ডালমিয়া। পাশে পাবেন ক’জনকে?
আরব সাগরের তীরে আগামী রবিবার যে মহাগুরুত্বপূর্ণ আইপিএল বৈঠক হতে চলেছে, আপাত দৃষ্টিতে তা মহাসঙ্কট থেকে টুর্নামেন্টকে বার করে আনার। লোঢা কমিশনের রায়ে নির্বাসিত দুই ফ্র্যাঞ্চাইজির ভবিষ্যৎ-নির্ধারণের একটা রাস্তা খুঁজে বার করার।
এবং আরব সাগরের তীরে আগামী রবিবারের আইপিএল বৈঠকের মূল নির্যাস মোটেও তা নয়!
আগামী ১৯ জুলাইয়ের আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিল বৈঠক আদতে বোর্ডের কঠোরতার পরীক্ষা নিতে চলেছে। আরও ভাল করে বললে, আসন্ন আইপিএল বৈঠক হয়ে উঠতে চলেছে বোর্ড প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার শক্তিপরীক্ষা।
কেন?
শোনা গেল, বুধবার রাতে দশ নম্বর আলিপুর রোডের বাড়িতে ডালমিয়া-শুক্ল যে বৈঠক হয়, সেখানে বোর্ড প্রেসিডেন্ট একটা নির্দেশ দিয়েছেন আইপিএল কমিশনার রাজীব শুক্লকে। নির্দেশটা হল, লোঢা কমিশনের রায় অনুযায়ী চলে যথাসম্ভব কঠোর হতে হবে দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে। কমিশনের মুখ্য বিচারপতি আরএম লোঢা নিজেও এ দিন এক টিভি চ্যানেলে স্পষ্ট বলে দেন যে, মালিকপক্ষ শুধু নয়। ইচ্ছে করলে দুই ফ্র্যাঞ্চাইজিকেই ছেঁটে ফেলতে পারে বোর্ড। তাঁর কমিশন রায়ে সেটাই বলতে চেয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠে পড়ছে, বোর্ড প্রেসিডেন্ট কঠোর হতে চাইলেও সেটা আদতে হওয়া কতটা সম্ভব? লোঢা বললেও তাতে কতটা কী সম্ভব? কারণ ভোটব্যাঙ্ক তো বোর্ড প্রেসিডেন্টের দিকে নেই। সেটা এখন বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুর পরিচালিত বিজেপি এবং নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের দিকে। যে গরিষ্ঠ অংশ চাইছে, সিএসকে-কে রেখে আইপিএল নয় করা হোক!
যা খবর, বোর্ডের সামনে এখন দু’টো রাস্তা পড়ে। এক, বিড দিয়ে নতুন দুই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নেওয়া। যা নিয়ে বেশ কয়েক জন শিল্পপতি ইতিমধ্যেই আগ্রহ দেখিয়েছেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে চেন্নাই এবং রাজস্থান রয়্যালসের আগামী আইপিএল খেলার কোনও সম্ভাবনা নেই। প্লেয়ারদের নিলামে তুলে নতুন করে সব করতে হবে। দ্বিতীয় রাস্তাটা হল, বোর্ড নিজেই দু’বছরের জন্য সিএসকে-রাজস্থানের পরিচালনার ভার নিয়ে নিল। নির্বাসন উঠে গেলে তার পর সেটা আবার চলে গেল নির্দিষ্ট মালিকদের হাতে। বলা হল, রবিবারের আইপিএল বৈঠকে আইনজীবীরা লোঢা কমিশনের রিপোর্ট খুঁটিয়ে দেখবেন যে বোর্ড দু’টো টিমের পরিচালনার দায়িত্ব নিতে গেলে কোনও আইনি জটিলতায় পড়তে হচ্ছে কি না।
যা শুনে কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন, তা হলে তো ফের স্বার্থের সংঘাতে পড়ে যাবে বোর্ড। সিএসকে বা রাজস্থানের পক্ষে কোনও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গেলে লোকে বলতে শুরু করবে, বোর্ডের টিম। আম্পায়ার আউট দেবে কোন সাহসে? ভাবমূর্তি তো তখন আবার বিপদে পড়ে যাবে। এ দিন রাজীব শুক্লকে প্রশ্নটা করা হয়। বলা হয়, বোর্ড যদি দু’টো টিম পরিচালনার দায়িত্ব নেয়, স্বার্থের সংঘাতে পড়তে পারে কি না। রাজীব পাত্তা না দিয়ে বলে দেন, ‘‘প্রশ্নই নেই। আইপিএলের সুপারভাইজ বোর্ড করে। দু’টো ব্যাপার দেখে। একটা নিলাম। দু’নম্বরটা টিমগুলোকে ঠিকঠাক ম্যানেজ করা। এতে স্বার্থের সংঘাত কোথা থেকে আসছে? বরং ঠিকঠাক লোককে দায়িত্ব দিলে এটা করা যেতে পারে।’’
কেউ কেউ আবার অন্য যুক্তি শোনাতে শুরু করেছেন। বলা হচ্ছে, এখন নতুন টিম নিলে পরে কী হবে? সিএসকে-রাজস্থানের নির্বাসন উঠে গেলে আইপিএল তখন তো দাঁড়াবে দশ টিমের। টুর্নামেন্টের মেয়াদ তখন আরও বেড়ে যাবে। অত বড় উইন্ডো আইপিএলকে দেওয়া সম্ভব হবে তো? তার চেয়ে বোর্ড এখন দু’টো টিম পরিচালনা করুক। পরে ছেড়ে দেবে। অথচ নয় টিমের আইপিএল হয়েছে অতীতে। কোচি টাস্কার্স, পুণে ওয়ারিয়র্স তো খেলত একটা সময়। উইন্ডো পাওয়া নিয়ে তখন কোনও সমস্যা হয়নি।
আসন্ন আইপিএল বৈঠক কেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে বোর্ডের কঠোরতার পরীক্ষা— বোঝা যাচ্ছে কি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy