Advertisement
E-Paper

নির্বাসন তুলে নিল বোর্ড, মুক্ত হার্দিক আজই উড়ানে

বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, ভারতীয় দলের সঙ্গে যোগ দিতে আজ, শুক্রবার রাতেই মুম্বই থেকে নিউজ়িল্যান্ডগামী উড়ান ধরছেন হার্দিক। ‘কফি উইথ কর্ণ’ অনুষ্ঠানে তাঁর সতীর্থ রাহুলকে নিউজ়িল্যান্ড পাঠানো হচ্ছে না।

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫১
হার্দিক পাণ্ড্য এবং কে এল রাহুল। ছবি ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে

হার্দিক পাণ্ড্য এবং কে এল রাহুল। ছবি ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে

হার্দিক পাণ্ড্য এবং কে এল রাহুলের নির্বাসন তুলে নিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। যার অর্থ, জাতীয় বা রাজ্য দলের হয়ে ফের খেলতে নামার ক্ষেত্রে আপাতত কোনও বাধা নেই।

বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, ভারতীয় দলের সঙ্গে যোগ দিতে আজ, শুক্রবার রাতেই মুম্বই থেকে নিউজ়িল্যান্ডগামী উড়ান ধরছেন হার্দিক। ‘কফি উইথ কর্ণ’ অনুষ্ঠানে তাঁর সতীর্থ রাহুলকে নিউজ়িল্যান্ড পাঠানো হচ্ছে না। তিনি আপাতত ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে ইংল্যান্ড লায়ন্সের সঙ্গে খেলবেন। নিউজ়িল্যান্ডে দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচ শুক্রবার। তাতে অংশ না নিতেও পারলেও তৃতীয় ম্যাচ থেকেই কোহালিরা পেতে পারেন হার্দিককে। সেই ম্যাচে যদি না-ও হয়, চতুর্থ ম্যাচ থেকে তাঁর প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত।

কর্ণ জোহরের টিভি শো-তে গিয়ে আপত্তিজনক মন্তব্য করায় অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি দুই ক্রিকেটারকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নির্বাসিতও করা হয়েছিল। আগে ঘোষণা করা হয়েছিল, তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা খেলতে পারবেন না। বৃহস্পতিবার তা পাল্টে বলা হল, যত ক্ষণ না তদন্ত সম্পূর্ণ হচ্ছে এবং তাঁরা দোষী সাব্যস্ত হচ্ছেন, হার্দিকদের খেলতে বাধা নেই।

নির্বাসন ওঠার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দুই ক্রিকেটারকে মাঠে ফেরানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশেষ তৎপরতা হার্দিককে জাতীয় দলে ফেরানোর জন্য। তাঁকে ফিরে পাওয়ার জন্য ভারতীয় দলও উদগ্রীব। সেরা অলরাউন্ডারকে না পাওয়ায় যে দলের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, ঠারেঠোরে সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন অধিনায়ক কোহালি।

ভারতীয় বোর্ডের প্রধান সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত বিনোদ রাইয়ের সঙ্গেও ভারতীয় দল পরিচালন সমিতির কথা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে আর্জি জানানো হয়, যদি তদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করতে দেরি হয়, তা হলে মধ্যবর্তী সময়ে হার্দিকদের খেলতে দেওয়া হোক। এ বছরেই জুন মাসে ইংল্যান্ডে বসছে বিশ্বকাপের আসর। সেখানে কোহালির দলে অলরাউন্ডার হিসেবে হার্দিক অন্যতম তুরুপের তাস।

অস্ট্রেলিয়ার পরে নিউজ়িল্যান্ডেও যদি পাঁচ ওয়ান ডে এবং তিন টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজে তিনি না খেলতে পারেন, বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটবে অনেকটাই।

ভারতীয় দলের বক্তব্যে সায় দেন কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স (সিওএ)-এর প্রধান বিনোদ রাই। সিওএ-র অন্য প্রতিনিধি প্রাক্তন মহিলা ক্রিকেটার ডায়ানা এডুলজি শুরু থেকে হার্দিকদের নির্বাসন তোলার বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সি কে খন্না নির্বাসন তোলার স্বপক্ষে বিবৃতি দেন। ডায়ানার আর্জি মেনে তিনি এ নিয়ে বোর্ডের বিশেষ সাধারণ সভা ডাকতেও অস্বীকার করেন।

তার পরেই রাই বাড়তি উদ্যোগী হয়ে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত অ্যামিকাস কিউরে পি এস নরসিংহের সঙ্গে কথা বলে নির্বাসন তোলার সিদ্ধান্ত নেন। বলে দেন, তদন্ত যখন চালুই করা যাচ্ছে না, তা হলে কিসের ভিত্তিতে দুই ক্রিকেটারের খেলা আটকানো হবে! প্রশ্ন ওঠে, ইংল্যান্ড যদি মামলা চলাকালীন ভারতের বিরুদ্ধে বেন স্টোকসকে খেলতে দিয়ে থাকে, তা হলে হার্দিকদের কেন দেওয়া হবে না?

বৃহস্পতিবার বিকেলে বোর্ডের দিক থেকে মুক্তিলাভের ঘোষণার পরেই কাঠগড়ায় থাকা দুই ক্রিকেটারকে আর অপেক্ষায় রাখতে চাননি জাতীয় নির্বাচকেরা। তাঁরা তৎক্ষণাৎ তাঁদের মাঠে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দেন। সন্ধের দিকেই তাঁরা প্রাথমিক কথাবার্তা বলেন নিজেদের মধ্যে। তখনই সিদ্ধান্ত হয়, হার্দিককে অবিলম্বে নিউজ়িল্যান্ডের বিমানে তোলা হবে। রাহুলকে পাঠানো হবে ‘এ’ দলের হয়ে খেলতে।

আজ, শুক্রবার নির্বাচকেরা টেলিকনফারেন্স করে সরকারি ভাবে দু’জনকে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেবেন বলে খবর। তবে ভিতরে-ভিতরে প্রত্যাবর্তনের রাস্তা পরিষ্কার। বিকেলের দিকেই জাতীয় নির্বাচকদের তরফে যোগাযোগ করা হয় হার্দিকের সঙ্গে। তাঁকে বলে দেওয়া হয়েছে, তৈরি থাকো। শুক্রবার রাতের মধ্যেই সম্ভবত তোমাকে নিউজ়িল্যান্ডের উড়ান ধরতে হবে। বোর্ডের দফতর থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উড়ানের টিকিট বুকিংয়ের তোড়জোড় শুরু হয়।

কফির পেয়ালায় বিতর্কের ঝড় তোলায় অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল হার্দিককে। দেশে ফিরে বেশ কয়েক দিন বাড়ির মধ্যে নিজেকে বন্দি করে রেখেছিলেন তিনি। দিন পাঁচেক হল ক্রিকেট অনুশীলন শুরু করেছেন। এক শুভানুধ্যায়ীর উদ্যোগে নবি মুম্বইয়ের একটি মাঠে গিয়ে লুকিয়ে অনুশীলন করছেন তিনি। জিমে ওজনও তুলছেন। সঙ্গী দাদা ক্রুনাল পাণ্ড্য। বডোদরার পাঠান ভাইদের মতোই হরিহর আত্মা তাঁরা। বৃহস্পতিবার সেখানেই অনুশীলনে ব্যস্ত থাকার সময়ে খবর আসে, নির্বাসন তুলে নিয়েছে বোর্ড। আনন্দে আত্মহারা দেখাতে থাকে হার্দিককে।

ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে চুক্তি থাকায় এবং এত বড় বিতর্কের পরে সাবধান হয়ে যাওয়ায় হার্দিকের সঙ্গে এ দিন কথা বলা যায়নি। তবে পাণ্ড্য ভাইদের এক শুভানুধ্যায়ী মুম্বই থেকে বলছিলেন, ‘‘এই কটা দিন ধরে শুধু দ্বিতীয় জীবন লাভের প্রার্থনা করে গিয়েছে হার্দিক। খুব ভেঙে পড়েছিল ছেলেটা।’’ মুক্তি পেয়ে কী রকম মনে হচ্ছে এখন হার্দিকের? শুভানুধ্যায়ী বললেন, ‘‘অন্ধকার সুড়ঙ্গের মধ্যে হারিয়ে যেতে যেতে কেউ আলোর রেখা দেখতে পেলে যে রকম অনুভূতি হয়, ওরও সে

রকমই হচ্ছে!’’

Cricket India Ban Hardik Pandya KL Rahul COA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy