সুধীর গৌতম।
ভারতে এসে দিশাহারা হয়ে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার দুই ক্রিকেট অন্ত প্রাণ মানুষ। এত বড় দেশে এসে কী ভাবে কোথায় যাবেন, কোথায় থাকবেন, কিছুই জানতেন না মহম্মদ নিলম ও জ্ঞান মঞ্জুলা।
কলকাতায় কোনও রকমে কাটিয়ে দিল্লিতে এসে বড় সমস্যায় পড়েন দু’জন। পড়ে যান দুষ্কৃতীদের খপ্পরে। ঠিক তখনই তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন সুধীর গৌতম।
সুধীরকে কে না চেনে? ভারতীয় ক্রিকেট দলের এক নম্বর সমর্থক। যাঁকে ভারতীয় দলের প্রতি ম্যাচে দেখা যায় সেই ২০০২ থেকে। পুরো শরীরে জাতীয় পতাকার তিন রং মেখে গ্যালারিতে শাঁখ বাজাতে বাজাতে বিশাল পতাকা ওড়ান। সেই মুজফ্ফরের সুধীর চৌধুরি, যাঁকে সবাই ‘সুধীর গৌতম’ নামেই চেনেন।
সুধীরই বিপন্ন জ্ঞান ও নিলমের পাশে এসে দাঁড়ান অবশেষে। তাঁদের বলে দেন, ‘‘এখন থেকে বাকি সিরিজে তোমরা আমার সঙ্গেই থাকবে। আমরা একসঙ্গে থেকে আমাদের দলকে উৎসাহ জোগাব। গ্যালারিতে বসবও আমরা একসঙ্গে।’’
ওঁরা দুই ভিন্ন দেশের মানুষ। শনিবার ফিরোজ শাহ কোটলার গ্যালারিতে সারা দিন ধরে উড়িয়ে গেলেন দুই দেশের পতাকা। গ্যালারিতে তাঁদের দেখা গেল পাশাপাশি বসে প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটাতে, পতাকা ওড়াতে। কোটলার গ্যালারিতে বসে নিলম বললেন, ‘‘ভারতে এসে যে আমরা এমন এক বন্ধু পেয়ে যাব, তা ভাবতেই পারিনি। ভারতে তো চলে এসেছিলাম। কিন্তু এমন বিপদে পড়ে যাব, কে জানত? সুধীর এগিয়ে না এলে যে আমাদের যে কী হতো?’’
আর জ্ঞান বলছেন, ‘‘দিল্লিতে এসে আমরা হয়তো সর্বস্বান্তই হয়ে যেতাম। এখন আমরা একসঙ্গেই থাকছি। খাওয়াদাওয়া করছি, ঘুরে বেড়াচ্ছি, আড্ডা মারছি। দিব্য কাটাচ্ছি দিনগুলো। দল খারাপ খেললেও তাই মন খারাপ করার উপায় নেই। সুধীরই আমাদের আনন্দে, খুশিতে মাতিয়ে রাখছে। ও খুব ভাল মানুষ।’’
কোটলার গ্যালারিতে তেরঙ্গা ওড়াতে ওড়াতে সুধীর এ দিন বললেন, ‘‘শ্রীলঙ্কায় গিয়েই ওদের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আমার। দিল্লিতে এসে ঘটনাচক্রে ওদের সঙ্গে যখন দেখা হয়, তখন বুঝতে পারি ওরা খারাপ লোকের পাল্লায় পড়েছে। তাই ওদের বলি, বাকি সিরিজে তোমরা আমাদের সঙ্গে থাকবে। ওরা আমাদের দেশের অতিথি। ওদের রক্ষা করা আমার নৈতিক কর্তব্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy