কিছু জিনিস জীবনে সহজে মেলে না। যেমন, কানপুরে কাউকে ট্র্যাফিক নিয়ম শেখানো। কার-পার্কিংয়ের সময় ভ্রাতৃসুলভ মানসিকতার পরিচয় পাওয়া। বা টেস্টে ভারতকে ঘরের মাঠে হারানো।
হয়তো শেকল পরিয়ে প্রথম দিনটা ভারতকে আপনি আটকে রাখতে পারলেন। বা দ্বিতীয় দিন ভারতের বোলারদের জমিয়ে বসতে দিলেন না। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ম্যাচটা আরও টেনে নিয়ে গেলেন। তবু ম্যাচের ভাগ্য কিন্তু আগেই ঠিক হয়ে রয়েছে। ব্যাপারটা আরও উত্তেজক জায়গায় যেতে পারে কিন্তু শেষটা পরিষ্কার। ভারতকে সেই দেখা যায় শেষে সেলিব্রেশনে মেতে উঠতে। যেন বিপক্ষ, যতই তুমি এগিয়ে যাও, তোমার জন্য সামনে কী অপেক্ষা করে আছে সেটা জানো না।
এই বিশ্বাসটা মজবুত করা সহজ হয়ে যায় যখন ব্যাটসম্যানের পরীক্ষা নিতে দলে রবীন্দ্র জাডেজা আর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো বোলার থাকে। জাডেজার বোলিংয়ের সময় একটা ব্যাপারে আপনি আগাম আন্দাজ পেতে পারেন— লেংথ। বাকি সব ফ্যাক্টরগুলো যেন হিচককের সাসপেন্স থ্রিলারের মতো। গতির বৈচিত্র, স্পিন, বাউন্স সবই রহস্য। ব্যাটসম্যানরা আগে থেকে ধারণাই করতে পারে না।
অশ্বিন তো এর মধ্যেই দ্বিতীয় দ্রুততম ২০০ উইকেট নেওয়ার নজির গড়ে ফেলেছে। ক্রমশ কিংবদন্তি হয়ে ওঠার পথে ও। ক্যারম বলের হেঁয়ালি থেকে শুরু করে ফ্লাইট, ল্যুপ, ডিপ, স্লাইডার্স, ক্রিজের প্রচুর ব্যবহার, সঙ্গে গতিতে হেরফের, ওর মতো লম্বা বোলারের এ রকম স্টিমরোলারের সামনে কোনও ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারে না। সঙ্গে আরও একটা বড় ব্যাপার হল দু’জনেরই ব্যাট হাতে ক্রমশ উঠে আসা। ওয়েস্ট ইন্ডিজে অশ্বিন যে ভাবে ব্যাট করেছে, তাতে মনে হয় জাডেজার অহং বোধে কিছুটা ধাক্কা লেগেছে। তবে ওরা দু’জন যদি আসল অলরাউন্ডার হয়ে উঠতে পারে, যে ব্যাপারটার প্রতিশ্রুতি ওরা অনেক দিন থেকেই দেখাচ্ছে, তা হলে ভারতের হোম টেস্টে অতিরিক্ত এক জন স্পিনার নিয়ে নামার সুযোগ রয়েছে। যেটা বিপক্ষের জন্য আরও মারাত্মক হয়ে দাঁড়াবে।
সিরিজে এই অবস্থা থেকে ভারত আরও দাপট দেখাবে। কোহালি হয়তো গ্রিন পার্কে ব্যাটে বেশি রান পায়নি তবে ওর মতো ক্যাপ্টেনকে বেশি দিন দমিয়ে রাখা যাবে না। আরও বেশি রান আসা মানে ভারতীয় স্পিনারদের জন্য আরও আক্রমণাত্মক ফিল্ডিংয়ের সুযোগ। নিউজিল্যান্ডের স্পিনারদেরও দলে বড় ভূমিকা রয়েছে। কন্ডিশনও খাপ খেয়ে গিয়েছে ওদের জন্য। কিন্তু অনভিজ্ঞতাটা ওদের সবচেয়ে বড় বাধা। ইডেন গার্ডেন্সে নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টে কী ভাবে জবাব দেয় সেটা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। যা দেখে এর পরে ভারত সফরে আসার অপেক্ষায় থাকা দলগুলোর শিরদাঁড়ায় ঠান্ডা স্রোত বয়ে যেতে পারে। বা নিউজিল্যান্ডের লড়াই দেখিয়ে দিতে পারে ভারতের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে কী ভাবে খেলতে হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy