Advertisement
১১ মে ২০২৪

সুয়ারেজের গোলে নাটকীয় জয়, তবু অস্বস্তি বার্সেলোনায়

টিমের ফর্ম ইদানীং দারুণ কিছু নয়। তার উপর খেলতে পারবেন না টিমের কেন, বিশ্ব ফুটবলেরই অন্যতম মেগাস্টার। এই প্রেক্ষিতে দেখলে কাম্প ন্যুতে মঙ্গলবার রাতে বার্সেলোনার নাটুকে জয়কে মনে হবে বহু প্রতীক্ষিত অক্সিজেন। মনে হবে, মঙ্গলবারের পর লুইস এনরিকের চেয়ে সন্তুষ্ট কোচ বিশ্বফুটবলে বোধহয় খুব বেশি নেই। কিন্তু আদতে তা হচ্ছে কই! লুইস এনরিকে আপাতত ফুটবল-বিশ্বের অন্যতম বিধ্বস্ত কোচ। একে তো লিওনেল মেসিকে মাসদুয়েকের আগে পাবেন না বার্সা কোচ।

সংবাদ সংস্থা
মাদ্রিদ শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ০৪:০২
Share: Save:

টিমের ফর্ম ইদানীং দারুণ কিছু নয়। তার উপর খেলতে পারবেন না টিমের কেন, বিশ্ব ফুটবলেরই অন্যতম মেগাস্টার।
এই প্রেক্ষিতে দেখলে কাম্প ন্যুতে মঙ্গলবার রাতে বার্সেলোনার নাটুকে জয়কে মনে হবে বহু প্রতীক্ষিত অক্সিজেন। মনে হবে, মঙ্গলবারের পর লুইস এনরিকের চেয়ে সন্তুষ্ট কোচ বিশ্বফুটবলে বোধহয় খুব বেশি নেই।
কিন্তু আদতে তা হচ্ছে কই!
লুইস এনরিকে আপাতত ফুটবল-বিশ্বের অন্যতম বিধ্বস্ত কোচ। একে তো লিওনেল মেসিকে মাসদুয়েকের আগে পাবেন না বার্সা কোচ। তার উপর প্রায় এক মাসের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেলেন আন্দ্রে ইনিয়েস্তা। বার্সা অধিনায়কের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট। ফলে কোচের চোট-তালিকা বেড়েই চলেছে। এবং সর্বোপরি এনরিকের চিন্তার কারণ, তাঁরই নিজের মাঠের দর্শক!
টিম বনাম সমর্থক দ্বন্দ্বটা চলছে বেশ কয়েক দিন ধরে। কিন্তু মঙ্গলবার ব্যাপারটা বড়সড় আকারে প্রকাশ্যে এসে পড়ে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গ্রুপ ‘ই’-তে বার্সেলোনার ঘরের মাঠে ম্যাচটা ছিল বেয়ার লেভারকুসেনের বিরুদ্ধে। যেখানে গোটা প্রথমার্ধ তো বটেই, ম্যাচের একাশি মিনিট পর্যন্ত ০-১ পিছিয়ে ছিল বার্সেলোনা। কিরিয়াকস পাপাদুপৌলসের গোলটা শোধ করা দূরের কথা, মেসিহীন বার্সা জার্মান বিপক্ষের রক্ষণ ভাঙতে পারছিল না। মাঠে বসে যা নীরবে হজম করতে হচ্ছিল স্বয়ং লিওনেল মেসিকে। এবং গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছিল যে, বার্সার হালফিলের বর্ণহীন রেকর্ডে আরও একটা ফ্যাকাশে অধ্যায় যোগ হতে চলেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঘরের মাঠে খেলা চৌত্রিশটা ম্যাচের মধ্যে দ্বিতীয় বার হারের মুখ দেখতে চলেছে টিম।
এবং এখানেই ঝামেলার সূত্রপাত। কারণ এই সময়েই গ্যালারির একটা বড় অংশ থেকে টিমের দিকে টিটকিরি উড়ে আসা শুরু। ব্যাঙ্গাত্মক শিসের আওয়াজ ভেসে আসতে শুরু করে প্লেয়ারদের দিকে। একাশি ও বিরাশি মিনিটে নাটকীয় ভাবে সের্গি রবের্তো এবং সুয়ারেজ পরপর দু’গোল দিয়ে দেওয়ায় বেঁচে যায় বার্সেলোনা। থেমে যায় দর্শকদের অসূয়া-প্রদর্শনও। কিন্তু প্রশ্নের ঢেউ থামেনি।

অনেক বিশেষজ্ঞ যেমন অবাক হয়ে যাচ্ছেন ভেবে যে, যে ক্লাব মাত্র চার মাস আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ-লা লিগা-কিংগস কাপের ত্রিমুকুট এনে দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কী করে এই মনোভাব দেখাতে পারেন সমর্থকেরা? যার পাল্টা হিসেবে কেউ কেউ বলে দিচ্ছেন, হালফিলে মেসিরা ভক্তদের আনন্দের চেয়ে হতাশার মুহূর্তই বেশি দিয়েছেন। তার উপর স্প্যানিশ দর্শক তো অসহিষ্ণুতার জন্য বিখ্যাত।

কারণ যা-ই হোক, কাম্প ন্যুর দর্শক-বিরূপতা এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে খোদ লুইস এনরিকেকে নাড়িয়ে দিচ্ছে। ম্যাচ জিতে উঠেও তাঁকে ভক্তদের কাছে সমর্থনের জন্য হাত পাততে হচ্ছে। তাঁর প্লেয়ারদের আরও বেশি সম্মান প্রাপ্য, এটা তো বলেইছেন এনরিকে। সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে এটাও বলেছেন, ‘‘মাঠের পাশ থেকে স্পষ্ট শিস দেওয়ার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। ঠিক আছে, প্লেয়াররা যদি যথেষ্ট চেষ্টা না করে, তা হলে দর্শক বিরক্তি দেখাতে পারে। কিন্তু তাই বলে ওরা টিমের চেষ্টাটা দেখবে না?’’ এখানেই থেমে না থেকে বার্সা কোচ আরও যোগ করেছেন, ‘‘যখন ম্যাচটা আমাদের পক্ষে যাচ্ছে না, সেই সময় তো আমাদের আরও বেশি করে দর্শক সমর্থন দরকার। আর প্লেয়াররা চোট পেলে সবারই মন খারাপ হয়। কিন্তু ভক্তদের উচিত চোট-পাওয়া প্লেয়ারের পাশে থাকা। চোট-পাওয়া প্লেয়ারদের টিটকিরি নয়, আত্মবিশ্বাস দরকার।’’

মঙ্গলবার সুয়ারেজের গোলটা না এলে বার্সা-বিক্ষোভ কী আকার নিত, বলা মুশকিল। তাঁর টিম যে গ্রুপ শীর্ষে পৌঁছতে পারত না, সেটুকু নিশ্চিত। তবে ম্যাচের নায়ক সুয়ারেজ মোটেও সন্তুষ্ট নন। শেষ মিনিট পর্যন্ত যে তাঁর টিমের আত্মবিশ্বাস অটুট ছিল, সেটা বলেও তাঁকে মেনে নিতে হচ্ছে, বার্সা একেবারেই বার্সার মতো খেলতে পারেনি। ‘‘আমরা দারুণ ফুটবল খেলতে পারিনি। কিন্তু ম্যাচটা জিততে হতই। সবাইকে দেখাতে হতই যে, আমরা চ্যাম্পিয়ন,’’ ম্যাচের পর বলে দিয়েছেন উরুগুয়ের তারকা।

চ্যাম্পিয়নের মুকুট আর কাম্প ন্যুর মধ্যেকার পথটা অবশ্য ক্রমশ পঙ্কিল দেখাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suarez Barcelona football
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE