Advertisement
E-Paper

পেসারেরা স্বপ্ন দেখালেও কাঁটা সেই পাক ব্যাটিং

পাকিস্তান দলটায় প্রতিভার অভাব নেই। তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার মিশেলে ওরা এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সারপ্রাইজ প্যাকেজ। কিন্তু পাকিস্তান এই ম্যাচটা জিতলেও কয়েকটা প্রশ্ন থেকেই গেল।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৭ ০৪:২৯
হুঙ্কার: শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে উইকেট তুলে আমিরের উচ্ছ্বাস। ছবি: গেটি ইমেজেস

হুঙ্কার: শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে উইকেট তুলে আমিরের উচ্ছ্বাস। ছবি: গেটি ইমেজেস

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এ বার পাকিস্তানই সবচেয়ে বড় ধাঁধা। কোন দিন ওদের কী রকম পারফরম্যান্স দেখা যাবে, সেটার আন্দাজ লাগানো কঠিন। সোমবারও পাকিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ কিন্তু কোনও থ্রিলারের থেকে কম কিছু ছিল না। এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ট্র্যাডিশন মেনেই প্রতি মুহূর্তেই দেখলাম নতুন নাটক।

শেষমেশ পাকিস্তান জিতল ৩ উইকেটে। কিন্তু এই একটা ম্যাচই বুঝিয়ে দিল পাকিস্তানের শক্তিটা কী আর কোথায় ওরা দুর্বল। পাকিস্তান দলটায় প্রতিভার অভাব নেই। তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার মিশেলে ওরা এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সারপ্রাইজ প্যাকেজ। কিন্তু পাকিস্তান এই ম্যাচটা জিতলেও কয়েকটা প্রশ্ন থেকেই গেল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই পাকিস্তান ব্যাটিং অর্ডার কতটা লড়তে পারবে? যারা শ্রীলঙ্কার ২৩৬ রান তাড়া করতে গিয়ে এত হোঁচট খায়, তারা ইংল্যান্ডের শক্তিশালী বোলিং লাইন আপের বিরুদ্ধে কী করবে?

ব্যাটিং নিয়ে সংশয় থাকলেও শ্রীলঙ্কা ম্যাচ একটা জিনিস অন্তত পরিষ্কার করে দিল— বিশ্বমানের পেসার এখনও জন্মাচ্ছে পাকিস্তানে। দলের পেস লাইনই অসম্ভবকে সম্ভব করার ক্ষমতা রাখে। কার্ডিফের পিচ দেখে আমি ভেবেছিলাম শ্রীলঙ্কা বড় কোনও টোটালে পৌঁছবে। অন্তত ২৭০-২৮০ তো বটেই। কিন্তু পাকিস্তানের পেস ত্রয়ীর বিরুদ্ধে কোনও জবাবই খুঁজে পেল না শ্রীলঙ্কা। হ্যাঁ, হাসান আলি, জুনেইদ খান আর মহম্মদ আমিরের কথাই বলছি। দুর্দান্ত বল করল তিন জনই। ম্যাচের ছবিটাই ওরা পাল্টে দিল।

আরও পড়ুন: বিরাটের টনিকে বদলে গেল ভারত

পাকিস্তানের এই তিন পেসারের মধ্যে আমার সবচেয়ে ভাল লাগছে হাসান আলি-কে। ছেলেটা খুব ধারাবাহিক ভাবে বল করছে। ওর বড়় গুণ হচ্ছে পিচে বল হিট করে ব্যাটসম্যানকে সমস্যায় ফেলতে পারে। ব্যাটসম্যানকে শট খেলার কোনও জায়গা দেয় না। গতির পরিবর্তনও দেখার মতো। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও তো তিনটে উইকেট তুলল ও। স্লো বলে বোকা বানাল ব্যাটসম্যানকে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যে বল দিয়ে খেলা হচ্ছে সেটায় বেশি সুইং নেই। তাই স্টাম্প টু স্টাম্প বল করছে হাসান। খুব বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং যাকে বলে।

আমি এখনও বুঝতে পারছি না ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে কী করে জুনেইদ খানকে বসিয়ে রাখার ভুলটা করল পাকিস্তান। জুনেইদের মতো বোলার এ রকম পিচে আদর্শ। ভুবনেশ্বর কুমারের মতো জুনেইদও সুইংটা ভাল করায়। সঠিক লাইনে বল করে। বলটাকে সামনে পিচ করায়। তাই ওর বলে স্লিপ বা কট বিহাইন্ড হওয়ার সুযোগ থাকে। মহম্মদ আমির আবার পুরোটাই লাইন, লেংথ, গতির ওপর দাঁড়িয়ে। সঙ্গে বৈচিত্রও। শ্রীলঙ্কার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ (৩৯) আর নিরোশান ডিকওয়েলার (৭৩) পার্টনারশিপ সেট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমির (২-৫৩) আর জুনেইদের (৩-৪০) মাত্র চারটে ওভার লাগল ম্যাচের ছবি পাল্টাতে। ছ’রানের ব্যবধানে চার উইকেট তুলল ওরা দু’জন। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। মাত্র ২৩৬ রানেই অলআউট।

কিন্তু শুধু মাত্র ভাল পেসার দিয়ে এত বড় একটা টুর্নামেন্টে জেতা যায় না। সেই টোটাল ক্রিকেটে পাকিস্তানের কাঁটা হয়ে উঠেছে ওদের ব্যাটিং। টপ অর্ডার দেখলেই বোঝা যায় এদের অভিজ্ঞতাটা খুব কম। বাবর আজম প্রতিভাবান হতে পারে, কিন্তু চাপ নিতে পারে না। ফকর জামানও (৫০) উঠতি প্রতিভা। কিন্তু বড় রান তাড়া করার মানসিকতা কি আছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। পাকিস্তানের মিডল অর্ডার বলে কিছু নেই। মহম্মদ হাফিজ বা শোয়েব মালিক সিনিয়র ক্রিকেটার হওয়ায় আরও দায়িত্ব নিতে হবে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও দু’জনের খেলায় হতাশ হলাম। ফইম আশরফ আবার বেশি ঝুঁকি নিয়ে শট খেলল। ১৬২ রানে এক সময় ৭ উইকেট ছিল পাকিস্তানের। শ্রীলঙ্কার টোটালটা কম ছিল। সঙ্গে কদর্য ফিল্ডিংও করেছে ম্যাথিউজরা। ক্যাচের পর ক্যাচ ফস্কেছে। দিনের শেষে সেই জন্যই জয় পেল পাকিস্তান। সরফরাজের অপরাজিত ৬১ রানের চেয়েও আমার বেশি ভাল লাগল আমিরের ব্যাটিং। মাথা ঠান্ডা করে সাপোর্ট দিয়ে গেল। আবার সুন্দর কয়েকটা শটও মারল।

সবশেষে তাই বলা যেতেই পারে, শ্রীলঙ্কা-পরীক্ষা পাশ করে গেলেও ইংল্যান্ড কিন্তু পাকিস্তানের জন্য খুব কঠিন চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে।

Mohammad Amir Pakistan Bowling Sri Lanka Champions Trophy চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ICC Champions Trophy 2017 Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy