Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ওয়ার্নার অতিমানবীয় তবু মন বলছে বছরটা বিরাটদের

মনে হচ্ছিল শুক্রবার যেন এবি ডে’ভিলিয়ার্সের অতিমানবীয় ইনিংসটার রি-রান দেখছি! খালি এ বার ব্যাট হাতে ডেভিড ওয়ার্নার। যে একার চেষ্টায় নিজের টিমকে এ বারের আইপিএল ফাইনালে পৌঁছে দিল। কোটলায় একটা সময় মনে হচ্ছিল সানরাইজার্সের হার অবধারিত। ওয়ার্নার কিন্তু টিমকে জেতানোর প্রতিজ্ঞা নিয়ে নেমেছিল আর কাজটা শেষ না করে মাঠ ছাড়ল না। এমন নয় যে গুজরাতের বোলিং খারাপ হয়েছে।

ফাইনালের আগে খোশমেজাজে ওয়ার্নাররা। ক্যাপ্টেনের সঙ্গে বিপুল শর্মাকে কেক মাখাচ্ছেন যুবরাজ-লক্ষ্মণও। ছবি-টুইটার

ফাইনালের আগে খোশমেজাজে ওয়ার্নাররা। ক্যাপ্টেনের সঙ্গে বিপুল শর্মাকে কেক মাখাচ্ছেন যুবরাজ-লক্ষ্মণও। ছবি-টুইটার

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৬ ০৪:০০
Share: Save:

মনে হচ্ছিল শুক্রবার যেন এবি ডে’ভিলিয়ার্সের অতিমানবীয় ইনিংসটার রি-রান দেখছি! খালি এ বার ব্যাট হাতে ডেভিড ওয়ার্নার। যে একার চেষ্টায় নিজের টিমকে এ বারের আইপিএল ফাইনালে পৌঁছে দিল।

কোটলায় একটা সময় মনে হচ্ছিল সানরাইজার্সের হার অবধারিত। ওয়ার্নার কিন্তু টিমকে জেতানোর প্রতিজ্ঞা নিয়ে নেমেছিল আর কাজটা শেষ না করে মাঠ ছাড়ল না। এমন নয় যে গুজরাতের বোলিং খারাপ হয়েছে। উল্টে সানরাইজার্স ব্যাটসম্যানদের এতটুকু জায়গা ছাড়েনি ওরা। শেষের দিকে কয়েকটা ওভার বাদ দিলে গোটা ম্যাচে যথেষ্ট আঁটোসাঁটো বোলিং করেছে। তবে ওয়ার্নার আর ওর পার্টনার ওই কয়েকটা খারাপ ওভারকেই দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়ে ম্যাচ বের করে নিল।

চিন্নাস্বামীর ফাইনাল নিয়ে অবশ্য একটা জোরদার ধারণা রয়েছে যে বেঙ্গালুরুই ফেভারিট। টিমটা যে রকম তুখোড় ছন্দে রয়েছে, সেটা দেখে ধারণাটা ঠিক বলেই মনে হচ্ছে। মানতেই হবে, ওদের ব্যাটিংটা হায়দরাবাদের চেয়ে অনেক ভাল। গেইল, এবি, ওয়াটসন, কেএল রাহুল আর সবার উপরে বিরাট কোহালি। প্রত্যেকে রানের মধ্যে আছে। এবং ফাইনালে বেঙ্গালুরুর হাসতে হাসতে মাঠ ছাড়ার জন্য এদের মধ্যে জনা দু’য়েকের ক্রিজে টিকে যাওয়াটাই সম্ভবত যথেষ্ট হবে।

অন্য দিকে, হায়দরাবাদ ওদের সবচেয়ে প্রভাবশালী দুই স্ট্রাইক বোলারকে ছাড়াই শেষের ম্যাচগুলো খেলতে বাধ্য হয়েছে। চোটের কারণে আশিস নেহরাকে হারানোটা যেন যথেষ্ট ছিল না, হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে গুজরাত ম্যাচ খেলতে পারল না মুস্তাফিজুরও। এই দু’জনকে না পাওয়া নিঃসন্দেহে হায়দরাবাদের কাছে বিশাল ধাক্কা। ভুবনেশ্বর কুমার, নেহরা আর মুস্তাফিজুর— ত্রয়ীর পাশে স্রান, এই কম্বিনেশনে হায়দরাবাদ আক্রমণ এতটাই শক্তিশালী যে প্রতিপক্ষ জাঁকিয়ে বসার সুযোগই পায় না। কিন্তু এখন নেহরা নেই। এই অবস্থায় টুর্নামেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ওরা নিশ্চয়ই মুস্তাফিজুরের দিকে তাকিয়ে। তবে চোট সারিয়ে ও মাঠে নামতে পারে কি না, সেটা দেখার।

বেঙ্গালুরুর বোলিং আবার শুরুতে হোঁচট খেলেও টুর্নামেন্ট যত গড়িয়েছে ততই জমাট হয়েছে। ফাইনালে ওয়ার্নারকে দ্রুত ফেরানোর চেষ্টায় কোনও স্ট্র্যাটেজিই ওরা বাদ রাখবে না। পরিকল্পনা নিশ্চয়ই এই রকম—ওয়ার্নারকে শুরুতেই ফেরাও যাতে হায়দরাবাদ চাপে পড়ে। হায়দরাবাদের অবশ্য ধবন আছে, যে নিজের দিনে প্রচণ্ড বিপজ্জনক। ভারতীয় দলেও ধবন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান। ফাইনালে টিম মালিকেরা ওর কাছে আশা করে থাকবে। ফ্যাঞ্চাইজির হয়ে বড় ম্যাচে জ্বলে ওঠার এটাই আসল সময়। মিডল অর্ডারে যুবরাজ সিংহের মতো ম্যাচ উইনারও আছে হায়দরাবাদের কাছে। কিন্তু ফাইনালে ফারাক গড়ে দিতে চাইলে যুবিকে মানসিক ভাবে আরও মজবুত হতে হবে। গুজরাত ম্যাচে ও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাজে ভাবে নিজের উইকেটটা দিয়ে এল।

ফাইনালে ঘরের মাঠের সমর্থনটাও বেঙ্গালুরুর পক্ষে যাবে। এই টুর্নামেন্টে বিরাট অসাধারণ খেলছে। এমন উজ্জ্বল নক্ষত্রের হাত ধরে আইপিএলে নিজেদের প্রথম ট্রফি জেতার স্বাদ পেতে মরিয়া থাকবে চিন্নাস্বামীর গ্যালারি। আসলে বিরাটকে নিয়ে বলতে গেলে কোনও বিশেষণই এখন আর যথেষ্ট নয়। জোর দিয়ে বলতে পারি, বড় ম্যাচের জন্য ওর সব পরিকল্পনা তৈরি। সেই গেমপ্ল্যান আস্তিনে লুকিয়ে রেখে মাঠে নামবে ও।

টি-টোয়েন্টির লড়াইয়ে ফেভারিট বাছায় আমি কোনও কালেই তেমন বিশ্বাসী নই। কারণ ফর্ম্যাটটাই এমন যে, দিনটা কোন টিমের কেমন গেল তার উপর সবকিছু নির্ভর করে। তবু বলতে বাধ্য হচ্ছি, এই আইপিএলে বেঙ্গালুরু যে ভাবে নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে ক্রমশ প্রথমের সারিতে উঠে এসেছে, মন বলছে এটা ওদের বছর। গত ক’দিন বেঙ্গালুরুতে আবার বৃষ্টি পড়েছে। সম্ভবত তারই প্রভাবে শেষ ম্যাচটায় চিন্নাস্বামীর পিচ কিছুটা স্লো ছিল। তবে আশা করব আজকের পিচটা ভাল হবে। যাতে একটা ধুন্ধুমার ফাইনাল উপভোগ করা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

IPL2016 Virat Kohli
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE