙ্গে সেটা নামিয়েও নেন তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে নর্থ-ইস্ট কোচ প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ফুটবলাররা খেলার নিয়মবিরুদ্ধ কোনও কাজ করলে সহকারী রেফারি ফ্ল্যাগ তোলেন। রেফারি সেটা দেখে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু হঠাৎ করে ফ্ল্যাগ তুলে আবার নামিয়ে নেওয়া হল কেন? এর পিছনে কি কোনও কারণ আছে?’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘আসলে রেফারি ভুল করলে ক্ষতি তো ফুটবল টিমের হয়। যেমন এটিকে ম্যাচে আমাদের হল। দু’টো পয়েন্ট নষ্ট হল। রেফারিদের কিছু যায়-আসে না।’’
টুর্নামেন্টে যখন শেষ চারে ওঠার লড়াই তীব্র আকার নিচ্ছে, তখন একের পর এক ম্যাচে রেফারিদের কাঠগড়ায় তুলছেন কোচেরা। কয়েক দিন আগে দিল্লি ডায়নামোস ম্যাচ ড্র করার হওয়ার পরে কলকাতা কোচ জোসে মলিনাও দিল্লির মাঠে রেফারিং নিয়ে সরব হয়েছিলেন। এ দিন আবার এটিকে কোচ রেফারিং নিয়ে কোনও কথা বলেননি। আসলে তাঁর টিম এতটাই জঘন্য ফুটবল খেলেছে যে মলিনার পক্ষে রেফারির ঘাড়ে দায় চাপানোরও বোধহয় উপায় ছিল না। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে মলিনা নিজের ডিফেন্ডারদের ভুল নিয়েই হতাশা প্রকাশ করেন।
পরিষ্কার বলে দেন, ‘‘নর্থ-ইস্টের গোলটা আমাদের ডিফেন্ডারদের ভুলে হয়েছে। ওই ভুলের জন্য পরে আমাদের সবার কাজটা অনেক বেশি কঠিন হয়ে গিয়েছিল। তবে এই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের পরের চেন্নাই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’’ সেই ম্যাচে সম্ভবত সামিঘ দ্যুতি টিমের সঙ্গে যেতে পারেন ইঙ্গিত দিলেনন স্প্যানিশ কোচ।
মলিনা প্রকাশ্যে ফুটবলারদের দোষ-ত্রুটি নিয়ে কিছু বলেন না। তাঁর রক্ষণ ডোবাচ্ছে দেখার পরেও ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন সেরেনো-অর্ণবদের। কিন্তু এ দিন তিনি দলের খেলায় এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন যে, বলে ফেলেন, ‘‘নর্থ-ইস্টের বিরুদ্ধে আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারিনি। আমার ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে খুশি নই। আমাদের আরও বেশি লড়াই করতে হবে। সব জায়গায় উন্নতি করতে হবে।’’ স্টেডিয়াম থেকে বেরনোর হওয়ার সময় এ দিনের এটিকে গোলদাতা হিউমও বলে গেলেন, ‘‘পরের ম্যাচগুলো আমাদের জিততেই হবে। না হলে শেষ চারে যাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।’’
মলিনার দাবি অবশ্য আলাদা। ‘‘শুধু আমাদের কাছেই নয়। ডু ওর ডাই পরিস্থিতি আইএসএলের সব টিমেরই। টিমগুলোর পয়েন্ট এত কাছাকাছি যে, কারা শেষ চারে উঠবে আর কারা উঠবে না, কিছু বলা যাচ্ছে না। সবাইকে সব ম্যাচ জিততে হবে। আমাদেরও একই অবস্থা।’’ ১০ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে ভিনগাদা এখনও স্বপ্ন দেখছেন শেষ চারে ওঠার। নর্থ-ইস্ট কোচের পরিষ্কার কথা, ‘‘আমরা এখনও লড়াইয়ে আছি। হয়তো লড়াইটা কঠিন হয়ে উঠছে। তবে হাতে আরও চারটে ম্যাচ রয়েছে। পয়েন্টের বিচারে আমরা কিন্তু খুব পিছিয়ে নেই। শুধু জিততে হবে।’’
লিগ টেবলের যা পরিস্থিতি তাতে দিল্লি ছাড়া শেষ চারে আর কোন তিনটি দল যাবে তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। মলিনা এবং ভিনগাদা যে একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy