জয়োল্লাস: বিজয়ী অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ছবি: রয়টার্স।
ভারত: ৩১৯-৩ (৪৮ ওভার)
পাকিস্তান: ১৬৪ (৩৩.৪ ওভার)
সীমান্তে বেড়ে চলা অস্থিরতার মধ্যে বিরাট কোহালির ভারত শুধু পাকিস্তানকে হারালই না। বার্মিংহামের দ্বৈরথে দুরমুশ করল।
এজবাস্টনে বৃষ্টির জন্য ভারতের ওভার সংখ্যা কমে ৪৮ হল। তার পর পাকিস্তানও পেল ৪১ ওভার। কিন্তু ম্যাচের ভাগ্যাকাশে কোনও কালো মেঘের আনাগোনা নেই। একতরফা কোহালি, যুবরাজ, হার্দিক পাণ্ড্যদের শাসন চলল। হালফিলে যে রকম বারবার চলেছে।
কোহালিরা ৩১৯-৩ তোলার পরেই অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, ম্যাচের ভাগ্য নিশ্চিত। ভিআইপি বক্সে মহম্মদ আজহারউদ্দিন বলে দিলেন, ‘‘আমরাই জিতছি। আর কোনও অঘটনের চান্স নেই।’’ তাঁর পাশে বসা মাইকেল ক্লার্কের গলাতেও একই সুর।
বিরতিতে সচিন তেন্ডুলকরকে দেখা গেল মাঠ প্রদক্ষিণে বেরিয়েছেন। সঙ্গে কোচের পদে নতুন আবেদনকারী বীরেন্দ্র সহবাগ। মাস্টারকে দেখে প্রিয় ছাত্র বিরাট ছুটে এলেন। ম্যাচের তখনও অর্ধেক বাকি। বিরাটকে সচিনের আলিঙ্গন দেখে মনে হচ্ছিল, আগাম অভিনন্দনই পেয়ে গেলেন।
ডাকওয়ার্থ-লুইস প্রক্রিয়ায় জয় এল ১২৪ রানে। কিন্তু সে তো অনেক পরে। মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতেই স্টেডিয়াম ঘুরতে বেরিয়ে মনে হল, অদৃশ্য স্কোরবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন ভারতীয় সমর্থকেরা। এর আগে বিশ্বকাপের ম্যাচে রেকর্ড ছিল ১১ ম্যাচে ভারতের ৯ জয়। সেটাকে ১২ ম্যাচে ১০ জয় করে দিয়েছেন ভক্তরা।
আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানকে ১২৪ রানে হারাল টিম ইন্ডিয়া
শেষ চার ওভারে উঠল ৭২। ওই সময়ে পাক বোলিংকে ভীষণ আক্রান্ত দেখাল। শেষ ওভারে হার্দিক পাণ্ড্য আবার প্রথম তিন বলে তিন ছক্কা মেরে ছয় ছক্কার হিড়িক তুলে দিয়েছিলেন। আজহার, ক্লার্ক-রাও তখন সিট ছেড়ে উঠে পড়েছেন। পাণ্ড্য সিংহবিক্রম দেখিয়েও যুবরাজ সিংহ হতে পারলেন না। ছয় ছক্কা হল না। ভারতীয় ব্যাটসম্যানেরা প্রত্যেকে রান করলেন। রোহিত ৯১, শিখর ৬৭, বিরাট ৮১ বলে ৮১ নট আউট। তাঁর নির্বাচন নিয়ে যাবতীয় সমালোচনা বাউন্ডারির বাইরে ফেলে দিয়ে প্রথম ম্যাচেই সেরা যুবরাজ। খেললেন ৩২ বলে ৫৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস। কিন্তু সকলকে ছাপিয়ে গেলেন হার্দিক। তাঁর ৬ বলে ২০ দেখে বলাবলি শুরু হল, ভারতের সীমিত ওভারের ক্রিকেটের নতুন তারকা এসে গিয়েছেন।
মধ্যাহ্নভোজেই দেখা গেল স্টেডিয়ামে মহা ধুমধামে শুরু হয়ে গিয়েছে ভাংড়া নাচের অনুষ্ঠান। আর ৩১৯ তোলার জোয়ারে সেই উৎসবে যোগ দিয়েছেন ভারতীয় দর্শকেরা। অন্য দিকে, ম্যাচ হারার পরে পাক ভক্তদের কাউকে কাউকে রাগত ভাবে বলতে শোনা গেল, ‘‘আমাদের ক্যাপ্টেন সরফরাজ কি না বলেছিল, ভারত চাপে থাকবে। আমাদের কোনও চাপ নেই। এই তার নমুনা!’’
ম্যাচ কা মুজরিম খোঁজা শুরু হয়ে গিয়েছে ওয়াঘার ও-পারে। কে বলবে মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেও বিরাটদের নিয়ে বিতর্ক চলছিল, শোয়েব মালিকরা ছিলেন ফুরফুরে। ভারত-পাক মহারণ— ইংল্যান্ডের আবহাওয়ার মতোই মুহূর্তে পাল্টে দিতে পারে অধিনায়কের ভাগ্যাকাশ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy