প্রতীকী ছবি।
আড়াই মাসের মেয়েকে নবদ্বীপের বাড়িতে রেখে জাতীয় শিবিরে কোচিং করাতে গিয়েছেন, তা-ও আবার টানা তিন মাস থাকতে হবে দিল্লিতে। কোনও বঙ্গতনয়া এ রকম সাহস কখনও নিয়েছেন বলে শোনা যায়নি। এই অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটিয়েছেন টুম্পা দেবনাথ।
পি ভি সিন্ধু থেকে শুরু করে মেয়েদের ক্রিকেট দলের উত্থান— খেলার মাঠে নারীশক্তির এই উত্তরণের আবহে নতুন সংযোজন টুম্পা। বাংলার সর্বকালের সেরা জিমন্যাস্ট এখন দিল্লির জাতীয় শিবিরে প্রণতি দাশ, প্রণতি নায়েক, প্রতিষ্ঠা সামন্ত-দের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। চিফ কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী তাঁকে ব্যবহার করছেন কোরিওগ্রাফি-র অনুশীলনে। ফ্লোরে এবং বিমে হাতে কলমে কানাডায় অক্টোবরের শুরুতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপগামী দলকে নানা ভল্ট শেখাচ্ছেন টুম্পা। যে দল গঠনের চূড়ান্ত নির্বাচন হবে আজ শনিবার দিল্লিতে।
রেলের চাকরি, আদরের মেয়ে লিপিকা এবং সংসারের নিশ্চিন্ত জীবন পাশে সরিয়ে রেখে কেন হঠাৎ কোচিং-এর প্রতি এই মোহ? তিন বার বিশ্ব জিমন্যাস্টিক্সে প্রতিনিধিত্ব করা টুম্পার জবাব, ‘‘কোচিং করানোটা আমার কাছে প্যাশন। ভালবাসা। তাই এনআইএস ডিপ্লোমা করার পর জাতীয় শিবিরে কোচিং করানোর ডাক উপেক্ষা করতে পারিনি। এই সুযোগ ক’জন পায়? মা-এর কাছে মেয়েকে রেখে তাই চলে এসেছি। প্রতিদিন ভোর সাড়ে চারটেয় আমার মেয়ে ফোন করে, তখন একটু মনটা খারাপ হয়।’’ তাঁর এই জিমন্যাস্টিক্স-প্রেম এবং একাগ্রতা দেখে সাইয়ের সিনিয়র কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী থেকে কল্যাণ চৌধুরী-রা আপ্লুত। অবাক। রেলের চাকরি ছেড়ে সাইয়ের কোচ হবেন এই ইচ্ছেয় চাকরির পরীক্ষা দিয়েছেন টুম্পা। সিনিয়র কোচেরা সবাই তাঁকে চাইছেন অ্যাকাডেমির জন্য। ২০২৪-এর অলিম্পিক্সের জন্য টুম্পার হাতে তুলে দেওয়া হবে সাত জুনিয়র জিমন্যাস্টকে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রায় একশো তিরিশটা পদক আছে টুম্পার। তিনটি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা মেয়ে বলছিলেন, ‘‘কোচিং করে যদি আরও কিছু দীপা তুলে আনতে পারি তার চেয়ে তৃপ্তির কিছু হবে না। বিশ্বেশ্বর স্যারের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, উনি আমাকে কোচিং করতে ডেকে এনেছেন বলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy