Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নতুন জুতো পরে দোহায় সোনার স্বপ্ন দেখছেন স্বপ্না

হেপ্টাথলনের সাতটি বিভাগের মধ্যে দৌড়ের ইভেন্টগুলোর ক্ষেত্রেও সুবিধা হচ্ছে। অনুশীলনের সময় সাবলীল মনে হচ্ছে নিজেকে।

চ্যালেঞ্জ: আবার নতুন উদ্যমে প্রস্তুতি শুরু স্বপ্নার। ফাইল চিত্র

চ্যালেঞ্জ: আবার নতুন উদ্যমে প্রস্তুতি শুরু স্বপ্নার। ফাইল চিত্র

রতন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০৪:৫৯
Share: Save:

তাঁর জন্যই জার্মানির একটি খেলার সরঞ্জাম তৈরির সংস্থা বিশেষ জুতো তৈরি করেছে। সেটা পরার পরে দু’পায়েরই ছয় নম্বর আঙুলটা আর কড়ে আঙুলের উপর উঠে তাঁকে অস্বস্তিতে ফেলছে না।

হেপ্টাথলনের সাতটি বিভাগের মধ্যে দৌড়ের ইভেন্টগুলোর ক্ষেত্রেও সুবিধা হচ্ছে। অনুশীলনের সময় সাবলীল মনে হচ্ছে নিজেকে।

আর দু’পায়ের বারো আঙুলের জন্য তৈরি ইভেন্ট প্রতি ২ জোড়া করে এই বিশেষ জুতো পরেই দোহায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ফের সোনার স্বপ্ন দেখছেন স্বপ্না বর্মন।

‘‘দৌড়ের পরে আগের মতো আর ব্যথা হচ্ছে না ছয় নম্বর আঙুলে। এই জুতো পরেই অনুশীলন করছি। গতি আর স্ট্যামিনা আরও বাড়াতে পারলে জার্কাতার চেয়ে ভাল পয়েন্ট করব। কোচ স্যর তো সে রকমই বলছেন,’’ বুধবার সল্টলেক সাইতে অনুশীলনের মাঝে বলে দিলেন জাকার্তা এশিয়াডে সোনাজয়ী মেয়ে। শরীরে অন্তত চারটি বড় চোট নিয়ে জার্কাতায় করেছিলেন ৬০২৬ পয়েন্ট। এ বার তাঁকে ৬১০০-র লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছেন কোচ সুভাষ সরকার। কোচের রুটিন মেনেই দু’বেলা অন্তত সাত ঘণ্টা ঘাম ঝরাচ্ছেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলার সাম্প্রতিক কালের অন্যতম সফল মুখ।

‘‘আমার এখন চোট নেই। হাইজাম্প, লং জাম্প এবং ১০০ মিটার হার্ডলসে আমার সময় ভাল ছিলই। এ বার ২০০ মিটার, ৮০০ মিটারে নিজের সেরাটা দিতে হবে,’’ বলছিলেন জলপাইগুড়ির রাজবংশী পরিবারের জেদি মেয়ে। ২১-২৪ এপ্রিল দোহায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। সেখানে ছাড়পত্র পেতে হলে ফেডারেশন কাপে করতে হবে ৫৯০০ পয়েন্ট। ১৪ থেকে ১৮ মার্চ পাতিয়ালায় হবে ফেডারেশন কাপ। এখন তারই প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্বপ্না।

জাকার্তায় সোনা জেতার পরে প্রায় সাড়ে ছ’মাস বাদে ফের প্রতিযোগিতায় নামছেন পাতিয়ালায়। চোট সারিয়ে রি-হ্যাব করে এবং অসংখ্য সংবর্ধনা সভার পরে মাস তিনেক হল সেই অর্থে মাঠে ফিরেছেন। দু’মাস পুরোদমে অনুশীলন। তাঁর কোচ সুভাষ সরকার বললেন, ‘‘একটু হালকা চালে ওর পরীক্ষা নিয়েছি। তাতেই ৫৮০০ করেছে। আমাদের লক্ষ্য দোহায় গিয়ে ৬১০০ করা। আমি ওকে ছোট থেকে চিনি। বিশেষ করে দৌড়ের ইভেন্টগুলোয় ওর উন্নতির

সুযোগ আছে।’’

দ্যুতি চন্দের মতো অ্যাথলিটেরা রুপো জিতেও কয়েক কোটি টাকা পুরস্কার পেয়েছেন। তা নিয়ে ক্ষোভ আছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে সোনা জিতে রেকর্ড গড়ার পরে স্নাতক হওয়ার পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ফল বেরোনোর পরে সামান্য সমস্যায় পড়েছেন। দু’বার সহ-উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও দেখা করতে পারেননি। তাঁর ঘরের বাইরে সোনার মেয়ে ঠায় বসে থেকেছেন দু’ঘণ্টা ধরে। সাহায্য পাননি কারও। সে সব ক্ষোভ নিয়েও অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন স্বপ্না। রবিবারই চলে যাবেন পাটিয়ালা। তাঁর কোচ সুভাষ সরকারকে ছাত্রীর সঙ্গে যাওয়ার ছাড়পত্র দেয়নি সাই। তবুও সুভাষবাবু যাচ্ছেন নিজের খরচায়, অফিসের ছুটি নিয়ে। সুভাষবাবু বলছিলেন, ‘‘আমি সঙ্গে না গেলে কোথায় অনুশীলন করবে? কার কাছে করবে? সেজন্যই যেতে হবে। জার্কাতাতেও গিয়েছিলাম। ওকে নিয়ে যে আমার অনেক স্বপ্ন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Asian Championship Athletics Swapna Barman Doha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE