সাক্ষাৎ: রঞ্জি চলাকালীন যুবরাজের সঙ্গে সৌরভ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ধারাবাহিকতার অভাব? না কি বিপক্ষে বড় নাম দেখে ভয় পেয়ে যাওয়া?
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির মরণ-বাঁচন ম্যাচের প্রথম দিনেই ১৮৭ রানে শেষ হয়ে গেল বাংলার ইনিংস। ৭০ ওভারও টিকতে পারল না মনোজ তিওয়ারির দল। প্রথম দুই সেশনের মধ্যেই অলআউট। ছয় উইকেট নিয়ে মনোজদের পরীক্ষার মুখে ফেলে দিলেন পঞ্জাবের বাঁ হাতি স্পিনার বিনয় চৌধরি। গত ম্যাচে দিল্লির বিরুদ্ধে ৩২২ রান তাড়া করে জেতার পরের ইনিংসেই ফের ব্যাটিং বিপর্যয়ের আঁধার ফিরে এল বাংলা শিবিরে। যার কারণ খুঁজে পেলেন না দলের মেন্টর অরুণ লালও। দিনের শেষে পঞ্জাবের স্কোর ৪৭-২। একই পিচে সাবলীল ব্যাটিং করে ৩৬ রানে অপরাজিত শুভমন গিল। তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছেন আনমোলপ্রীত সিংহ (১)।
বেশ কয়েকটি ম্যাচের পরে টস জেতেন মনোজ। বড় রান করে বিপক্ষকে চাপে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। সেই সুযোগও ছিল বাংলার সামনে। কিন্তু ৫৩ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারিয়ে লাঞ্চের আগেই ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলা। স্পিন-সহায়ক পিচেও বাংলার দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন বিপক্ষ পেসার মনপ্রীত গোনি। স্লিপে ক্যাচ দেন অভিষেক রামন (০)। শেষ ম্যাচের নায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরন (৭) এলবিডব্লিউ হন পঞ্জাব পেসারের গতিময় ইনসুইংয়ে। ইনিংস গড়ার দায়িত্ব এসে পড়ে মনোজ ও সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের কাঁধে।
১৮তম ওভারের চতুর্থ বলে বিনয়কে কভার ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপেই ক্যাচ দেন মনোজ। বাঁ হাতি স্পিনারের বল মনোজের পায়ের সামনে থেকে ঘুরে ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপের উদ্দেশে। ২৯তম ওভারে লেগস্পিনার মায়াঙ্ক মার্কণ্ডেকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিড-উইকেটে ক্যাচ দেন অনুষ্টুপ মজুমদার। ব্যস, বাংলার ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড সেখানেই ভেঙে যায়। তার তিন বল পরেই বিনয়ের সোজা বল আছড়ে পড়ে ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়ের প্যাডে। শূন্য রানে প্যাভিলিয়নমুখী হন তিনি।
সেই পরিস্থিতি থেকে বাংলার হাল ধরে সুদীপ ও শ্রীবৎস গোস্বামীর জুটি। ঘূর্ণি পিচে সাবলীল ব্যাটিং করেন দুই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান। তাঁদের সুবিধার কারণ একটিই। বিপক্ষের দুই স্পিনারের বল তাঁদের দিকেই ঘুরছিল। লেগস্পিনার ও বাঁ হাতি স্পিনারের বল অনায়াসে লং-অনে ট্যাপ করে খুচরো রান কুড়িয়ে নিচ্ছিলেন সুদীপ, শ্রীবৎসেরা। ম্যাচের দু’দিন আগে এ ভাবেই সুদীপকে স্পিন সামলানোর টোটকা দিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ১৪২ বল খেলে ৫২ রান করেন সুদীপ। বাংলার ইনিংসে সর্বোচ্চ স্কোর শ্রীবৎসেরই (৫৭)। ৬৫ রানের জুটি গড়ার পরে বিনয়ের বল স্কোয়ার ড্রাইভ করতে গিয়ে আউট হন সুদীপ। দ্রুত রানের খোঁজে বাঁ হাতি স্পিনারকে মি়ড-উইকেটের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে তালুবন্দি হন শ্রীবৎস। লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানেরা রান যোগ করার চেষ্টা করলেও ২০০ রানের গণ্ডি পেরোতে ব্যর্থ হয় বাংলা। ক্ষুব্ধ অরুণ বলেন, ‘‘আমিও বুঝতে পারছি না, ওদের সমস্যাটা কোথায়? পিচে আহামরি কিছু তো হতে দেখলাম না!’’
তবে এখনই হাল ছাড়তে রাজি নন বাংলার মেন্টর। দিনের শেষে বলে গেলেন, ‘‘এটা চার ইনিংসের ম্যাচ। কাল সকালে শুভমনের উইকেটটি দ্রুত তুলে নিতে পারলেই ম্যাচের রং বদলে যাবে। মনে রাখবেন, চতুর্থ ইনিংসে কিন্তু এই পিচে ব্যাট করতে হবে পঞ্জাবকেই।’’
স্কোরকার্ড
বাংলা ১৮৭(৬৯.১ ওভার)
পঞ্জাব ৪৭-২ (২০ ওভার)
বাংলা (প্রথম ইনিংস)
অভিষেক ক গুরকীরত বো গোনি ০
অভিমন্যু এলবিডব্লিউ বো গোিন ৭
সুদীপ ক মনদীপ বো বিনয় ৫২
মনোজ ক গোনি বো বিনয় ৪
অনুষ্টুপ ক শুভমন বো মার্কণ্ডে ১৫
ঋত্বিক এলবিডব্লিউ বো বিনয় ০
শ্রীবৎস ক আনমোলপ্রীত বো বিনয় ৫৭
গনি এলবিডব্লিউ বো বিনয় ৫
প্রদীপ্ত ক খেরা বো সিদ্ধার্থ ১৯
ডিন্ডা বো বিনয় ১৮
মুকেশ ন. আ ১
অতিরিক্ত ৯
মোট ১৮৭
পতন: ১-২ (অভিষেক, ৪.১), ২-২১ (অভিমন্যু, ১০.৬), ৩-৩০ (মনোজ, ১৭.৪), ৪-৫৩ (অনুষ্টুপ, ২৮.৪), ৫-৫৩ (ঋত্বিক, ২৯.১), ৬-১১৮ (সুদীপ, ৫১.৬), ৭-১২৮ (গনি, ৫৫.৬), ৮-১৬৩ (প্রদীপ্ত, ৬৪.৫), ৯-১৬৭ (শ্রীবৎস, ৬৫.২), ১০-১৮৭ (ডিন্ডা, ৬৯.১)।
বোলিং: মনপ্রীত গোনি ১০-৩-১৯-২, সিদ্ধার্থ কল ১৪-৪-২৪-১, মায়াঙ্ক মার্কণ্ডে ২১-০-৫৬-১, বিনয় চৌধরি ২০.১-৩-৬২-৬, গুরকীরত সিংহ ৩-০-১৩-০, আনমোলপ্রীত ১-০-৭-০।
পঞ্জাব (প্রথম ইনিংস)
জীবনজ্যোৎ ক শ্রীবৎস বো মুকেশ ১০
শুভমন গিল ব্যাটিং ৩৬
মায়াঙ্ক মার্কণ্ডে বো মুকেশ ০
আনমোলপ্রীত ব্যাটিং ১
অতিরিক্ত ০
মোট ৪৭-২
পতন: ১-৪০ (জীবনজ্যোৎ, ১৪.৫), ২-৪০ (মায়াঙ্ক, ১৪.৬)।
বোলিং: অশোক ডিন্ডা ৫-১-১৪-০, মুকেশ কুমার ৫-০-১০-২, প্রদীপ্ত প্রামাণিক ৩-১-৭-০, আমির গনি ৭-১-১৬-০।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy