মহড়া: প্রস্তুতি ম্যাচে করুণারত্নে (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
ভারত সফরে এসে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচেই ব্যাটে রান পেলেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা। শনিবার সল্টলেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে বোর্ড সভাপতি একাদশের বিরুদ্ধে দু’দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৪১১-৬ করে ডিক্লেয়ার করে দেয় দীনেশ চণ্ডীমলের দল।
সঞ্জু স্যামসনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড সভাপতি একাদশের বোলারদের স্বাভাবিক ছন্দে খেলেই রান পেলেন শ্রীলঙ্কার চার প্রথম সারির ব্যাটসম্যান। যাঁর মধ্যে রয়েছেন দুই ওপেনার সাদিরা সমরাবিক্রমা (৭৪) ও দিমুত করুণারত্নে (৫০)। ওপেন করতে নেমে এই দু’জনে মিলে তুললেন ১৩৪ রান। করুণারত্নে অবশ্য অর্ধশতরান করেই উঠে যান। এ ছাড়াও রান পেলেন শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ (৫৪) ও বর্তমান অধিনায়ক দীনেশ চণ্ডীমল ( ২৯)। দু’জনেই আহত হয়ে অবসৃত। এ ছাড়াও রান পেলেন উইকেটকিপার নিরোশান ডিকওয়েলা (৭৩ ন.আ) ও দিলরুয়ান পেরিরা (৪৮)।
ঘরোয়া ক্রিকেটার বড়সড় নাম এই মুহূর্তে রঞ্জি ট্রফি খেলতে ব্যস্ত। ফলে বোর্ড সভাপতি একাদশের বোলিং এমন কিছু আহামরি ছিল না। সঞ্জু স্যামসনের দলের হয়ে পেসার সন্দীপ ওয়ারিয়ের (২-৬০) ও লেগব্রেক বোলার আকাশ ভাণ্ডারি ( ২-১১১) জোড়া উইকেট তুললেও কোনও সমস্যা তৈরি করতে পারেননি দ্বীপরাষ্ট্রের ক্রিকেটারদের কাছে। সফল হননি ডান হাতি অফব্রেক বোলার জলজ সাক্সেনাও (১-১০০)।
ফলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে ব্যাটিং অনুশীলন সেরে শ্রীলঙ্কার ওপেনার দিমুত করুণারত্নে বলছেন, ‘‘আমাদের দলের মধ্যে এর আগে ভারত সফরের অভিজ্ঞতা রয়েছে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ ও রঙ্গনা হেরাথ-এর। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে রান পেয়ে তাই আত্মবিশ্বাস বাড়বে দলের।’’
বাঁ হাতি ওপেনার দিমুত করুণারত্নে তিলকরত্নে দিলশানের পর শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ওপেনার, যিনি এক ক্যালেন্ডার বছরে তিনটি টেস্ট শতরান পেয়েছেন। আর তিনটিই ভারতীয় উপমহাদেশের তিন দল—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ভারত সফরে এসে তাঁর সাফ কথা, ‘‘রান পেতে হবে। ফাস্ট বা স্পিন বোলিং গুরুত্বপূর্ণ নয়। কলম্বোতে চলতি বছরেই ভারতের বিরুদ্ধে শতরান (১৪১) পেয়েছিলাম। যা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাসখানেক আগে টেস্টে শতরান (১৯৬) পেতে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল।’’
গত কয়েক মাসে ভারত সফরে এসে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো দল ভারতীয় স্পিন আক্রমণের সামনে নাজেহাল হয়েছে। কিন্তু দীনেশ চণ্ডীমলের দল যে ভারতীয় স্পিন ও জোরে বোলিং খেলার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে, তা করুণারত্নের কথাতেই স্পষ্ট।
শ্রীলঙ্কার এই ওপেনার দিনের শেষে যাদবপুর বিশ্ব বিদ্যালয়ের মাঠ ছাড়ার আগে বলছেন, ‘‘মহম্মদ শামি আর উমেশ যাদবকে আমাদের দেশে এর আগের সিরিজে খেলেছি। ওদের জন্য আমার কিছু পরিকল্পনা তৈরি রয়েছে। এটাও জানি, নিজেদের দেশে আমাদের কোণঠাসা করতে চাইবে ভারতীয় পেসাররা। তবে তার জন্য তৈরি হয়েই ভারতে এসেছি আমরা। ওরা পরিকল্পনা বদলালে আমরাও বদলে নেব।’’
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে এ দিন বোর্ড সভাপতি একাদশে বল করলেন দুই স্পিনার। জলজ সাক্সেনা ও আকাশ ভাণ্ডারি। দু’জনে মিলে ৪৫ ওভার বল করে ২১১ রান দিয়ে নিলেন তিন উইকেট।
যে প্রসঙ্গে করুণারত্নে বলছেন, ‘‘ভারতের স্পিন আক্রমণ বেশ ভাল। যদিও ওরা আজ আমাদের বাঁ হাতি স্পিনার দেয়নি। ম্যাচে এত সহজে ভারতীয় স্পিনকে খেলে দেওয়া যাবে না। কারণ সেখানে রবীন্দ্র জাডেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন খেলবে। সঙ্গে কুলদীপ যাদবকেও জুড়ে দেওয়া হতে পারে।’’ সঙ্গে এটাও জুড়ে দেন, ‘‘আজ পিচে ঘাস ছিল বলে বল বেশি ঘোরেনি। সোজা আসছিল। কিন্তু এতে আমাদের সমস্যা হবে না। ভারতের পিচে স্পিন খেলার জন্য শ্রীলঙ্কায় ধুলোয় ভরা পিচে অনুশীলন করে এসেছি। প্রথম টেস্ট শুরু হতে এখনও তিন দিন রয়েছে। ভাল স্পিন আক্রমণ খেলার জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার, সব নেওয়া হয়েছে।’’
শুধু তা-ই নয়, বিরাট কোহালির দলে অশ্বিন-জাডেজার স্পিন আক্রমণকে দিশাহারা করার জন্য রিভার্স সুইপের মতো বিশেষ কিছু পরিকল্পনাও যে রয়েছে শ্রীলঙ্কার, সেটাও স্পষ্ট করেছেন করুণারত্নে। তাঁর কথায়, ‘‘চলতি সিরিজে জাডেজা-অশ্বিন উইকেটের জন্য ক্ষুধার্ত থাকবে। ওদের ফিল্ডিং পরিবর্তন করে দিতে হলে আমাদের অতিরিক্ত কিছু করতে হবে। সেটা রিভার্স সুইপ হতে পারে। ভারতীয় স্পিনাররা সঠিক লাইন লেংথে বল করলে আমরা ঝুঁকি নেব না। আমরা সুযোগ না দিলেই ওরা পরিকল্পনা বদলাবে। তখন ‘লুজ বল’ আসবেই। সেই সুযোগ ছাড়ব না আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy