Advertisement
০৪ মে ২০২৪

খারাপ পারফরম্যান্সকে ভাল প্রমাণ করাটাই এখন নিয়ম

ভারতের সেমিফাইনাল হারের পর দু’টো টিমের দু’টো ভিডিও ক্লিপিং আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ/ টিভির পর্দা/ ইউটিউব/ টুইটার হ্যান্ডল— সর্বত্র আছড়ে পড়েছিল। দুটোরই বিষয় দুর্দান্ত আর মি়ডিয়ার কাজে লাগার মতো

গৌতম গম্ভীর
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৫৫
Share: Save:

ভারতের সেমিফাইনাল হারের পর দু’টো টিমের দু’টো ভিডিও ক্লিপিং আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ/ টিভির পর্দা/ ইউটিউব/ টুইটার হ্যান্ডল— সর্বত্র আছড়ে পড়েছিল। দুটোরই বিষয় দুর্দান্ত আর মি়ডিয়ার কাজে লাগার মতো।

একটা যেটায় ডারেন স্যামি আর ডোয়েন ব্র্যাভো দ্বিতীয় জনের নতুন গানের অ্যালবাম ‘চ্যাম্পিয়ন্স’-এর বুগি-উগি মোডে! প্রথমে ওয়াংখেড়ের ড্রেসিংরুম। তার পরে ওদের টিম বাস হোটেলের লাগোয়া জায়গায় পৌঁছনো থেকে যতক্ষণ না ওরা লিফটের সামনে পর্যন্ত গেল, দুই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কেবল উদ্দাম নাচছিলই না। টিপিক্যাল ক্যারিবিয়ান প্রাণখোলা স্পিরিটটা জলজ্যান্ত দেখাচ্ছিল।

অন্য ভিডিওটা ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি যেখানে ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে ওর অবসর নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিল। এখানে সাংবাদিকটি ছিলেন অস্ট্রেলীয় নাগরিক যাঁকে ধোনি নিজের কাছে ডেকে নিয়ে মাইক শেয়ার করতে বলে।

লোকে ধোনিকে আক্রমণ করেছে সাংবাদিককে পাল্টা প্রশ্ন করার জন্য। সাধারণ ধারণা হল, ওর স্রেফ বলা উচিত ছিল, ‘‘না, আমি অবসরের ব্যাপারে কিছু ভাবিনি।’’ এবং এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে দরকার ছিল অন্য বিষয়ে চলে যাওয়া। কয়েক জন লেখক এটাও বড় করে দেখিয়েছেন, ধোনির ভারতীয় মিডিয়াকে পাত্তা না দেওয়াটা হয়তো টিমের মধ্যে ছোঁয়াচে আকার নিতে পারে।

যাক গে, ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি ভিডিওটা ইন্টারেস্টিং। প্রশ্ন হল, গোটা কাজটার ভাল বা খারাপ দিকটা তা হলে কী? উত্তরটা না হয় এটার পক্ষে আর বিপক্ষে, দু’টো দলের জ্ঞানগম্যির উপরই ছেড়ে দিচ্ছি।

বরং একটা ব্যাপার নিয়ে আমি নিশ্চিত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের পরিত্যক্ত অভিযানকে এ বার কিছু চতুর স্বার্থজনিত মানুষ চেষ্টা করবে ভাল প্রমাণ করে ছাড়তে। যেটা একটা নিয়মে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। কারণ ২০১৫ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ থেকে ভারত ছিটকে যাওয়ার পরেও একই ব্যাপার ঘটেছিল। ওখানে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারার আগে আমরা একটাই ভাল টিমকে হারিয়েছিলাম— দক্ষিণ আফ্রিকা। আর খানিকটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর বাইরে আমরা সাদামাঠা পাকিস্তান, বাংলাদেশ, জিম্বাবোয়ে, আয়ার্ল্যান্ড আর আমিরশাহিকে হারিয়েছিলাম। যে কোনও ক্রিকেটারই এটাকে টিমের সাধারণ পারফরম্যান্স বলবে, বিশেষ করে সেই টিম যদি আগের বারের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নামে। আশা করি একই জিনিস এ বার বিশ্ব টি-টোয়েন্টির ক্ষেত্রে ঘটবে না। এবং আমাদের চ্যালেঞ্জগুলোকে মাথা উঁচু করে স্বীকার করব আমরা।

আপনি যখন নিজের দেশে খেলছেন তখন বেশি ভাল রেজাল্টই আশা করবেন। কিন্তু দেখেশুনে মনে হল, আমাদের টিম তার আসল শক্তি কোনটা, সেটা নিয়েই ধন্দে ছিল। পাটা উইকেটে খেলবে, না টার্নারে? আমি এও মনে করি, সেমিফাইনালে শিখর ধবনকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তটা টিম ম্যানেজমেন্টের সেরা মুভ ছিল না। আগের কলামেই লিখেছিলাম যে, যদি এমন কোনও জায়গা থাকে যে উইকেটে রানের খরায় ভুগতে থাকা ব্যাটসম্যান নিজের ফর্ম ফিরে পেতে পারে, তা হলে তাকে ওয়াংখেড়েতে নামাও। আমি এও মনে করি, ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে আমাদের যতটা দাপট দেখানো উচিত ছিল বা পারা দরকার ছিল সেটা পারিনি।

এ দেশে যে টুর্নামেন্টের ফাইনালে আমাদের টিম নেই, সে রকম একটা ফাইনাল দেখাটা অনেক কম চাপের। এটা সেই ম্যাচ যেটার চূড়ান্ত ফলাফল নিয়ে আশঙ্কায় না থেকে বেশ রসিয়ে দেখব। সত্যি বলতে, কী মজাই না হবে যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারিয়ে দিতে পারে ইংল্যান্ডকে। তা হলে ‘চ্যাম্পিয়ন’ নাচের আরও একটা সংস্করণ দেখা যাবে। এ বার নিশ্চয়ই ওদের গোটা টিম নাচবে। যদিও আমার মন বলছে, দুই ফাইনালিস্টের মধ্যে ইং‌ল্যান্ড তুলনায় ভাল। হতে পারে ইংরেজরা স্প্রিঙ্কলার নাচ দেখাল।

যেটাই হোক, দু’দিক দিয়েই আমাদের জন্য মজা রয়েছে আজ

(হকআই কমিউনিকেশনস)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

wt20 goutam gamveer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE