Advertisement
E-Paper

বোল্টকে হারাতে চান, ব্রাজিলে ইতিহাস দেখছেন ‘সুপার মম’

অলিম্পিক্সের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ অ্যাথলেটিক্স। সে ‘বিগেস্ট শো অন আর্থ’-এ খেলার বহর বাড়তে বাড়তে এ বার রিওতে সংখ্যাটা যতই তিরিশ ছাড়িয়ে যাক না কেন! এখনও অ্যাথলেটিক্স-ই সব ইভেন্টের ‘মা’।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ০৪:৪১
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

অলিম্পিক্সের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ অ্যাথলেটিক্স। সে ‘বিগেস্ট শো অন আর্থ’-এ খেলার বহর বাড়তে বাড়তে এ বার রিওতে সংখ্যাটা যতই তিরিশ ছাড়িয়ে যাক না কেন! এখনও অ্যাথলেটিক্স-ই সব ইভেন্টের ‘মা’।

আবার ২০১৬ অলিম্পিক্স অ্যাথলেটিক্স যতই উসেইন বোল্ট বা মো ফারা-র নামাঙ্কিত হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখুক না কেন বিশেষজ্ঞ মহল, দুই মহারথীকে মহাচ্যালেঞ্জে ফেলতে পারেন বিপরীত লিঙ্গের দুই অ্যাথলিট। আর কী আশ্চর্য! সেই দুই বোল্ট আর মো ফারার দেশের মেয়ে!

জামাইকার শেলি অ্যান ফ্রেসার প্রাইস আর গ্রেট ব্রিটেনের জেসিকা এনিস হিল।

স্ব-স্ব ক্ষেত্রে দু’জনেই কিংবদন্তি। দেশোয়ালি বোল্টের মতোই শেলি শেষ দু’টো অলিম্পিক্সে একশো মিটারে সোনাজয়ী। আর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তো সেই ২০০৯ থেকে এই গ্রহের দ্রুততম মানবী। যে বিদ্যুৎ বোল্টের পা থেকেও বেরোয়নি! আর রিওতে বিশালাকায় ব্রিটেন স্কোয়াডের যেন তিন ক্রীড়াবিদকেই গোটা দল ভাবছেন ব্রিটিশরা— দূরপাল্লার দৌড়বাজ মহম্মদ মুকতার জামা ফারা ওরফে মো ফারা, টেনিসের অ্যান্ডি মারে এবং হেপ্টাথলনিস্ট জেসিকা হিল। মো ফারা যদি তাঁর লন্ডন গেমসের ‘লং ডিসট্যান্স ডাবল’ (১০ ও ৫ হাজার মিটার দৌড়ে জোড়া সোনা) খেতাব অটুট রাখতে রিওতে নামেন তো জেসিকাও নামবেন চার বছর আগের অলিম্পিক্সে জেতা হেপ্টাথলনের সোনা অক্ষত রাখতে।

২০১৫-এ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও হেপ্টাথলনে সোনাজয়ী জেসিকা আবার রিওতে একটা অন্য বিরল কৃতিত্বের অধিকারী এখনই হয়ে উঠেছেন। আধুনিক অলিম্পিক্সের ১২০ বছরের ইতিহাসে জেসিকা মাত্র তৃতীয় মা যিনি নিজের অলিম্পিক্স খেতাব অটুট রাখার যুদ্ধে নামবেন। ঠিক দু’বছর আগে ২০১৪-র জুলাইয়ে পুত্র সন্তানের মা হয়েছেন জেসিকা। শার্লি স্ট্রিকল্যান্ড বাহান্ন ও ছাপান্ন অলিম্পিক্সে ৮০ মিটার হার্ডলসে সোনা জেতার মাঝে তিপান্নয় তাঁর পুত্রের জন্ম হয়েছিল। আর ফ্রাঙ্কোইস এটোন ২০০৪ ও ২০০৮ অলিম্পিক্সে ট্রিপল জাম্পে সোনা জেতার পথে ২০০৬-এ তাঁর ছেলে নিল জন্মায়।

শেলি আবার এক সম্মানপ্রাপ্তিতে বোল্টকেও পিছনে ফেলে দিতে চলেছেন! সামনের শুক্রবার রিও গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ২০৭ দেশের মার্চপাস্টে জামাইকা দলের জাতীয় পতাকা বহন করার গৌরব থাকছে শেলি অ্যান ফ্রেসার প্রাইসের হাতে। বোল্টের কপালে যা আজও অধরা। তিরিশ বছরের ব্রিটিশ হেপ্টাথলনিস্ট জেসিকার ইতালীয় কোচ টনি মিনিচিয়েলো-কে যদি আগামী দু’সপ্তাহ রিওতে তাঁর ছাত্রীর মাতৃত্ব-উত্তর ফিটনেস রিপোর্ট ফাইল নিয়ে অলিম্পিক্স স্টেডিয়ামে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়, তা হলে বছর উনত্রিশের ‘মহিলা বোল্ট’ শেলি তাঁর কিংস্টনের বাড়ি থেকে ব্যাগ ভর্তি খাবার নিয়ে রিও পাড়ি দেওয়ার কথা ভাবছেন।

‘‘যত বেশি সম্ভব বাড়ির খাবার নিয়ে গেমস ভিলেজে যাচ্ছি। আমার পরিজ, সসেজ, দুধের ক্যান এমনকী চিপসের প্যাকেটও ব্যাগে ভরছি। তবে পিৎজা খুব কম থাকছে। রিওতে বেশি পিৎজা না খেয়ে ফেলি সে ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকতে হবে,’’ ইতালিতে প্রাক্-গেমস প্রস্তুতি সেরে রিও-যাত্রার আগে সদ্য জামাইকায় ফিরে বলেছেন শত মিটারে গত দু’বারের অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন শেলি। সঙ্গে রসিকতা করে আরও যোগ করেন, ‘‘উসেইন আর আমি দু’জনই রিওতে একশো মিটারে সোনা জিতলে জামাইকা অলিম্পিক্স স্প্রিন্টে জোড়া হ্যাটট্রিক করবে। অসাধারণ একটা ব্যাপার হবে। তবে সে ক্ষেত্রে উসেইনের চেয়ে আমি এগিয়ে থাকব ইতিহাসে। কেন জানেন? ওর একশো মিটার ফাইনালের একদিন আগে আমার একশো মিটার ফাইনাল যে!’’

জেসিকা আবার এই মুহূর্তে যেন রসিকতার মুডে নেই। বরং তাঁর একটু হলেও মন খারাপ, দু’বছরের বাচ্চা রেগি-কে শেফিল্ডের বাড়িতে রেখে রিও যেতে হচ্ছে বলে। জেসিকার তেরো বছর বয়স থেকে তাঁকে কোচিং করিয়ে আসছেন টনি। দাবি করেছেন, ‘‘বোল্ট-শেলি হয়তো জামাইকার ডাবল হ্যাটট্রিক ঘটাবে একশো মিটারে সোনা জয়ে। দু’জনই টানা তিনটে অলিম্পিক্সে বিশ্বের দ্রুততম মানব-মানবী হবে। কিন্তু জেসিকা যদি হেপ্টাথলনে চার বছর আগের লন্ডন গেমসের সোনা রিওতে অক্ষত রাখতে পারে সেটা হবে আরও বড় কৃতিত্ব। কারণ, তার জন্য যে বিশাল ওয়ার্কলোড নিতে হয়, শক্তি লাগে সেটা বোধহয় অ্যাথলেটিক্সের আর কোনও ইভেন্টের সঙ্গে তুলনীয় নয়। ট্র্যাক আর ফিল্ড মিলিয়ে তোমাকে দু’দিনে স্প্রিন্ট থেকে শুরু করে জাম্প, মিডল ডিসট্যান্স দৌড়— সব কিছু থেকে সবার চেয়ে বেশি পয়েন্ট তুলতে হবে।’’

আর ‘মম’ জেসিকা? তিনি এখন থেকেই বারো দিন পরে রিওতে গ্রেট ব্রিটেনের ‘সুপার স্যাটারডে টু’ দেখছেন! ‘‘ওই দিন মো আর আমার, দু’জনেরই ইভেন্টের ফাইনাল। নিশ্চয়ই এর পরে আর কোনও ব্যাখ্যা দিতে হবে না আমাকে, কেন দিনটা ব্রিটেনের সুপার স্যাটারডে হবে!’’

Rio Olympics Olympics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy