Advertisement
E-Paper

হিটম্যানের এক হাতের ছক্কায় যেন ভিভের ঔদ্ধত্য

শনিবার মুম্বইয়ের ব্যাটিংয়ের শুরুটা দেখে মনে হয়েছিল শেষ দিকে ওরা চাপে পড়ে যেতে পারে। কিন্তু রোহিত নামার পরে সব চাপ যেন উধাও হয়ে গেল।

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৩৪
নায়ক: ৩৩ বলে অপরাজিত ৫৬ রান করে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে জেতালেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শনিবার। ছবি: পিটিআই

নায়ক: ৩৩ বলে অপরাজিত ৫৬ রান করে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে জেতালেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শনিবার। ছবি: পিটিআই

ভাল ব্যাটিং করলেন অম্বাতি রায়ডু। সুরেশ রায়নাকেও পাওয়া গেল চেনা আগ্রাসী মেজাজে। কিন্তু এঁদের সবাইকে ছাপিয়ে গেলেন রোহিত শর্মা। শনিবার রোহিতের ব্যাটে ঝড় ওঠায় হারল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। রোহিতের ৩৩ বলে ৫৬ রানের ইনিংস মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে জেতাল আট উইকেটে।

শনিবার মুম্বইয়ের ব্যাটিংয়ের শুরুটা দেখে মনে হয়েছিল শেষ দিকে ওরা চাপে পড়ে যেতে পারে। কিন্তু রোহিত নামার পরে সব চাপ যেন উধাও হয়ে গেল। তবে বেঙ্গালুরুতে যে পারফরম্যান্স করেছিলেন রোহিত (৫২ বলে ৯৪), তা এ দিনও হয়তো দেখা যেত, তিনি ওপেন করতে নামলে। অবশ্য তিন নম্বরে নেমেও যা দেখালেন, সেটাই বা কম কী? দু’টো ছয় ও ছ’টা চার মারলেন। শেন ওয়াটসনকে মিড অফের উপর দিয়ে এক হাতে যে ছয়টা হাঁকালেন, তা নিখুঁত টাইমিংয়ের ফল। ভিভ রিচার্ডসের মতো আগ্রাসী ব্যাটসম্যানকেও এ রকম শট মারতে দেখেছি বলে মনে পড়ে না। সেরা ফর্মে রোহিত শর্মা এ রকমই। ভিভের মতোই ঔদ্ধত্য যেন ওঁর ব্যাটিংয়ে।

মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ভালর জন্যই রোহিতের রানের মধ্যে থাকা খুব দরকার। আর রানে থাকার জন্যই ওঁর প্রতি ম্যাচে ওপেন করতে নামা প্রয়োজন। ওপেন করতে নামলে রান তোলার যথেষ্ট সময় যে পাবেন রোহিত। সূর্যকুমার যাদব বা এভিন লুইসকে বিন্দুমাত্র খাটো করতে চাই না। ওঁরা যথেষ্ট ভাল ফর্মে আছেন। শনিবারও জয়ের ভিত তৈরি করে দিলেন ওঁরা। কিন্তু মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এখন যা চাপে, সেই চাপ কাটাতেই রোহিতের ওপেন করতে নামা উচিত।

আসলে লিগ তালিকায় মুম্বইয়ের যা অবস্থা, তাতে ওদের এখন কোনও ম্যাচেই হারা চলবে না। প্লে অফে পৌঁছতে হলে ওদের এখন প্রতিটি ম্যাচ জিততে হবে। আইপিএলে যা অসম্ভবও নয়। ২০১৪ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্স কী করেছিল, সবার মনে আছে নিশ্চয়ই? চারটি ম্যাচ হারার পরে টানা ন’টি ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কেকেআর। মুম্বই এ বার সেই ভাবে প্লে অফে পৌঁছলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

জেতার তাগিদটা প্রবল থাকায় শনিবার দলেও অনেক রদবদল করেন রোহিতরা। কায়রন পোলার্ডের জায়গায় জেপি ডুমিনিকে প্রথম এগারোয় নিয়ে আসেন। আর ব্যাটিয়ে শক্তি বাড়ানোর জন্য মুস্তাফিজুর রহমানের জায়গায় বেন কাটিং। দু’টি পরিবর্তনই ভাল। তবে পোলার্ডকে আরও ওপরে ব্যাট করতে পাঠিয়ে দেখতে পারতেন। প্রায় সব ম্যাচেই এত পরে পোলার্ডকে ব্যাট করতে নামতে হয়েছে যে, রান তোলার সময় পাননি। মুস্তাফিজুরকে বসিয়ে একটু ঝুঁকি নেওয়া হয় ঠিকই। তবে দলের অন্য বোলাররা সেই অভাব পূরণ করে দেন।

চেন্নাই দু’শোর কাছাকাছি তুলবে ভেবেছিলাম। ধোনিদের তা তুলতে দেননি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বোলাররাই। বোর্ডে ১৬৯ রান নিয়ে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতা মোটেই সোজা নয়। ওঁরা যে চেন্নাইয়ের প্রত্যেক ব্যাটসম্যানের জন্য আলাদা আলাদা পরিকল্পনা ছকে নেমেছিলেন, তা তাঁদের বোলিং দেখেই বোঝা যায়। ধোনি মিড উইকেট ও লং অনের উপর দিয়ে বেশির ভাগ শট মারেন, তাই ওঁকে মাঝে মাঝেই অফস্টাম্পের বাইরে বল দেওয়া হচ্ছিল ফাঁদে ফেলার জন্য। সেই ফাঁদেই পা দেন ধোনি। অফ স্টাম্পের বাইরের একটা ফুলটস উড়িয়ে দিতে গিয়েই ডিপ কভারে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।

একই ওভারে ধোনি ও ডোয়েন ব্র্যাভো পরপর আউট হয়ে যাওয়ায় চেন্নাই বড় ধাক্কা খেয়ে যায়। সেই জন্যই রানটা আর বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি ওঁরা। সুরেশ রায়নার রানে ফেরাটা অবশ্য চেন্নাইয়ের পক্ষে ভাল খবর।

স্কোরকার্ড

চেন্নাই সুপার কিংস ১৬৯-৫ (২০)

মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ১৭০-২ (১৯.৪)

চেন্নাই সুপার কিংস রান বল

ওয়াটসন ক মার্কণ্ডে বো ক্রুণাল ১২ - ১১

রায়ডু ক কাটিং বো ক্রুণাল ৪৬ - ৩৫

সুরেশ রায়না ন.আ. ৭৫ - ৪৭

ধোনি ক লুইস বো ম্যাক্লেনাঘান ২৬ - ২১

ব্র্যাভো ক মার্কণ্ডে বো ম্যাক্লেনাঘান ০ - ১

বিলিংস ক কাটিং বো হার্দিক ৩ - ৫

রবীন্দ্র জাডেজা ন.আ. ০ - ০

অতিরিক্ত

মোট ১৬৯-৫ (২০)

পতন: ২৬-১ (ওয়াটসন, ৪.২), ৯৭-২ (রায়ডু, ১১.২), ১৪৩-৩ (ধোনি, ১৭.১), ১৪৪-৪ (ব্র্যাভো, ১৭.৩), ১৬১-৫ (বিলিংস, ১৯.৪)।

বোলিং: মিচেল ম্যাক্লেনাঘান ৪-০-২৬-২, যশপ্রীত বুমরা ৪-০-২৫-০, হার্দিক পাণ্ড্য ৪-০-৩৯-১, ক্রুণাল পাণ্ড্য ৪-০-৩২-২, মায়াঙ্ক মার্কণ্ডে ৩-০-৩০-০, বেন কাটিং ১-০-১৪-০।

মুম্বই ইন্ডিয়ান্স রান বল

সূর্যকুমার ক জাডেজা বো হরভজন ৪৪ - ৩৪

লুইস ক শার্দূল বো ব্র্যাভো ৪৭ - ৪৩

রোহিত শর্মা ন.আ. ৫৬ - ৩৩

হার্দিক পাণ্ড্য ন.আ. ১৩ - ৮

অতিরিক্ত ১০

মোট ১৭০-২ (১৯.৪)

পতন: ৬৯-১ (সূর্যকুমার, ৯.৫), ১২৮-২ (লুইস, ১৬.১)।

বোলিং: দীপক চাহার ২.১-০-১৯-০, শার্দূল ঠাকুর ৪-০-৩৮-০, শেন ওয়াটসন ৪-০-৪১-০, হরভজন সিংহ ৩.৫-০-২০-১, ইমরান তাহির ২.৪-০-২৬-০, ডোয়েন ব্র্যাভো ৩-০-২১-১।

আট উইকেটে জয়ী মুম্বই

ম্যাচের সেরা রোহিত শর্মা

Rohit Sharma IPL 11 IPL 2018 Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy