লক্ষ্য: এশিয়ান গেমসে নামার আগে িবশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রুপো জয় আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে পি ভি সিন্ধুর। ফাইল চিত্র
তাঁর সমালোচকদের একহাত নিলেন পুসারলা বেঙ্কট সিন্ধু। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি রুপো জেতায় কেউ কেউ সমালোচনা করেছিলেন তাঁর। প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন তিনি বার বার ফাইনালে হেরে যাচ্ছেন। এ বারে পুল্লেলা গোপীচন্দের ছাত্রী সেই সমালোচনার জবাব দিতে বেছে নিলেন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটকে। সেখানে সমালোচকদের ঘুরিয়ে বিদ্রুপ করে লিখলেন, ‘‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে টানা দু’বার রুপো আনতে পেরে দারুণ আনন্দ পেয়েছি। আমি সোনা হারাইনি, রুপো জিতেছি। আর গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি আমার রুপো এখন ঝকঝক করছে।’’ এটা লেখার আগে তিনি জুড়ে দিয়েছেন একটি বিখ্যাত উদ্ধৃতিও। যেখানে মানুষকে লড়াই না ছাড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
নিজের পোস্টে সিন্ধু আরও লিখেছেন, ‘‘নানজিংয়ে দারুণ একটা সপ্তাহ কাটালাম। ফাইনালে হারতে হলেও বেশ কয়েকটা ভাল ম্যাচ খেলেছি। র্যাঙ্কিং অনুযায়ী আমি নিজের খেলার ধারাবাহিকতায় সত্যিই খুব খুশি। আমি মনে করি ধৈর্য্য আর ধারাবাহিকতাই সাফল্যের রহস্য। তাই এই বিশ্বাসটুকু পুরোপুরি আছে যে আমার সোনাও একদিন আসবে। আমার প্রতি সারা দুনিয়ার এত মানুষের সমর্থন আর ভালবাসা দেখে নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছি। তবে এটাই আমাকে এগিয়ে নিয়ে যায়।’’
বিশ্ব চ্যাম্পিয়শিপে নিজের সাপোর্ট স্টাফদের নিয়েও তিনি উচ্ছ্বসিত। লিখেছেন, ‘‘আমার অবিশ্বাস্য ভাল সাহায্যকারীদের ধন্যবাদ। প্রতিযোগিতার সময় ওরাই আমার জন্য স্তম্ভের মতো দাঁড়িয়ে থাকে। একইসঙ্গে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার স্পনসরদেরও। তবে একটা বিশেষ ধন্যবাদ আমার ফিজিয়োর প্রাপ্য। যিনি সব সময় আমাকে সাহায্য করার জন্য তৈরি হয়ে থাকেন। যখনই দরকার হয় তখনই এগিয়ে আসেন আমার জন্য। এবং অবশ্যই ধন্যবাদ জানাব আমার সব কোচেদের। যারা সব সময় আমাকে সাহায্য করে এসেছেন।’’
এ দিকে এক সাক্ষাৎকারে সিন্ধু জানিয়েছেন, আসন্ন জাকার্তা এশিয়ান গেমসের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পর্যাপ্ত সময় ভারতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়েরা পাননি। তবে একই সঙ্গে তাঁর আশা, ২০১৪ সালের এশিয়ান গেমসের চেয়ে ভারতীয় দল এ বার আরও ফল ভাল করবে। উল্লেখ্য, সে বার ভারত মাত্র একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিল। ঘটনাচক্রে সেই পদকটি ভারতীয় মেয়েদের দলই পেয়েছিল। সিন্ধুর আশা, এ বার তাঁরা পদকের রং বদল করতে পারবেন। প্রসঙ্গত এশিয়ান গেমস শুরু হচ্ছে আগামী ১৮ অগস্ট।
সিন্ধু বলেছেন, ‘‘এশিয়ান গেমসের লড়াইটা একেবারেই অন্য রকম। কারণ ওখানে একই সঙ্গে দলগত খেলা ও ব্যক্তিগত ইভেন্টে লড়তে হবে। তার জন্য আমরা প্রস্তুতির খুবই কম সময় পেয়েছি। তবে দলগত ভাবে গত বার আমরা ব্রোঞ্জ জিতেছিলাম। এ বার আশা করছি তার চেয়ে ভাল কিছুই হবে।’’
গত রবিবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে দ্বিতীয় বার রুপোজয়ী সিন্ধু মুখ খুলেছেন ব্যক্তিগত ইভেন্ট নিয়েও। তাঁর কথা, ‘‘ব্যক্তিগত ইভেন্টেও আশা করছি গত বারের চেয়ে আমার নিজের আরও ভাল ফল হবে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রুপো জয় আমার আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। আশা করছি, এই আত্মবিশ্বাসটাই জাকার্তায় আমাকে আরও ভাল খেলতে সাহায্য করবে।’’
আজ পর্যন্ত এশিয়ান গেমসের ব্যাডমিন্টনে মেয়েদের সিঙ্গলসে ভারত কোনও পদক জেতেনি। আর ব্যক্তিগত ইভেন্টে একমাত্র পদক জিতেছিলেন সৈয়দ মোদী। বিরাশিতে দিল্লি এশিয়ান গেমসে তিনি পুরুষদের ব্যক্তিগত ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জেতেন। তবে সিন্ধুকে নিয়ে পদকের স্বপ্ন দেখাই যায়। সদ্য শেষ হওয়া বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি জাপানের নজোমি ওকুহারা, আকানে ইয়ামাগুচি এবং কোরিয়ার সাং জি হিউনকে হারিয়েছেন। এই ফর্মের নিরিখেই পুল্লেলা গোপীচন্দ মনে করছেন জাকার্তাতেও সিন্ধু সফল হতে পারেন। প্রসঙ্গত গোপীচন্দ এশিয়ান গেমসের ভারতীয় ব্যাডমিন্টন দলেরও প্রধান প্রশিক্ষক। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় কোয়ার্টার ফাইনালে ওকুহারা এবং সেমিফাইনালে ইয়ামাগুচিকে হারানোটা খুবই ভাল পারফরম্যান্স। ওদের বিরুদ্ধে যে ভাবে ও খেলেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আশা করছি এশিয়াডেও সিন্ধু সফল হবে। ’’
এ দিকে, এশিয়াডের দল নিয়ে গোপীর জবাব, ‘‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে এমন চার জন খেলোয়াড় দলে রয়েছে। কখনও এত শক্তিশালী ভারতীয় দল এশিয়ান গেমসে খেলেনি। তবে ওদের খেলায় উন্নতির আরও সুযোগ রয়েছে। শ্রীকান্ত (কিদম্বি) ও প্রণয়ের (এইচএস) আরও ভাল খেলার ক্ষমতা আছে বলে আমি বিশ্বাস করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy