নীল জার্সিটা ভারতীয়রা পরলেই দেখি ওদের শরীরী ভাষা পুরো পাল্টে যায়। আপনারাও নিশ্চয়ই সেটা ওয়ান ডে সিরিজের প্রথম যুদ্ধতে দেখলেন।
টেস্ট টিম হিসেবে দলটা এখনও তরুণ। ধোনিই সবচেয়ে সিনিয়র। ওর পর সবচেয়ে অভিজ্ঞ বিরাট কোহলি। কিন্তু ওয়ান ডে-র ফর্ম্যাটটা আলাদা। ফর্ম্যাট কেন, সব কিছুই ওয়ান ডে-র আলাদা। সেখানে ভারত কিন্তু অত্যন্ত ব্যালান্সড টিম। যারা পাঁচ নিয়মিত বোলার নিয়ে নামে। যাদের ব্যাটিং অর্ডারে পাঁচ নম্বরে রায়না, ধোনি ছ’নম্বর, জাডেজা সাত আর অশ্বিন আট। ওয়ান ডে-তে টিমটার জেনুইন দু’জন অলরাউন্ডার আছে। অশ্বিন আর জাডেজা। যারা গভীরতা তো বটেই, জরুরি ব্যালান্সটাও দেয়।
ওয়ান ডে-তে ইংল্যান্ডের চেয়ে বেশ কিছু মাইল এগিয়ে ভারত। ওয়ান ডে ক্রিকেটটা ভারতের সাম্রাজ্য। তবু কার্ডিফে ভারতের থেকে এ রকম পারফরম্যান্স আশা করিনি। জানতাম ওরা লড়বে। কিন্তু পারফরম্যান্স যে শেষ পর্যন্ত অবিশ্বাস্য দাঁড়াবে, ভাবতে পারিনি। ওয়ান ডে-তে যে ক’টা দুর্ধর্ষ ইনিংস দেখেছি, তার মধ্যে অবশ্যই রায়নার ইনিংস থাকবে। সম্প্রতি ওকে কিছু ভাল ইনিংস খেলতে দেখছি। শর্ট বলের বিরুদ্ধে ওকে এখন পজিটিভ লাগে। যেটা বোঝায় যে, রায়না ওর ক্রিকেটটা নিয়ে ভাবে, খাটে। প্রচুর উন্নতি করেছে ও।
দু’টো নতুন বলের সামনে ক্রমাগত পড়ে, ইংল্যান্ডের পরিবেশে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৩৩ রানে যদি কেউ জেতে, প্রশংসা তো করতেই হবে। শামিকে দেখে মনে হল, আবার ছন্দটা পাচ্ছে। শেষটা ভাল করছে, ফলো থ্রু-ও শামির এখন সমান ভাল। আশা করি ও বুঝতে পেরেছে এই পর্যায়ের ক্রিকেটে টিকে থাকতে গেলে সব সময় খাটাখাটনি করে যেতে হবে।
ধোনি কী বলব ওকে নিয়ে? আদর্শ ওয়ান ডে ব্যাটসম্যান। ধোনি জানে কখন স্ট্রাইক রোটেট করবে, কখন স্লগ করবে। এই ফর্ম্যাটে কখন কী দরকার, সেটা অসম্ভব ভাল বুঝতে পারে ও। মাথা ঠান্ডা রাখে। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটস খুব ভাল। রায়নাকে ও যে ভাবে গাইড করে গেল, এক কথায় অসাধারণ।
ইংল্যান্ডকে দেখেও অবাক হয়ে গেলাম। কুড়ি বছর হয়ে গেল তবু ওরা শিখে উঠতে পারল না যে ওয়ান ডে-তে স্পেশ্যালিস্ট দরকার, শুধু প্লেয়ারে সব হয় না। স্টিভ ফিন ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটারে বল করে। কার্ডিফে ওকে খেলা দুঃসাধ্য হত। শুধু তাই নয়, কোনও দুর্বোধ্য কারণে ওরা বেন স্টোকসকে খেলিয়ে যায়, আর বলে স্টোকস নাকি পরবর্তী ইয়ান বোথাম! মানতে পারলাম না। স্টোকস ছ’মাস আগে অ্যাসেজের সেঞ্চুরি ভাঙিয়ে খেলে যাচ্ছে। বোলিং অতি সাধারণ। জর্ডান আর এক জন, যাকে নিয়ে ইংল্যান্ড তুমুল নাচানাচি করছে। ইংরেজদের বলতে শুনছি যে, জর্ডান নাকি ন্যাচারাল অ্যাথলিট। তা হলে অ্যাথলেটিক্সে যাক না, ক্রিকেটে কী করছে? স্লিপ ফিল্ডার হিসেবে জর্ডান ভাল। কিন্তু শেষ দিকে যে ভাবে ব্যাট করছে, খুব খারাপ।
কার্ডিফের পর বলব মাইকেল ভন আর গ্রেম সোয়ানের সঙ্গে আমি এখন একমত। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কোনও সম্ভাবনাই নেই। কাউন্টিগুলো এত ওয়ান ডে খেলে এখন। তবু ওদের দেখি বারবার ভুল দল নির্বাচন করছে। ওরা বুঝতে পারে না স্পিনারদের কী ভাবে খেলা উচিত। নটিংহ্যাম উইকেট পাটা হবে বলে মনে হয়। ভারত সেখানে নামবে দু’টো স্পিনার নিয়ে। ইংল্যান্ডের একজন— ট্রেডওয়েল।
সব দেখে মনে হচ্ছে, এই সিরিজে ভারতই রাজত্ব করতে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy