Advertisement
০৪ অক্টোবর ২০২৩

পি টি উষার শুভেচ্ছা নিয়ে ফাইনালে যান দুই বঙ্গসন্তান

এশিয়াডে সোনা জেতার পরে নানা অভিনন্দন বার্তা এসেছে প্রণব-শিবনাথের কাছে। অথচ জাকার্তায় যাওয়ার আগে স্প্রিন্ট কুইনের আশীর্বাদ পেলেও ইন্ডিয়ান অলিম্পিক্স অ্যাসোসিয়েশন ব্রিজ খেলতে যাওয়া দলটিকে গুরুত্বই দেয়নি।

জুটি: সাংবাদিক বৈঠকে শিবনাথ ও প্রণব। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র

জুটি: সাংবাদিক বৈঠকে শিবনাথ ও প্রণব। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৫২
Share: Save:

তাস পিটিয়ে সোনার পদকের ম্যাচ খেলতে বোরোনোর সময় পিটি উষার শুভেচ্ছা নিয়ে গিয়েছিলেন সোনা জয়ী দুই বঙ্গ সন্তান প্রণব বর্ধন এবং শিবনাথ দে সরকার। সোমবার ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসে শিবনাথবাবু বলে দিলেন, ‘‘ফাইনাল খেলতে যাওয়ার আগে দেখি গেমস ভিলেজে উষা দাঁড়িয়ে। উনি তো এশিয়াডের প্রচুর পদক পেয়েছেন। আমরা বললাম, ‘আপনার মতো আমরাও সোনা জিততে যাচ্ছি।’ উনি বললেন জিতে ফিরুন।’’
ফাইনালে জেতার পর দুই ব্রিজ খেলোয়াড় চলে গিয়েছিলেন অবশ্য ছাতা কিনতে। দু’জনেই বলছিলেন, ‘‘ফাইনালে জিতলেও পরীক্ষকরা অনেক অঙ্ক করেন। যাতে বদলে যেতে পারে ফল। সেই টেনশন কাটাতেই চলে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে সোনা জিতেছি জেনে মনে হল উড়ছি।’’
এশিয়াডে সোনা জেতার পরে নানা অভিনন্দন বার্তা এসেছে প্রণব-শিবনাথের কাছে। অথচ জাকার্তায় যাওয়ার আগে স্প্রিন্ট কুইনের আশীর্বাদ পেলেও ইন্ডিয়ান অলিম্পিক্স অ্যাসোসিয়েশন ব্রিজ খেলতে যাওয়া দলটিকে গুরুত্বই দেয়নি। রেখেছিল অচ্ছুৎ করে। তিন দিন আগে যাওয়ার অনুমতি মিললেও এশিয়াডের ব্লেজারও পাননি ওঁরা। ফলে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী পদক প্রাপকদের যে সংবর্ধনার যে অনুষ্ঠান আজ এবং কাল বুধবার করছেন সেখানে ওঁরা যাচ্ছেন নিজেদের তৈরি করা পোশাক পরেই। এখানেই শেষ নয়, আইওএ-র নামের তালিকায় শিবনাথ সরকার লেখা হয়েছে। মাঝে যে ‘দে’ আছে সেটাই লেখা ছিল না।
তাস মানেই সর্বনাশ। এই ধারণাটা বদলে গিয়েছে এশিয়াডের মঞ্চে ভারত সোনা জেতার পর। পাড়ার রকে, ট্রেনে, বাসে তাস খেলে সময় কাটানোর উপকরণ নিয়ে আগ্রহ হঠাৎ বেড়েছে। হেপ্টাথলনে সোনা জয়ী স্বপ্না বর্মণের মতোই তাই প্রণব, শিবনাথদের নিয়ে উৎসাহ দেখাচ্ছেন অনেকেই। এবং এ দিন চার পদকজয়ীর সঙ্গে কথা বলে বেরিয়ে এসেছে চমকপ্রদ সব তথ্য।
যেমন এক) শুধু দু’টো সোনা নয়, দলগত বিভাগে দুটো ব্রোঞ্জও দেশের হয়ে জিতেছেন বঙ্গ সন্তান। এঁরা হলেন সুমিত মুখোপাধ্যায় এবং দেবব্রত মজুমদার। যা পদক তালিকায় সংখ্যা বাড়িয়েছে। দেবব্রতবাবু আবার পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। ব্রিজ খেলে চাকরি পেয়েছেন মেট্রো রেলে।
দুই) শুধু বাংলায় ১৫০০ নথিভুক্ত তাস খেলোয়াড় আছেন। তাদের মধ্যে ২০ জন পেশাদার। কোনও মহিলা অবশ্য খেলেন না তাস। দেশ-বিদেশে তাস খেলে ওঁরা রোজগার করেন প্রচুর টাকা। পান স্পনসরও। শুধু তাই নয়, রেল-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থায় চাকরি পাওয়া যায় অন্য খেলার মতো।
তিন) যে অকশন ব্রিজ খেলে সোনা এবং ব্রোঞ্জ জিতেছেন ওঁরা, সেটা পাড়ার রকে বা ট্রেনে খেলা তাসের সঙ্গে একেবারেই মিল নেই। হাতের কার্ডে খেলা হয় না। হয় কম্পিউটারে এবং একটা বিশেষ আনলাইনে। যার নাম ‘ব্রিজ বেস’। প্রতিদিন সেই অনলাইনে অনুশীলন করেন ওঁরা।
চার) এখানেও কোচ দরকার হয়। ভারতীয় দলের কোচ ছিলেন দেবাশিস রায়। নানা সাঙ্কেতিক চিহ্ন এবং বিপক্ষ খেলোয়াড়ের স্ট্র্যাটেজি বোঝানোর জন্য থাকেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE