Advertisement
E-Paper

আইএসএল বোধনে আজ দ্বৈরথ দুই কোচের

শুরুটা করেছিলেন অ্যালেক্স ফার্গুসনের ছয় বছরের সঙ্গী রেনে মিউলিনস্টিন। ‘‘ইতিহাস তৈরি হয় পাল্টানোর জন্য। মিথও।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০৩
অনুশীলন: উদ্বোধনী ম্যাচের আগে প্রস্তুতিতে মগ্ন গত বারের চ্যাম্পিয়ন এটিকে-র ফুটবলাররা। বৃহস্পতিবার কোচিতে।

অনুশীলন: উদ্বোধনী ম্যাচের আগে প্রস্তুতিতে মগ্ন গত বারের চ্যাম্পিয়ন এটিকে-র ফুটবলাররা। বৃহস্পতিবার কোচিতে।

ম্যাচের শেষে কে কার সঙ্গে কী অবস্থায় হাত মেলাবেন, তা নিয়ে ধুন্ধুমার বাগযুদ্ধ শুরু হয়ে গেল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দুই প্রাক্তন তারকার মধ্যে। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের উদ্বোধনী ম্যাচের বল গড়ানোর ছত্রিশ ঘণ্টা আগে।

শুরুটা করেছিলেন অ্যালেক্স ফার্গুসনের ছয় বছরের সঙ্গী রেনে মিউলিনস্টিন। ‘‘ইতিহাস তৈরি হয় পাল্টানোর জন্য। মিথও। জেতার পর টেডির সঙ্গে গিয়ে হাত মিলিয়ে আসব বলে ঠিক করেছি।’’ বুধবার চোখ টিপে কেরল ব্লাস্টার্সের তারকা কোচ এটা বলে যাওয়ার মিনিটখানেক পর যা শুনে মুখটা গম্ভীর হয়ে গেল এটিকে কোচের। সচিন তেন্ডুলকরের টিমের দিকে পাল্টা বাউন্সার ছুড়লেন টেডি শেরিংহ্যাম। ‘‘আমাকে হারিয়ে ও হ্যান্ডশেক করবে বলছে। জেতার পর আমি ওকে ঠিক খুঁজে নেব হাত মেলানোর জন্য। আশা করি, মাঠে থাকবে।’’

টেডি যে বার ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ১০৪ ম্যাচ খেলে চলে আসেন টটেনহ্যামে, সে বারই কোচ হিসাবে ওই ক্লাবের যুব দলের দায়িত্ব নেন রেনে। তার পর দু’জনের দেখা হয়েছিল মুম্বইতে। ভারতীয় ফুটবলারদের নিলামের সময়। স্বদেশী ফুটবলার নির্বাচনের যুদ্ধে কে জিতেছেন, সেটা প্রমাণের সময় আসেনি এখনও। তবে ম্যাঞ্চেস্টারকে ইপিএল, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানো টিমের সহকারী কোচের দায়িত্বে থাকা রেনের দাবি, মুম্বইতে হাত মেলাননি। সেটা তিনি রেখে দিয়েছেন আজ শুক্রবারের জন্য।

বেশ গর্বের সঙ্গে তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘‘ফার্গুসনের দর্শন ছিল আক্রমণের ঢেউ তোলো। ঝুঁকি থাকলেও আমি ম্যান ইউয়ের রাস্তাতেই হাঁটব কাল।’’ টেডি যা শুনে মাথা নেড়েছেন। তাঁর টিমের স্টপার জর্ডিকে নিয়ে হাসতে হাসতে ঢুকে গিয়েছেন কোচি স্টেডিয়াম দেখতে। বলেছেন, ‘‘আমার রক্ষণও তৈরি। ও জানে এটিকের মনোভাব কী হতে পারে মাঠে।’’

গত বারের দুই ফাইনালিস্ট এটিকে আর কেরলের অবশিষ্ট প্রায় কিছুই নেই। সমস্ত কিছুরই বদল হয়েছে এ বার। কোচ বদলেছে, বিদেশি ফুটবলার বদলেছে। দু’দলে মাত্র পাঁচজন দেশীয় ফুটবলার জায়গা অক্ষত রেখেছেন। এটিকে-তে দু’জন, দেবজিৎ মজুমদার আর প্রবীর দাশ এবং কেরলে সিকে বিনীথ, সন্দেশ ঝিঙ্গন এবং সন্দীপ নন্দী।

ফলে দুই টিমই জানে না অপরের শক্তি বা দুর্বলতা। কোচেরাও। তা সত্ত্বেও দুই কোচের বৃহস্পতিবারের কথা শুনে মনে হল কবীর সুমনের ‘চেনা দুঃখ, চেনা সুখ’ গাইতে দিলে গেয়ে দেবেন! কারণ দুঃখ এ জন্যই যে, দুটি টিমই চোটে আক্রান্ত। আর সুখ হল দু’জনেই মনে করছেন নিজের মগজাস্ত্র ও অভিজ্ঞতা দিয়ে অন্যকে হারাতে পারবেন।

এটিকেতে রবি কিন, কার্ল বেকার মাসখানেকের জন্য মাঠের বাইরে চলে গিয়েছেন। তাঁদের পাওয়া যাবে না। কেরলে অনিশ্চিত দিমিত্রি বের্বাতভ এবং ওয়েস্ট ব্রাউনও। এঁদের অবশ্য খেলার সম্ভাবনা ষাট-চল্লিশ। বুলগেরিয়ার সর্বকালের সেরা গোলদাতা বের্বাতভের ঘাড়ের ব্যথা বেড়েছে। সে জন্যই মহাতারকাকে বাদ দিয়ে সন্দেশ ঝিঙ্গনকে অধিনায়ক করে দেওয়া হল উদ্বোধনী মঞ্চে সচিনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।

মহড়া: পুরনো টিম এটিকে-কে হারাতে প্রস্তুতি হিউম-দের।

তবে ব্রিটিশ বনাম ডাচ কোচের এই যুদ্ধে বিশ্বকাপোত্তর ঝকঝকে স্টেডিয়ামে আজ রাতে কোন তারা ফুটে উঠবে, সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

দুই টিমে যে অসংখ্য তারা! কেরলে ম্যাঞ্চেস্টারের দুই ফুটবলার দিমিত্রি বের্বাতভ, ওয়েস্ট ব্রাউন যদি ধ্রুবতারা হন, তা হলে ইয়ান হিউম সন্ধ্যাতারা। যাঁর চোখে এ দিন দেখা গেল আগুন জ্বলছে। টুনার্মেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিউম (২৩)। গত দু’বছর এটিকের জার্সিতে ১৮ গোল আছে তাঁর। সর্বোচ্চ গোল করে দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন গত বার। তবুও তাঁকে এ বার রাখেনি কলকাতা। বলছিলেন, ‘‘না-ও ডাকতে পারে। কিন্তু আমারও তো দেখানোর কিছু থাকতে পারে। সে জন্যই কেরলের ডাকে ফিরেছি। মনে রাখবেন, আট বারের মধ্যে কেরলের কাছে এটিকে হেরেছে একবার। সেই ম্যাচে একটা গোল কিন্তু আমার-ই ছিল।’’ সঙ্গে বিনীথ, সন্দেশ, জ্যাকিচাঁদ সিংহরা তো রয়েছেনই।

তুলনায় এটিকে-তে তারা কম! রবি ও বেকার বাইরে চলে যাওয়ায় জর্ডি মনটেল, নাজিকুকি, কার্ল থমাসের মতো ফুটবলারদের উপর আস্থা রাখছেন কোচ টেডি। তবে ব্রিটিশ কোচের সুবিধা তাঁর হাতে ইউজেনসিম লিংডো, রবিন সিংহ, কিগান পেরিরা, দেবজিৎ মজুমদার, প্রবীর দাশদের মতো সফল স্বদেশী তারকা আছেন। যাঁরা বদলে দিতে পরেন ম্যাচের রং।

স্প্যানিশ জোব্বা ছেড়ে এ বার ব্রিটিশ-জামা পরেছেন এটিকে কর্তারা। তিন বার খেলে দু’বার চ্যাম্পিয়ন। আই লিগে বেঙ্গালুরু ছাড়া কারও এই রেকর্ড নেই। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চাপ টেডি কীভাবে সামলান, সেটা দেখার জন্য উপচে পড়বে কোচির ‘বর্ন টু ইয়েলো’ গ্যালারি।

রেনে এবং টেডি দু’জনেই চাপ আছে মানতে চান না। বারবার প্রশ্ন করা সত্ত্বেও। মানবেনই বা কেন, দু’জনেই যে ইংরেজ সংবাদমাধ্যম সামলে এখানে এসেছেন।

ISL Opening Match Kochi Kerala vs Kolkata Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy