মঙ্গলবার গভীর রাতে দুই কিংবদন্তির লড়াই টিভিতে দেখতে দেখতে চোখ চলে যাচ্ছিল ফিলিপ সঁতিয়ে কোর্টের স্ট্যান্ডে লেখাটার দিকে ‘‘ভিক্টরি বিলংগস টু দ্য মোস্ট টেনাসিয়াস।’’ অর্থাৎ সংকল্পে যে অনড় থাকে বিজয়মাল্য তার গলাতেই শোভা পায়।
মনে হচ্ছিল, রাফায়েল নাদাল বনাম নোভাক জোকোভিচের প্রায় চার ঘণ্টারও বেশি চলা এই কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটার জন্য এই কথাগুলো একেবারে যথোপযুক্ত। সত্যিই আমরা ভাগ্যবান টেনিসের তিন অন্যতম সেরা রত্ন রজার ফেডেরার, নাদাল আর জোকোভিচের ঐতিহাসিক লড়াইগুলোর সাক্ষী থাকতে পেরেছি গত আড়ই দশকে। কী অসাধারণ সব ম্যাচই না দেখেছি এদের। মঙ্গলবার রাতের ম্যাচটাও বহুদিন মনে থাকবে। শুধু এই প্রজন্মের দুই সেরা অ্যাথলিটের লড়াই দেখার সৌভাগ্য হল বলেই নয়, দুই প্রতিপক্ষের লড়াইয়ের উৎকর্ষ কোন পর্যায়ে যেতে পারে, সেটার সাক্ষী থাকতে পেরে। সেই লম্বা র্যালি। কোর্টের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে অক্লান্ত ভাবে বল ধাওয়া করে যাওয়া। আক্রমণ-প্রতিআক্রমণের দুরন্ত মিশেল দেখা গেল আবারও। যেখানে এক জন বিশ্বের এক নম্বর। অন্য জন ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন। সবচেয়ে বড় কথা, শেষে জয় হল সর্বস্ব উজাড় করে দেওয়া সেই নাছোড় নাদালেরই।
স্কোর দেখাবে নাদাল ৬-২, ৪-৬, ৬-২, ৭-৬ (৭-৪) ফলে হারিয়েছে জোকোভিচকে। কিন্তু যেটা দেখাবে না সেটা হল, এই জয়ের জন্য নাদালকে কোন পর্যায়ে নিজের খেলাকে তুলে আনতে হয়েছে। কয়েক দিন আগেই যে কি না হাঁটুর চোটের জন্য প্রিয় প্যারিসের ক্লে-কোর্টে নামতে পারবে কি না, ঠিক ছিল না। প্যারিসে সঙ্গে চিকিৎসক নিয়ে আসার কথাও বলেছিল। সে-ই শারীরিক সক্ষমতার চূড়ান্ত নিদর্শন রেখে সেমিফাইনালে উঠে গেল গত বারের চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে। যার কাছে গত বার সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছিল নাদাল।