Advertisement
E-Paper

বেঙ্গালুরু-বধ করেও উচ্ছ্বাস নেই রবিনের

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ। নাটকীয় জয়। ওয়েডসন আনসেলমে, রবিন সিংহের যুগলবন্দিতে বেঙ্গালুরু এফসি-বধ করে আই লিগের শীর্ষ স্থানে ইস্টবেঙ্গল। দুরন্ত জয়ের পরেই বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে লাল-হলুদ কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের তোপ, ‘‘ফুটবলাররাই যাবতীয় কটাক্ষের জবাব দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪১
রবিন সিংহ। পুরনো ক্লাবের বিরুদ্ধে জোড়া গোল। -ফাইল চিত্র

রবিন সিংহ। পুরনো ক্লাবের বিরুদ্ধে জোড়া গোল। -ফাইল চিত্র

ইস্টবেঙ্গল ৩ : ১ বেঙ্গালুরু এফসি

(রবিন ২, ওয়েডসন) (বিনীত)

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ। নাটকীয় জয়।

ওয়েডসন আনসেলমে, রবিন সিংহের যুগলবন্দিতে বেঙ্গালুরু এফসি-বধ করে আই লিগের শীর্ষ স্থানে ইস্টবেঙ্গল। দুরন্ত জয়ের পরেই বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে লাল-হলুদ কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের তোপ, ‘‘ফুটবলাররাই যাবতীয় কটাক্ষের জবাব দিয়েছে। ওরা জানে কীভাবে ফিরে আসতে হয়। ফুটবলাদের জন্য আমি গর্বিত।’’

রবিনের কাছেও ম্যাচটা ছিল জবাব দেওয়ার! বছর দু’য়েক আগেও বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে তাঁর ছবি ঝুলত। অথচ গত বছর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে গিয়ে হাঁটুতে চোট পাওয়ার পর রবিনকে ব্রাত্য করে দিয়েছিলেন বেঙ্গালুরু কর্তারা। সুস্থ হয়ে মাঠে ফেরা সত্ত্বেও চুক্তি করেননি তাঁর সঙ্গে। ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ নিয়েই ইস্টবেঙ্গলে ফিরে আসেন রবিন। লাল-হলুদ জার্সি গায়েই চলতি আই লিগে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বেঙ্গালুরু-বধ করে নির্মম প্রতিশোধ নিলেন রবিন।

প্রথমবার বারাসত স্টেডিয়ামে ২২ জানুয়ারি। এ দিন একেবারে সিংহের গুহার ঢুকে সিংহ শিকার করে!

তবে ৫৪ ও ৫৯ মিনিটে গোল করে উপেক্ষার জবাব দিয়েও আশ্চর্যরকম ভাবে উচ্ছ্বাসহীন লাল-হলুদের জয়ের নায়ক। সতীর্থরা উৎসবে মেতে উঠলেও নিজেকে গুটিয়ে রাখলেন। উল্টে গোল করার জন্য হাত জোড় করে ক্ষমা চাইলেন বেঙ্গালুরু সমর্থকদের কাছে! বুকের বাঁ দিকে ডান হাত রেখে যেন বলতে চাইলেন— ইস্টবেঙ্গলে চলে গেলেও তোমাদের ভুলিনি। আমার হৃদয়েই আছ তোমরা।

অথচ এই ম্যাচটা খেলাই হতো না রবিনের! বেঙ্গালুরুগামী দলে প্রথমে রবিনের নামটাই ছিল না। ক্লাব কর্তাদের উদ্যোগেই শেষ মুহূর্তে দলে ঢোকেন তিনি। শনিবার ম্যাচের পর মর্গ্যানকে যখন ফোনে ধরা হল, তিনি তখন টিম বাসে করে হোটেলে ফিরছিলেন। লাল-হলুদ কোচ বললেন, ‘‘রবিনের নাম কোনও কারণে বাদ পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু দ্রুত সেই ভুলটা শুধরে নিয়েছিলাম।’’

এ দিন বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে পুরো ইস্টবেঙ্গল দলটাই যেন ভুল শুধরে নেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে নেমেছিল।

আরও পড়ুন:

পুরো সময় সনিকে খেলাবেন না সঞ্জয়

কলকাতা ছাড়ার আগেই মর্গ্যান তাঁর তিনটি সংকল্পের কথা জানিয়েছিলেন। এক) আইজল ম্যাচে ভুলের পুনরাবৃত্তি না করা। দুই) সুনীলদের আটকাতে শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলা। তিন) বেঙ্গালুরুর মিডফিল্ডারদের বল ধরতে না দেওয়া। এ দিন ম্যাচের শুরু থেকে ঠিক সেটাই করে গেলেন লাল-হলুদের ফুটবলাররা। ম্যাচ শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে বেঙ্গালুরুর সি কে বিনীত গোল করলেও স্ট্র্যাটেজি বদলায়নি ইস্টবেঙ্গলের।

মেহতাব হোসেন-রওলিন বর্জেস স্বাভাবিক খেলাই খেলতে দেননি সুনীল, হরমনজ্যোৎ সিংহ খাবরা-দের। চক্রব্যূহে বন্দি হয়ে হতাশায় মাথা গরম করে হলুদ কার্ড দেখলেন সুনীল। অন্য দিকে, ওয়েডসন ও রবিন ক্রমাগত চাপ বাড়ালেন প্রতিপক্ষের রক্ষণে। ২৩ মিনিটেই বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের শটে বিশ্বমানের গোল করেন হাইতি তারকা। এ দিন এক বারের জন্যও উইলিস প্লাজার অভাব বুঝতে দেননি ওয়েডসন। কিন্তু ৫৭ মিনিটে কুঁচকিতে চোট পেয়ে উঠে গিয়ে উদ্বেগ বাড়ালেন তিনি। মর্গ্যান বললেন, ‘‘রবিবার স্ক্যান করালেই বোঝা যাবে ওয়েডসনের চোট কতটা গুরুতর।’’

১১ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের এক নম্বরে থাকলেও উচ্ছ্বসিত নন লাল-হলুদ কোচ। ইস্টবেঙ্গল শিবিরের অভিযোগ, ম্যাচের আগে বেঙ্গালুরু সমর্থকরা মেহতাবদের টিম বাস স্টেডিয়ামে ঢুকে বাধা দিয়েছিলেন। আর ম্যাচ শেষ হওয়ার পর দু’দলের ফুটবলারদের হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। মর্গ্যান বললেন, ‘‘মাঠের বাইরের ঘটনা আমার কাছে গুরুত্বহীন। কারণ, আই লিগে এখনও অনেক ম্যাচ খেলা বাকি। সামান্য ভুল করেই খেতাবের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমি লাজংয়ের বিরুদ্ধে পরের ম্যাচটা নিয়ে ভাবতে চাই।’’

বেঙ্গালুরু থেকেই শিলং-জয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গলে।

ইস্টবেঙ্গল: রেহনেশ, রবিন, গুরবিন্দর, বুকেনিয়া, রবার্ট (নারায়ণ), নিখিল, মেহতাব, রওলিন (ডেভিড), পেইন, ওয়েডসন (রফিক) ও রবিন।

Robin Singh East Bengal Twice Goal Bengaluru FC I League
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy