Advertisement
E-Paper

কোচ রবি শাস্ত্রী কি ইয়েসম্যান? প্রশ্ন অধিনায়ককে, বিরাটের জবাব, আজব তো!

শুক্রবার, অস্ট্রেলিয়া উড়ে যাচ্ছে ভারতীয় দল। প্রথমে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তার পরে টেস্ট সিরিজ এবং শেষে ওয়ান ডে সিরিজ খেলতে। তার আগে বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন কোচ শাস্ত্রী এবং অধিনায়ক কোহালি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৮
সোজাসাপ্টা: অস্ট্রেলিয়া সফরে বেরনোর আগে মুম্বইয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি কোহালি। সব বাউন্সার মাইক হাতেও সপাটে ওড়ালেন তিনি। বলে দিলেন, পরীক্ষার জন্য তৈরি। পিটিআই

সোজাসাপ্টা: অস্ট্রেলিয়া সফরে বেরনোর আগে মুম্বইয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি কোহালি। সব বাউন্সার মাইক হাতেও সপাটে ওড়ালেন তিনি। বলে দিলেন, পরীক্ষার জন্য তৈরি। পিটিআই

কোচ রবি শাস্ত্রীর দিকে ধেয়ে আসা ‘বাউন্সার’ সপাটে হুক করে বাউন্ডারিতে ফেলে দিলেন বিরাট কোহালি!

আজ, শুক্রবার, অস্ট্রেলিয়া উড়ে যাচ্ছে ভারতীয় দল। প্রথমে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তার পরে টেস্ট সিরিজ এবং শেষে ওয়ান ডে সিরিজ খেলতে। তার আগে বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন কোচ শাস্ত্রী এবং অধিনায়ক কোহালি। যেখানে ভারত অধিনায়ককে প্রশ্ন করা হয়, আচ্ছা, শাস্ত্রী কি একজন ‘ইয়েস ম্যান’, মানে আপনার সব কিছুতেই তাল মিলিয়ে ‘হ্যাঁ’ বলেন? যে প্রশ্নের জবাবে কোহালি পরিষ্কার বলে দেন, ‘‘এর চেয়ে আজব কথা আর কিছু শুনিনি। সত্যি বলছি, ভারতীয় ক্রিকেটে আমার মুখের ওপর ‘না’ বোধ হয় সব চেয়ে বেশি বার রবি ভাই-ই বলেছেন। উনি হলেন এমন এক জন ব্যক্তি, যাঁর কাছ থেকে সত্যি কথাটাই সব সময় শুনতে পাই।’’

এখানেই শেষ নয়। কোহালি আরও জানিয়েছেন, শাস্ত্রীর পরামর্শে তিনি কতটা উপকৃত হয়েছেন। ‘‘রবি ভাইয়ের কথা শুনে আমি নিজের খেলায় যত পরিবর্তন এনেছি, তা আর কারও কথায় আনিনি,’’ বলেছেন কোহালি। একই সঙ্গে ভারত অধিনায়ক জানাচ্ছেন, শুধু তিনি নন, অনেক ক্রিকেটারই শাস্ত্রীর পরামর্শে উপকৃত হয়েছেন। ভারত অধিনায়কের মন্তব্য, ‘‘আমরা যখন এই দলটাকে তৈরি করা শুরু করেছিলাম, তখন রবি ভাই সবার মনে এই আত্মবিশ্বাসটা এনে দিয়েছিলেন যে, ওরা এই দলে খেলার যোগ্য। ২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট সিরিজের সেই ব্যর্থতার পরে আমরা সবাই খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। সেখান থেকে আমি বেরিয়ে আসতে পেরেছি। তার পর ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে শিখর ধওয়নের ফর্ম ফিরে পাওয়া। আসলে রবি ভাই জানেন, কী ভাবে একজন ক্রিকেটারের কাছ থেকে সেরা খেলাটা বার করে আনা যায়।’’

কোহালি পরিষ্কার করে দিচ্ছেন, এই পর্যায়ে একজন কোচের কাছ থেকে কী প্রত্যাশিত এবং শাস্ত্রী সেই প্রত্যাশা কী ভাবে পূরণ করছেন। ভারত অধিনায়ক বলছেন, ‘‘এই পর্যায়ের ক্রিকেটে ম্যান ম্যানেজমেন্টই আসল। আর সেই কাজটা রবি ভাই দারুণ করে। একটা দলের মধ্যে অনেক ব্যক্তিগত ব্যাপারস্যাপার থাকে। যে সব ব্যাপার জানানোর দরকার, সে সব জানানো হবে। কিন্তু আমরা কোনও ব্যানার তুলে ধরে বলব না, ভারতীয় দলে এই এই কাজ হচ্ছে। যত দিন পর্যন্ত আমরা মানসিক ভাবে স্বচ্ছ থাকব, আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার থাকবে, তত দিন আমরা ঠিক দিকেই এগিয়ে যাব।’’

এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়া সফরে ভাল ফল খুবই জরুরি। দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় টেস্ট সিরিজ হারতে হয়েছে। কোহালি মানছেন, ওই দুটো সফরে অনেক ঘাটতি ছিল ভারতের। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের অনেক উন্নতি করতে হবে। দল হিসেবে আমরা সেটা বুঝতে পেরেছি। আমরা জানি, ঠিক কী কী করতে হবে। এ বার সবাইকে সেই দায়িত্বটা নিতে হবে।’’

ইংল্যান্ড সফরের ব্যর্থতা নিয়ে কোহালি বলেছেন, ‘‘ইংল্যান্ড সফরের পরে আমরা অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। কোথায় কোথায় ভুল হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখেছি। এটা দেখেছি, যে খুব বেশি ভুল করিনি। কিন্তু আমরা ভাল ক্রিকেট খেললেও যে ক’টা ভুল করেছি, সেগুলো খুব বড় হয়ে গিয়েছে।’’ ঠিক কোন ভুলটা বড় হয়ে উঠেছিল, তা-ও বলেছেন কোহালি। ‘‘ম্যাচকে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে আমাদের আরও পারদর্শী হতে হবে। কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে আমাদের সমাধান বার করতে হবে। নিজে থেকে সমস্যা মিটে যাবে, এ রকম ধরে নিলে চলবে না।’’

ডনের দেশে সফর শুরু হওয়ার আগে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারেরা বলেছেন, এ বার কোনও স্লেজিং হবে না। যা নিয়ে কোহালির কোনও সমস্যা নেই। ভারত অধিনায়ক বরং বলছেন, ‘‘স্লেজিং না করার যে নীতির কথা ওরা বলছে, সেটা ওদের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমার এ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।’’ তবে কোহালি এও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভারতীয় দল মাঠে কখনও ঝামেলা শুরু করেনি। কেউ কিছু বললে চুপ করে হজম করতে চান না, এটাই হল তাঁর নীতি। ‘‘আমরা কখনও কিছু শুরু করিনি। তবে আমাদের কেউ কিছু বললে তার জবাব দিতে ছাড়িনি। তাই যদি কেউ কিছু শুরু না করে, তা হলে আমরাও কিছু করব না। আমরা নিজেদের কাজেই মন দেব।’’

এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় বোলাররা ভালই বল করেছিলেন। কোহালি মনে করছেন, বিদেশের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় দলের বিরুদ্ধে সিরিজ জিততে হলে সব বিভাগকেই একসঙ্গে ভাল খেলতে হয়। ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি বোলারদেরও জ্বলে উঠতে হবে অস্ট্রেলিয়ায়। কোহালি বলেছেন, ‘‘শেষ বার আমরা যখন অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিলাম, তার চেয়ে এ বারে বোলারদের ফিটনেস অনেক ভাল। অস্ট্রেলিয়ায় যেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। অস্ট্রেলিয়ার পিচে অনেক সময়ই বোলারদের মধ্যে একঘেয়েমি চলে আসতে পারে। অনেক সময় সাহায্য থাকবে না বোলারদের জন্য। তার ওপর কোকাবুরা বলও পরের দিকে সুইং করে না। এই অবস্থায় বোলারদের গতিটা ধরে রাখতে হয়। যে গতিতে দিনের শুরুতে বল করেছিল, সেই একই গতিতে সারা দিন বল করে যেতে হবে। সেই কারণেই ফিটনেস খুব জরুরি।’’

কোহালি তুলে আনছেন দক্ষিণ আফ্রিকার উদাহরণ। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সাম্প্রতিক অতীতে দক্ষিণ আফ্রিকাই টেস্ট সিরিজ জিতে ফিরতে পেরেছে। যা নিয়ে কোহালি বলছেন, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকার মর্নি মর্কেল, জাক কালিস, ডেল স্টেন ছিল। এখন কাগিসো রাবাডা আছে। ওরা ধারাবাহিক ভাবে একই জায়গায় বল করে গিয়েছে উইকেট তোলার জন্য। আমাদের বোলারদেরও ক্ষমতা আছে এই কাজটা করার। শুধু সেটা ঠিকঠাক করতে হবে।’’

একই সঙ্গে কোহালি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নীচের দিককার ব্যাটসম্যানদের রান পাওয়ার কথাটাও। ‘‘শেষের দিকের ব্যাটসম্যানদের রান পাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনও ম্যাচে এই ব্যাপারটা তফাত গড়ে দিতে পারে। আমাদের সেটাও মাথায় রাখতে হবে,’’ অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে বলে দিচ্ছেন ক্যাপ্টেন কোহালি।

Cricket India Australia Virat Kohli Ravi Shastri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy