Advertisement
০২ মে ২০২৪
Chess Olympiad

Chess Olympiad 2022: দাবা অলিম্পিয়াডে সোনা জিতে আতঙ্কের কান্না ইউক্রেনের দাবাড়ুদের

দাবা অলিম্পিয়াডে মহিলাদের বিভাগে সোনা জিতেছে ইউক্রেন। জেতার আনন্দের মধ্যেও যুদ্ধের আতঙ্ক দাবাড়ুদের মুখে। দেশের মানুষের কথা ভাবছেন তাঁরা।

সোনাজয়ের পথে ইউক্রেনের মহিলা দাবাড়ু অ্যানা উশেনিনা

সোনাজয়ের পথে ইউক্রেনের মহিলা দাবাড়ু অ্যানা উশেনিনা ছবি: টুইটার

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২২ ১৪:১৭
Share: Save:

দাবা অলিম্পিয়াডে সোনা জিতেছেন। কিন্তু উচ্ছ্বাস নেই তাঁদের। উল্টে সতীর্থদের জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। আনন্দের কান্না! হবে হয়তো। উত্তর দেননি তাঁরা। শুধু বলেছেন, পদক তো আর যুদ্ধ থামাতে পারে না। দাবা অলিম্পিয়াডে সোনা জিতেও ইউক্রেনের মহিলা দাবাড়ুদের মুখে যুদ্ধের কথা।

সোনা জিততে শেষ রাউন্ডে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে দরকার ছিল ড্র। হারের মুখ থেকে ম্যাচ ড্র করেন ইউক্রেনের মহিলা দলের দাবাড়ু অ্যানা উশেনিনা। তার পরে চুপ করে উঠে গিয়ে হলের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা সতীর্থ নাতালিয়া বুকসাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন তিনি। পরে পদক নিতে গিয়ে অ্যানা বলেন, ‘‘সোনা জেতা সত্যিই গর্বের। কিন্তু পদক তো আর যুদ্ধ থামাতে পারে না।’’ অ্যানা যখন এ কথা বলছেন তখন স্টেডিয়াম জুড়ে স্তব্ধতা। সবার চোখেই হয়তো ভেসে উঠছে রাশিয়ার হামলার পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের ছবি।

৩৬ বছরের অ্যানা থাকেন খারকিভে। রাশিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ৩০ মাইল দূরের এই শহর গত কয়েক মাসে ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে। দেশের পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘রাশিয়ার সেনা আমাদের দেশে ঢোকার পরেই পরিবার নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালাতে হয়েছে। সঙ্গে কিছু নিয়ে যাওয়ার সময়টুকুও পাইনি।’’ এখনও পর্যন্ত বাড়ি ফিরতে পারেননি অ্যানা। প্রথমে আশ্রয় নিয়েছিলেন পশ্চিম ইউক্রেনের লিভিভ শহরে। তার পরে সেখান থেকে জার্মানি হয়ে স্পেনে আশ্রয় নেন।

একই অবস্থা দলের বাকি দাবাড়ুদের। খারকিভেরই বাসিন্দা অ্যানা মুজিচুক বলেছেন, ‘‘রাশিয়ার সেনা শহরে ঢোকার পরেই সাইরেন বাজতে শুরু করে। সকাল ৭টার সময় কোনও রকমে বাড়ি ছেড়ে পালাই। তার পর থেকে আর ফিরতে পারিনি।’’ দেশ ছেড়ে পোল্যান্ডে আশ্রয় নেন তিনি। কিন্তু আত্মীয়দের অনেকেই ইউক্রেনে থেকে গিয়েছেন। তাঁদের জন্য চিন্তা হয় অ্যানার।

যুদ্ধের সময় ভাবতে পারেননি দাবা খেলতে পারবেন। দাবা অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া তো দূরের স্বপ্ন ছিল। তখন শুধু প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া ছিলেন। সেখান থেকে কী ভাবে দল তৈরি করে ভারতে খেলতে এসেছেন সেটা ভাবলে এখনও অবাক হচ্ছেন অ্যানা, নাতালিয়ারা। জীবনযুদ্ধের লড়াইয়ে জেতার পরে চৌষট্টি খোপের লড়াইয়েও বিশ্বের সেরা হয়েছেন। এই কীর্তির মধ্যেও অ্যানাদের মন পড়ে প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার দূরে। সেখানে যে এখনও অনেক আত্মীয় রয়েছেন। তাঁদের জীবনের অনিশ্চয়তায় পদক জয়ের আনন্দ ম্লান হয়ে যাচ্ছে। বার বার ফিরে আসছে যুদ্ধের আতঙ্ক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE