ভারতীয় বোর্ড ডিআরএসে নেই। হক-আইয়ের কার্যকারিতায় একশো ভাগ বিশ্বাসী নয়। কিন্তু টিম ইন্ডিয়ার ভেতরেই একটা ‘হক-আই’ রয়েছে! রবিচন্দ্রন অশ্বিনের নাম এই গল টেস্টের উইকেটের সঙ্গে বরাবর উচ্চারিত হবে। কিন্তু স্কোরবোর্ড বলবে না যে, এই ম্যাচে অজিঙ্ক রাহানের চোখ অশ্বিন-সহ ভারতীয় বোলিংয়ের দিকে হক-আইয়ের দৃষ্টিতে সজাগ ছিল। সারাক্ষণ।
সেখানেও কোহলির কৃতিত্ব প্রাপ্য। কারণ ক্যাপ্টেন কোহলি একটা ব্যাপারে নীরবে ছাপ রেখেছেন গল টেস্টে। ফিল্ড প্লেসিং নিয়ে ছোট্ট পরিবর্তন। আর তাতেই বাজিমাত অজিঙ্ক রাহানের।
টেস্টে প্রথম ফিল্ডার হিসেবে এক ম্যাচে আট ক্যাচের বিশ্বরেকর্ড করে রাহানে ফাঁস করলেন, ‘‘সফরে আসার আগে বিরাট বলেছিল, স্পিনাররা বল করার সময় আমাকে স্লিপে দাঁড়াতে হবে। সাধারণত ফাস্ট বোলিংয়ের সময় আমি গালিতে থাকি। কিন্তু বিরাট চায়, ওর টিমের ক্লোজ-ইন ফিল্ডারদের নির্দিষ্ট পজিশন থাকবে না। তা ছাড়াও এই সিরিজে আমি প্রতিদিন প্র্যাকটিসে ৫০ থেকে ১০০টা ক্যাচ ধরছি।’’
সঙ্গকারার প্রিয় গলে তাঁর বিদায়ী ইনিংস রাহানের ক্যাচেই আজ সাঙ্গ হওয়া নিয়ে তরুণ মুম্বইকর সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, ‘‘আমি মাঠে শুধু বতর্মান নিয়ে ভাবি। তাই আমার ক্যাচে কোন ব্যাটসম্যানের কী হল, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র কৌতূহল ছিল না। তখন জানতাম একটা বড় উইকেট এই টেস্টে আমাদের জয়ের আরও কাছে নিয়ে যাবে। সঙ্গকারার উইকেট সেটাই করেছিল। তার পরপরই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজও আউট হয়ে গেল।’’
টেস্ট দলে রাহুল দ্রাবিড়ের বহু বছরের ট্রেডমার্ক পজিশনের বর্তমান ফিল্ডার রাহানে আরও বলছিলেন, ‘‘আইপিএলে আমরা স্লিপ ফিল্ডিং নিয়ে অনেক কথা বলেছি। দ্রাবিড় স্লিপে দাঁড়ানোর সময় কী ভাবতেন, কী ভাবে মনঃসংযোগ বাড়াতেন, কী ভাবে ফোকাস়ড্ থাকতেন প্রতিটা বলের সময়— সব আমাকে বলতেন। সব সময় বলেছেন, ফোকাস আর মনঃসংযোগ স্লিপ ফিল্ডিংয়ের আসল দুটো ফ্যাক্টর। আর অবশ্যই রিফ্লেক্স। বলতেন, টেস্টে হয়তো অনেকক্ষণ স্লিপে বল আসবে না। তার পরেই একটা ক্যাচ দুম করে এসে পড়বে। তাই মানানসই টেম্পারামেন্ট তৈরি রাখতে হবে।’’
রঙ্গনা হেরাথের ক্যাচ ধরে যে তিনি বিশ্বরেকর্ড করেছেন, জানতেনই না রাহানে। ‘‘ব্রেকে মুরলী বিজয় আর উমেশ যাদব আমাকে এসে ব্যাপারটা না বলা অবধি জানতামই না রেকর্ডের কথাটা। আমি তো বেশ অবাকই হয়ে পড়েছিলাম প্রথমে। তার পর দারুণ আনন্দ হল।’’