কাঠগড়ায়: নুয়ান জয়সা।
ম্যাচ গড়াপেটার বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হতে শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। বেশ কয়েক দিন ধরেই জল্পনা চলছিল যে, গড়াপেটার কলঙ্কে ডুবে রয়েছে অর্জুন রণতুঙ্গাদের দেশের ক্রিকেট। সনৎ জয়সূর্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-বিরোধী আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগও উঠেছে।
এ বার সরাসরি ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়তে শুরু করল। আইসিসি গড়াপেটার দায়ে শ্রীলঙ্কার বোলিং কোচ এবং প্রাক্তন বোলার নুয়ান জয়সাকে নির্বাসিত করেছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগেই এই খবরে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ফের উত্তাল হওয়ার মুখে। আইসিসি যে সমস্ত অভিযোগ দায়ের করেছে জয়সার বিরুদ্ধে তাতে এখানেই বিতর্ক থামবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ, জয়সার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ম্যাচের ফল ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রভাবিত করার ব্যাপারে ক্রিকেটারদের উৎসাহ দিয়েছিলেন। আইসিসি-র একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘নুয়ান জয়সাকে সাময়িক ভাবে নির্বাসিত করা হয়েছে। তাঁর এই নির্বাসন এখন থেকেই শুরু হচ্ছে।’’ শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন পেসার ১ নভেম্বর থেকে ১৪ দিন সময় পাচ্ছেন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের উত্তর দেওয়ার জন্য। তার আগে এ নিয়ে আর কোনও মন্তব্য করা হবে না বলেও আইসিসি জানিয়েছে।
জয়সার বিরুদ্ধে তদন্তে দুর্নীতি দমন শাখার গোয়েন্দারা কী কী চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে, তা নিয়ে তুমুল কৌতুহল তৈরি হয়েছে। তা হলে কি ম্যাচ গড়াপেটা নিয়ে ফের উত্তাল হবে উপমহাদেশের ক্রিকেট? নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। আইসিসি অবশ্য এ নিয়ে আর কোনও বিস্তারিত ব্যাখ্যা আপাতত দিচ্ছে না। তবে কথা উঠতে শুরু করে দিয়েছে যে, গড়াপেটার শিকড় কত দূর বিস্তৃত? সম্প্রতি আইসিসি-র দুর্নীতি দমন শাখার অফিসাররা জানিয়েছিলেন, তাঁরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি তদন্তের জন্য শ্রীলঙ্কায় আছেন। সেই তদন্ত নিয়ে শ্রীলঙ্কার সরকারকেও অবহিত করা হয়েছিল। তার মধ্যেই জয়সূর্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় যে, তিনি তদন্তে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করেছেন। জয়সূর্যকে উত্তর দেওয়ার জন্য যে সময় দেওয়া হয়েছিল, সেটাও ফুরিয়ে আসছে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, জয়সার পরে জয়সূর্যের ভাগ্যে কী লেখা রয়েছে? আবার আল জাজিরা চ্যানেলের সাম্প্রতিক গোপন ক্যামেরা অভিযানে প্রকাশিত হয়েছে যে, শ্রীলঙ্কায় তো রমরমিয়ে গড়াপেটা চলছেই এমনকি, অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডেও তা ছড়িয়ে পড়েছে। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্রিকেট গড়াপেটার কেন্দ্রে ভারতীয় জুয়াড়িরা।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩০টি টেস্ট এবং ৯৫টি ওয়ান ডে খেলা জয়সা বোলিং কোচ নিযুক্ত হন ২০১৫-র সেপ্টেম্বরে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগে যে সব ধারা যোগ করেছে আইসিসি, তার প্রত্যেকটাই সাংঘাতিক। যেমন, ২.১.১— যেখানে সরাসরি গড়াপেটা করার চেষ্টা বা অন্যায় ভাবে আন্তর্জাতিক ম্যাচের ফলাফলকে প্রভাবিত করার কথা বলা আছে। অথবা ২.১.৪— যেখানে সহ-ক্রিকেটারকে দুর্নীতিতে উৎসাহিত করার প্রলোভন দেখানোর কথা বলা আছে। আর একটি ধারা দেওয়া হয়েছে ২.৪.৪— যেখানে দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রস্তাব পেয়েও তা গোপন করার কথা বলা আছে। প্রসঙ্গত, জয়সূর্যের বিরুদ্ধেও খানিকটা এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে আইসিসি জানিয়েছিল, বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও জয়সূর্য তাঁর মোবাইলে থাকা কিছু তথ্য দেখাতে অস্বীকার করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy