Advertisement
E-Paper

নতুন বলও আজ সামলে দিতে হবে বিরাটদের

সেঞ্চুরিয়ন পার্কে এ দিন দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের চাপে ফেলতে  বিরাটকে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ শট মারতে দেখলাম। কিন্তু রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পরেই শেষ দশ-বারো  ওভার কিন্তু ও কোনও ঝুঁকি নেয়নি। এই সময়টা দারুণ ভাবে বল ছাড়তে দেখলাম বিরাটকে।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৫০

কেপ টাউনে প্রথম টেস্টে ভারতের হারের পরে আনন্দবাজারে লিখেছিলাম, এই ভারতীয় দলকে বল ছাড়ার অনুশীলন করতে হবে। সেটা যে বিরাট কোহালি ভাল মতো করেছে তা এ দিন ভারত অধিনায়ক ব্যাট করার সময় বুঝিয়ে দিল।

সেঞ্চুরিয়ন পার্কে এ দিন দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের চাপে ফেলতে বিরাটকে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ শট মারতে দেখলাম। কিন্তু রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পরেই শেষ দশ-বারো ওভার কিন্তু ও কোনও ঝুঁকি নেয়নি। এই সময়টা দারুণ ভাবে বল ছাড়তে দেখলাম বিরাটকে। যা টেস্ট ক্রিকেটের একটা সৌন্দর্য্য।

পিচে বল নড়ছে না। কেবল গতি আর বাউন্স সামলাতে হবে। এই ধরনের পিচে দরকার দু’তিনটে বড় রানের জুটি। আর সেটা যদি শুরুতেই করতে পারে ভারত, তা হলেই এই দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে ফেলা যায়। কিন্তু এই সফরে তা হচ্ছে কোথায়? দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৩৫ রানে অলআউট হওয়ার পরে দ্রুত ভারতের দুই উইকেট চলে গেল ২৮ রানে। কে এল রাহুল এবং চেতেশ্বর পূজারা ক্রিজে এসে ফের মাথাটা শান্ত রাখতে পারল না। অযথা তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আউট হয়েছে রাহুল আর চেতেশ্বর পূজারা।

এ রকম পরিস্থিতিতে ম্যাচটা যখন দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে ঢলে পড়ছে তখনই মুরলি বিজয়কে নিয়ে খেলাটা ধরল বিরাট। শুরুতে ক্রিজে গিয়ে ও বুঝে নিয়েছিল ‘গুড লেংথ’-এ আসা বলগুলো খেলতে হবে। তা হলেই চাপটা কাটবে মাথার উপর থেকে। সেটা করতে গিয়ে পিচ ছেড়ে কিছুটা এগিয়ে বলটা ‘গুড লেংথ’ করে নিচ্ছিল। এ দিন ওর অপরাজিত ৮৫ রানের মধ্যে ৪৭ রানই এসেছে এ ভাবে। এতে লেংথ হারাচ্ছিল কাগিসো রাবাডা, ভার্নান ফিল্যান্ডার-রা।

সত্তর, আশির দশকে সুনীল গাওস্কর এবং তার পরে নব্বই দশকে সচিন তেন্ডুলকর যে রকম চাপের মুখে নিজের মানসিকতা অটুট রেখে ব্যাট করত, এ দিন সে ভাবেই ব্যাট করতে দেখলাম বিরাটকে। এ রকম নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিং ওকে অনেক দিন করতে দেখিনি। বিশেষ করে মনোঃসংযোগটা দারুণ লাগল। মর্নি মর্কেলকে ও যে ভাবে ডান দিকে একটা অন ড্রাইভ মারল এবং তার আগে ওই মর্কেলকে-ই কভার ড্রাইভে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিল, তখন একই সঙ্গে ওর ফুটওয়ার্ক এবং মাথা ও ব্যাটের অবস্থান বুঝিয়ে দিচ্ছিল বিরাট প্রথম টেস্টের সব ভুল শুধরে নেমেছে দ্বিতীয় টেস্টে। ভারত এ দিন বিরাটের কাঁধে ভর দিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে পাল্টা লড়াইটা ছুড়ে দিল।

বিরাট ভারতকে লড়াইয়ে রাখলেও ফের ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ রোহিত শর্মা। লাল বল খেলার সমস্যা হচ্ছে ওর। রোহিতকে মনে রাখতে হবে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে অজিঙ্ক রাহানে। আর টেস্ট ক্রিকেটে কিন্তু ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি-র মতো পুল মারার জন্য শর্ট বল পাওয়া যাবে না।

দক্ষিণ আফ্রিকা এ দিন খেলা শুরুর সময় ছিল ২৬৯-৬। ভারতীয় বোলারদের দরকার ছিল তিনশোর মধ্যে ওদের আটকে রাখা। কিন্তু সেখানে ৩৫ রান বেশি হল। আমার মতে এই জায়গায় বিরাট কোহালি আর অশ্বিনকে একটু আগে বোলিং করালে বরং চাপে পড়ত দক্ষিণ আফ্রিকা।

দিনের শেষে ভারতীয় দলের রান ১৮৩-৫। তৃতীয় দিন সকালে প্রথম এক ঘণ্টা গুরুত্বপূর্ণ। বিরাট আর হার্দিক সংকল্প করুক, মারার বল মারব। কিন্তু উইকেট ছুড়ে দেব না। নতুন বল নেওয়ার আগে এখনও ১৯ ওভার খেলা হবে। তা সামলে দিয়ে নতুন বলও খেলতে হবে ওদের দু’জনকে। কারণ, ১৫২ রানে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা কিন্তু চালকের আসনেই রয়েছে। এ দিন কেশব মহারাজের বল যে রকম ঘুরতে দেখলাম, তার ফলে একটা চিন্তা কিন্তু আসছেই। এই পিচে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে হবে বিরাটদের। যেখানে স্পিন ও বাউন্স দু’টোই থাকবে। কাজেই দক্ষিণ আফ্রিকা যদি তিনশো রানের উপরে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস ছাড়ে, তা হলে কিন্তু ভারতের কাজটা কঠিন হয়ে যাবে।

India vs South Africa Cricke Second Test Virat Kohli Sambaran Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy