রাজপুত্রের ব্যালন ডি’অর জয়ের প্রাক-উৎসব যেন শুরু হয়ে গেল বার্সেলোনায়।
লিওনেল মেসির মরসুমের প্রথম হ্যাটট্রিকে। গ্রানাডার বিরুদ্ধে শনিবার লা লিগায় মাঠে নামার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই বার্সেলোনার রাজপুত্রের হ্যাটট্রিক দেখল বিশ্ব। সঙ্গে নেইমারের দুরন্ত গোলে বার্সা জিতল ৪-০।
একে বার্সার ঘরের মাঠ তার উপর দুরন্ত ফর্মে মেসি। গ্রানাডার কপালে যে দুর্ভোগ ছিল ম্যাচের আগেই তাদের সমর্থকরাও হয়তো জানতেন। এই নিয়ে গত দু’বারের সাক্ষাতে ন্যু কাম্পে তাদের ১০টা গোল খাওয়াতেই যা পরিষ্কার ছিল। আশঙ্কা ছিল মেসির আগুনে আবার না ছারখার হয়ে যেতে হয়। সেটাই হল। মেসি ম্যাজিকে মুগ্ধ বিশ্বের তাতেও যেন আশা মিটছে না। প্রায় দশ মাস পরে এল যে মেসির হ্যাটট্রিক। তাই বছর পড়তে না পড়তেই আর্জেন্তিনীয় মহাতারকার হ্যাটট্রিক দেখে গ্যারি লিনেকারের টুইট, ‘‘২০১৬-র প্রথম হ্যাটট্রিক করে ফেলল মেসি। এত দেরি করে হ্যাটট্রিকটা আসল দেখে শকড।’’
বছরটা যে এলএম টেনের দুরন্ত হতে চলেছে তার ইঙ্গিতও যেন স্পষ্ট। ২০১৬-তে বার্সার আট গোলের মধ্যে সাতটার পিছনে মেসির হাত রয়েছে। পাঁচটি গোল নিজে করেছেন। বাকি দুটি গোলের পাস বাড়িয়েছেন। শুধু তাই নয় দাপটে জয়ে বার্সেলোনাকে পয়েন্ট টেবলে ফের শীর্ষে তুলে আনলেন আর্জেন্তিনীয় মহাতারকা। অন্তত রবিবার আটলেটিকো মাদ্রিদের ম্যাচ পর্যন্ত। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আটলেটিকোর থেকে এখন বার্সার দখলে এক পয়েন্ট বেশি।
দিন ক’য়েক আগেই লা লিগায় এস্পানিওলের কাছে গোলশূন্য ড্র করার পর কোপা দেল রে-তে একই দলের বিরুদ্ধে উত্তপ্ত ৪-১ জয়ের পর যেন গুমোট আবহাওয়া ছিল। গোটা ম্যাচে ১০টা হলুদ কার্ড আর দুটো লাল কার্ড দেখাতে হয় রেফারিকে। সবকটিই অবশ্য এস্পানিওলকে। সঙ্গে লুই সুয়ারেজ দু’ম্যাচ নির্বাসনের শাস্তিও পেয়েছিলেন ম্যাচে ঝামেলায় জড়ানোয়। এখানেই শেষ নয়। শুক্রবার দানি আলভেজের স্প্যানিশ প্রেসকে উদ্দেশ্য করে সোশ্যাল মিডিয়ায় করা মন্তব্য আগুনে আরও ঘি ঢেলেছিল। সে সব বিতর্ক পাশ কাটানোর সঙ্গে বার্সা ড্রেসিংরুমের থমথমে ভাবও যেন উধাও মেসি ম্যাজিক আর শনিবারের জয়ে। লড়াই শেষে ম্যাচ বলটাও তাই হয়তো পরম যত্নে দখল করলেন এলএম টেন।
বার্সার কোচ লুইস এনরিকে তাই হয়তো ম্যাচের পর বললেন, ‘‘মেসি অনন্য। ওর কোনও বিকল্প হয় না। দলের জন্য গোল করাটা বছরের পর বছর ওকে মোটিভেট করে যায়।’’ ম্যাচ শেষে আবার বিতর্ক সৃষ্টিও হল এনরিকের কথায়। বার্সাকে গত বার ত্রিমুকুট জিতিয়ে বর্ষসেরা কোচ হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে এনরিকে। কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানিয়ে দিলেন, ‘‘সোমবার আমি ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে যাচ্ছি না।’’ এরপর জল্পনা তুঙ্গে ওঠে, তা হলে কী চিলির জর্জ সামপাওলি বিশ্বসেরা কোচ হয়েছেন? আগেভাগে আবার বার্সা প্রেসি়ডেন্ট জোসেপ বার্তেমিউ বলে দিলেন, সোমবার খুব বেশি সময় নষ্ট না করে মেসিকে দেওয়া হোক ব্যালন ডি’অর।
যার অপেক্ষায় এখন মেসিভক্তরা।