Advertisement
০২ মে ২০২৪
ইন্দ্রপতন: নিশিকোরির কাছে হার জকোভিচের

দুই বন্ধুর যুদ্ধে সেরেনা আজ ইতিহাসের সামনে

আঠারো নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে ক্রিস এভার্ট ও মার্টিনা নাভ্রাতিলোভার পাশে ইতিহাসের অংশীদার হওয়া পাখির চোখ এক জনের। অন্য জনের সামনে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে টেনিস বিশ্বে নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ! রবিবারের ফাইনাল জিততে মরিয়া থেকেই আর্থার অ্যাশ কোর্টের দু’প্রান্তে নামতে চলেছেন দুই প্রাণের বন্ধু! সেরেনা উইলিয়ামস ও ক্যারেলিন ওজনিয়াকি!

কোর্টের বাইরে বন্ধু। সমুদ্র সৈকতে সেরেনা-ওজনিয়াকি।

কোর্টের বাইরে বন্ধু। সমুদ্র সৈকতে সেরেনা-ওজনিয়াকি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:০০
Share: Save:

আঠারো নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে ক্রিস এভার্ট ও মার্টিনা নাভ্রাতিলোভার পাশে ইতিহাসের অংশীদার হওয়া পাখির চোখ এক জনের। অন্য জনের সামনে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে টেনিস বিশ্বে নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ!

রবিবারের ফাইনাল জিততে মরিয়া থেকেই আর্থার অ্যাশ কোর্টের দু’প্রান্তে নামতে চলেছেন দুই প্রাণের বন্ধু!

সেরেনা উইলিয়ামস ও ক্যারেলিন ওজনিয়াকি!

তাঁদের চূড়ান্ত যুদ্ধে নামার আগেই অবশ্য শনিবার ফ্লাশিং মেডোয় ইন্দ্রপতন হয়ে গেল। কেই নিশিকোরির অবিশ্বাস্য দৌড়ের সামনে এ বার হার মানলেন নোভাক জকোভিচ। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের শীর্ষবাছাই চার সেটের লড়াইয়ে হেরে ছিটকে গেলেন সেমিফাইনাল থেকে। ফল জাপানি তরুণের পক্ষে ৬-৪, ১-৬, ৭-৬, ৬-৩। মিলোস রাওনিচ (৫), স্ট্যানিসলাস ওয়ারিঙ্কার (৩) মতো প্রথম পাঁচে থাকা বাছাইদের হারিয়েই শেষ চারে জোকারের মুখোমুখি হয়েছিলেন দশম বাছাই নিশিকোরি। শনিবার সার্বিয়ান চ্যাম্পিয়নকে যে ভাবে দাপটে হারালেন তাতে ফাইনালেও চমক দিতে পারেন সেই ইঙ্গিতই যেন দিয়ে রাখলেন তিনি। সোমবার প্রথম এশীয় পুরুষ হিসেবে কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে নামবেন নিশিকোরি।

ফ্লাশিং মোডোয় নিশিকোরির চমকের পাশাপাশি মেয়েদের ফাইনাল নিয়ে উত্তেজনার পারদও ক্রমশ চড়ছে। সেরেনা আর ওজনিয়াকির বয়সের ফারাক আট বছর হলেও ব্যক্তিগত জীবনে অসম্ভব ঘনিষ্ঠ দু’জনে। আড্ডা দেন, বাস্কেটবল দেখেন, কেনাকাটা করেন, ডিনারে যান। এ বারের ফরাসি ওপেন থেকে ছিটকে যাওয়ার পর জুনে দু’জনেই মায়ামির সমুদ্র সৈকতে চুটিয়ে হুল্লোড় করেছিলেন মন খারাপ কাটাতে। এতটাই ফুরফুরে ছিলেন যে, দেদার ছবির পোজ দেওয়ার পর সমুদ্রের ধারে এক বিয়ের আসরে হুট করে অনাহূত ঢুকে হইচই ফেলে দেন!

একে-অপরের পাশে থাকেন দুঃসময়েও। গল্ফ তারকা রোরি ম্যাকিলরয়ের সঙ্গে ওজনিয়াকির সম্পর্ক ভাঙার পর বন্ধুর জন্য সেরেনা টুইট করেন, “চিরকাল তোমার পাশে থাকব,” সঙ্গে হ্যাশট্যাগ-‘ফ্রেন্ডস ফর এভার’, আজীবন বন্ধু! ওজনিয়াকিও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “সেরেনা ব্যস্ত তারকা। তবু দরকারে সব সময় পাশে দাঁড়ায়। এমন প্রতিদ্বন্দ্বী কমই হয়!”

কোর্টে মুখোমুখি হলেই কিন্তু উবে যায় এই আত্মার টান। সেখানে এক ইঞ্চিও ছাড়া নেই! কোর্ট-সাক্ষাতের পাল্লা সেরেনার দিকে ৮-১ ঝুঁকে। ওজনিয়াকির একমাত্র জয়টা ২০১২ মায়ামির হার্ডকোর্টে। তবে চলতি হার্ডকোর্ট মরসুমে প্রায় অপ্রতিরোধ্য সেরেনাকে (হেরেছেন শুধু দিদি ভেনাসের কাছে) দু’টো তিন সেটার লড়তে বাধ্য করিয়েছেন। জীবনের ম্যাকিলরয়-পর্ব ভুলে টেনিসে মন দিয়েছেন বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর। খেলায় বাড়তি আগ্রাসন আমদানি করে র্যাঙ্কিংয়ে উঠে এসেছেন এগারোয়। ড্যানিশ মেয়ে অবিশ্বাস্য ফর্মে, মারিয়া শারাপোভাকে ছিটকে দিয়ে সেটা এখানে বুঝিয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন, টুর্নামেন্টে একটাও সেট না হারা সেরেনার জন্য ফাইনালটা মোটেই সহজ হবে না।

সেরেনা নিজেও মানছেন সেটা। বলেছেন, “ও জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম পেতে মরিয়া। তবে আমিও জিতে ইতিহাস গড়তে চাই।” ১৮ নম্বরটা জিতলে ক্রিস এবং মার্টিনার সঙ্গে একাসনে বসবেন। কিন্তু এ বছর বিস্ময়কর ব্যর্থতায় অন্য তিন গ্র্যান্ড স্ল্যামে চতুর্থ রাউন্ডের বেশি এগোননি। শেষ জয় গত বছর, ফ্লাশিং মেডো। তাই হয়তো একাতারিনা মারাকোভাকে ৬-১, ৬-৩ গুঁড়িয়ে উপর্যুপরি তৃতীয় ফাইনালে উঠে বলেছেন, “সপ্তাহের শুরুতে ভাবিনি এত দূর এগোব! আপনাদের ধারণাই নেই আমি কতটা খুশি!” জিতলে টানা তৃতীয় যুক্তরাষ্ট্র ওপেন খেতাব হবে সেরেনার। ১৯৭৮-এ ক্রিস এভার্টের পর যে হ্যাটট্রিক আর কারও নেই!

তেতে সেরেনা। হারলে অনেক কিছু হারানোর আছে যে তাঁর! “হার্ডকোর্ট মরসুমের জয়গুলো আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে,” বলেছেন এ দিন। সেই আত্মবিশ্বসে ভর দিয়ে আঠারো নম্বরের জন্য ক্ষুধার্ত তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

final us open ojniwaki seran
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE