তখন পুঙ্গম কান্নন ফর্মের শিখরে। —নিজস্ব ছবি।
চলে গেলেন ‘এশিয়ার পেলে’ পুঙ্গম কান্নন। আজ, রবিবার বিকেলে থেমে গেল তাঁর লড়াই। বয়স হয়েছিল ৮০।
কান্ননের দেহ রাখা হয়েছে পিস হাভেনে। সোমবার তাঁর নশ্বর দেহ নিয়ে যাওয়া হবে মোহনবাগান ক্লাবে। সেখান থেকে দমদম বিমানবন্দর হয়ে তাঁর দেহ পাঠানো হবে বেঙ্গালুুরুর বাড়িতে। বেঙ্গালুরুতেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
৭ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন তেঘরিয়ার একটি নার্সিং হোমে। সেদিনও ছিল এক রবিবার। পরে সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় দক্ষিণ কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালে। এদিন সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
গত বছর থেকেই শরীরটা ভাল যাচ্ছিল না কলকাতার তিন প্রধানে খেলা ফুটবলারের (মোহনবাগানের হয়ে প্রায় আট বছর খেলেন কান্নন। ইস্টবেঙ্গল ও মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবে খেলেন এক বছর করে)। ইউরিক অ্যাসিডে আক্রান্ত হয়ে পা ফুলে গিয়েছিল তাঁর। ভাল করে হাঁটতে পারতেন না। সেই সঙ্গে ছিল হার্টের সমস্যা। আর্থিক অবস্থাও ভাল ছিল না। তাঁর শোচনীয় আর্থিক সঙ্কটের কথা শুনে এগিয়ে এসেছিলেন মোহনবাগান ক্লাবের সচিব স্বপন সাধন (টুটু) বসু। কান্ননের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তিনি। মোহনবাগান ফ্যান ক্লাবের সদস্যরাও তাঁকে আর্থিক সাহায্য করেছিলেন। এগিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় (জপুর) কাউন্সিলর সঞ্জয় দাস। রাজ্যের ক্রীড়া দফতরের প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্ল, কিংবদন্তি ফুটবলার শ্যাম থাপাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: গুরুতর অসুস্থ ‘এশিয়ান পেলে’ কান্নন, চিকিৎসার খরচ বহন করবে কে?
কিন্তু, যাঁদের সঙ্গে একসময়ে মাঠে নেমে খেলেছেন, ঘাম ঝরিয়েছেন, সেই ফুটবলাররা কান্ননের অসুস্থতার কথা শুনেও হাসপাতালে দেখা করতে যাননি। তাঁর নামে বেনিফিট ম্যাচ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। সরকারি ভাতাও পাননি তিনি। এক বার দুঃখ করে কান্নন বলেছিলেন, ‘‘এখন দুঃস্থ প্রাক্তন ফুটবলারদের সরকার আর্থিক সাহায্য করছে। আমার থেকে জুনিয়র ফুটবলারও আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন। যাঁরা সরকারি সাহায্য পাচ্ছেন, তাতে আমার কোনও অভিযোগ নেই। আমার একটাই প্রশ্ন, আমাকে কেন দেওয়া হবে না? আমি তো কিছুই পাইনি।’’
সেই সব অভিমান বুকে নিয়েই চলে গেলেন ১৯৬৬ সালের ব্যাঙ্কক এশিয়ান গেমসে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা ফুটবলার। তাঁর প্রয়াণে ময়দানে শোকের ছায়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy