গুরুর সঙ্গে বনিবনা না হওয়াতে তিনি গুরুকুলই বদলে ফেলেছিলেন। বছর দুইয়েরও বেশি আগে। নিজের শহর হায়দরাবাদে পুল্লেলা গোপীচন্দের ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমি ছেড়ে তাঁর বর্তমান সাধনাস্থল বেঙ্গালুরুতে বিমল কুমারের ট্রেনিং কোর্ট। সেই সাইনা নেহওয়াল, ব্যাডমিন্টনে সর্বপ্রথম ভারতীয় হিসেবে অলিম্পিক্স পদকজয়ী তারকা মনে করছেন, তাঁর খেলাটার এ দেশে পরিকাঠামো আছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংখ্যক কোচ নেই!
‘‘আমাদের দেশে ব্যাডমিন্টনের পরিকাঠামোর কথা যদি ওঠে, সেটা তা হলে ভালই আছে। কিন্তু যদি ব্যাডমিন্টন কোচ আর অ্যাকাডেমির কথা বলেন, তা হলে সেটা প্রচুর সংখ্যায় নেই। চিনে যেমনটা আছে আর কী!’’ এ দিন সংবাদ সংস্থার কাছে এই মন্তব্য করেন বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর মেয়ে সাইনা। রিও অলিম্পিক্সে হার, তার পর হাঁটুতে অস্ত্রোপচার। পাশাপাশি রিওতে রুপোজয়ী পি ভি সিন্ধুর মহা উত্থান। এহেন আবহে নভেম্বরের মাঝামাঝি সাইনা ফিরছেন ব্যাডমিন্টনের বিশ্ব সার্কিটে। খেলবেন চিনা ওপেনে।
কিছু মাস আগেও ‘সাইনা ভার্সাস চায়না’ হিসেবে দেখা হত মেয়েদের ব্যাডমিন্টন গ্রহকে। সেই সাইনা এ দিন বেঙ্গালুরুতে পুরোদমে ট্রেনিংয়ের ফাঁকে বলেন, ‘‘আমাদের দেশের বড় শহরগুলোতে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ জন ব্যাডমিন্টন কোচের দরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রয়েছেন দু’-তিন জন মাত্র। অ্যাকাডেমিরও অভাব। চিনের প্রধান শহরগুলো মিলিয়ে তিরিশ-চল্লিশ হাজার ব্যাডমিন্টন প্লেয়ার আছে। সেই অনুপাতে অ্যাকাডেমি। প্রত্যেক অ্যাকাডেমিতে প্রতি ইভেন্ট পিছু চার-পাঁচ জন কোচ ওখানে। তা হলে কোচের সংখ্যাটা কত দাঁড়াচ্ছে?’’ নিজেই প্রশ্ন তুলছেন সাইনা।
সাইনার কোর্টে প্রত্যাবর্তন ঘটছে চিন সুপার প্রিমিয়ার সিরিজে (ব্যাডমিন্টনের গ্র্যান্ড স্ল্যাম গোত্রের টুর্নামেন্ট)। ১৫-২০ নভেম্বর। তার পরের সপ্তাহেই তিনি নামবেন হংকং ওপেন সুপার সিরিজে (ব্যাডমিন্টনের মাস্টার্স গোত্রের টুর্নামেন্ট)। ২২-২৭ নভেম্বর। যিনি বলছেন, ‘‘চিনের মেয়েরা এই মুহূর্তে হয়তো বড় বড় খেতাব বেশি জিততে পারছে না। কিন্তু চিনকে খাটো করে দেখবেন না। ওরা যে কোনও সময় চ্যাম্পিয়ন তৈরি করতে পারে। কারণ, ওদের হাতে এই খেলাটার প্রচুর পরিমাণে কোচ আর অ্যাকাডেমি আছে।’’
সাইনা অবশ্য ভারতীয় ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের প্রশংসা করছেন। এতটাই যে, বাই-এর সঙ্গে বিসিসিআই-এর তুলনা টানতেও দ্বিধা করছেন না। ‘‘আমাদের দেশ ক্রিকেটে এত বড় তো আর দু’-তিন দিনের ভেতর হয়নি। ভারতীয় ক্রিকেটের আজ এই জায়গায় পৌঁছতে অনেক সময় লেগেছে। তার জন্য আমি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে কুর্ণিশ করি।’’ সঙ্গে সাইনা যোগ করেন, ‘‘আমি অবশ্যই মনে করি, আমাদের ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনও খুব ভাল কাজ করছে। প্রিমিয়ার ব্যাডমিন্টন লিগ (পিবিএল) চালু করা, ওই লিগকে আবার ফিরিয়ে আনা খুব ভাল কাজ। আমাদের দেশের প্রচুর উঠতি ছেলেমেয়ে পিবিএল টিভিতে দেখে ব্যাডমিন্টন খেলতে আগ্রহী হয়েছে। আশা করি আরও হবে। শুধু দরকার আরও বেশি ব্যাডমিন্টন কোচের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy