জন্মদিনের মেজাজ। সপরিবার র্যান্টি।
কেক-এর রং লাল-হলুদ।
কেকের উপর ২৯-এর বদলে ১০ নম্বর লেখা। র্যান্টি মার্টিন্সের জার্সির নম্বর ওটা।
বিশেষ ভাবে অর্ডার দিয়ে স্বামীর জন্মদিনের কেক বানিয়ে এনেছিলেন তিতিলায়ো। র্যান্টির স্ত্রী। বাইপাসের ধারে বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে শুক্রবার দুপুরে যখন কেক কাটছেন র্যান্টি, তখন তাঁর এক পাশে সস্ত্রীক ডুডু ওমাগবেমী, অন্য পাশে ‘হ্যাপি বার্থ ডে টু র্যান্টি’ গাইছেন সস্ত্রীক লিও বার্তোস।
৫ সেপ্টেম্বর র্যান্টির ২৯ তম জন্মদিন। বিশেষ দিন হলেও এ সব নিয়ে হুল্লোড় একেবারেই না-পসন্দ নাইজিরিয়ান গোলমেশিনের। কিন্তু তিতিলায়োই প্রতি বার জোর করে জন্মদিন পালন করেন। এ বার তো মরসুমের শুরুটাই দারুণ ভাবে হয়েছে। অভিষেক ডার্বিতেই জোড়া গোল। র্যান্টির জন্মদিনটাকে সে জন্যই আরও স্পেশ্যাল করে দিয়েছে। এ দিন র্যান্টির পছন্দের নাইজিরিয়ান মেনু রেঁধেছিলেন তিতিলায়ো। দুপুর থেকেই সস্ত্রীক বার্তোস এবং ডুডু এসে হাজির। আর রাতে ঘনিষ্ঠ কিছু বন্ধুর আসার কথা। সব মিলিয়ে একেবারে জমজমাট পার্টির মেজাজে পাওয়া গেল লাল-হলুদের তিন বিদেশিকে।
বন্ধুদের নিয়ে সেলিব্রেশনের মাঝেও র্যান্টির মাথায় ঘুরছে ট্রফির ভাবনা। লাল-হলুদ জার্সিতে তিনি সব ট্রফি জিততে চানএটাই তাঁর জন্মদিনের শপথ। গোলমেশিন বলছিলেন, “আমি ইস্টবেঙ্গলকে সব ট্রফি দিতে চাই। আমার জন্মদিনের এটাই প্রতিজ্ঞা বলতে পারেন।” আর র্যান্টির শপথ রক্ষার দায়বদ্ধতাও দেখা গেল জন্মদিনের সকালে। ম্যাচের পরদিন সাধারণত প্রথম একাদশের ফুটবলারদের অনুশীলন বাধ্যতামূলক থাকে না। সে জন্যই আর্মি একাদশের বিরুদ্ধে জয়ের নায়ক ডুডু শুক্রবার সকালে অনুশীলনে আসেননি। চোট থাকায় লিও বার্তোস এলেও অনুশীলন করেননি। মাঠের বাইরেই বসে ছিলেন। র্যান্টি কিন্তু সিরিয়াস। অনুশীলনে এসে গা ঘামালেন। অন্য দিনের মতো পরিশ্রম না করলেও, হাল্কা অনুশীলন করতে দেখা গেল তাঁকে। দৌড়োদৌড়ি, স্ট্রেচিং।
এই প্রথম সমর্থকের-ক্লাবে খেলছেন র্যান্টি। তাঁদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস, চোখের জল সবটাই ইতিমধ্যে যেন তাঁকে ছুঁয়ে গিয়েছে মনে হল। ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলকে জিতিয়ে আরও একাত্ম হয়ে গিয়েছেন লাল-হলুদ সমর্থকদের সঙ্গে। তাই এ দিনেও সমর্থকদের আনন্দের কথা বলছিলেন বারবার। “লাল-হলুদ জার্সি পরে ট্রফি জয়ের গুরুত্বটা আমি জানি। আমাদের সাফল্যের সঙ্গে হাজার হাজার সমর্থকের আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য কলকাতা লিগ থেকেই ট্রফি জয়ের অভ্যেস তৈরি করে ফেলা।” কলকাতা লিগ, ফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন হলেও ইস্টবেঙ্গল আই লিগে আটকে যাচ্ছে। এ বার কি ডুডু-র্যান্টির পক্ষে আই লিগ জেতানো সম্ভব? ডেম্পোকে পাঁচ বার আই লিগ দেওয়া ফুটবলারের অভিজ্ঞতা থেকে র্যান্টি বললেন, “আই লিগে আমাদের সবাইকে সেরাটা দিতে হবে। সব ম্যাচের চাপ একসঙ্গে নিতে গেলেই সমস্যা। একটা একটা করে ম্যাচ ধরে ভাবতে হবে। তবে আই লিগ এখনও অনেক দূরে। তার আগে তো অনেক টুর্নামেন্ট আছে। আর এই মুহূর্তে আমি কলকাতা লিগেই মনোযোগ দিতে চাই।”
র্যান্টি-ডুডু জুটি কলকাতা লিগে ইতিমধ্যেই আলো ছড়াতে শুরু করেছেন। স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন লাল-হলুদ সদস্য-সমর্থকদের। “ডুডুর সঙ্গে আমার জুটিটা মনে হচ্ছে বেশ জমে যাবে। মাত্র দুটো ম্যাচে খেলেছি। তাতে এখনও পর্যন্ত সাফল্যই এসেছে। এর পরের ম্যাচগুলোতেও আমাদের জুটি আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা নেবে বলে আমি আশাবাদী,” বলছিলেন ইস্টবেঙ্গল জনতার আদরের র্যান্টি। দেখার, জন্মদিনে নেওয়া শপথ র্যান্টি শেষ পর্যন্ত ছুঁতে পারেন কি না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy