Advertisement
E-Paper

লক্ষ্যের দিকে মাত্র চল্লিশ শতাংশ এগোতে পেরেছি

ফুটবলারেরা নৈশভোজ সেরে যে যার ঘরে চলে গিয়েছেন। কিন্ত দুই সহকারী মারিয়ো রিভেইরা ও ফিজিক্যাল ট্রেনার কার্লোস নোদারকে নিয়ে ডাইনিং রুমের টেবলে গভীর আলোচনায় মগ্ন তিনি। সামনে রাখা ক্লাবের তরফে দেওয়া স্মারক। গোকুলম এফসি-কে হারিয়ে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার যন্ত্রণা থেকে শিক্ষা নিয়ে সুপার কাপে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনায় ব্যস্ত ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়ার কোনও দিকেই মন নেই।

শুভজিৎ মজুমদার

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০৩:২০
ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস।

ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস।

শনিবার রাত প্রায় বারোটা। ফুটবলারেরা নৈশভোজ সেরে যে যার ঘরে চলে গিয়েছেন। কিন্ত দুই সহকারী মারিয়ো রিভেইরা ও ফিজিক্যাল ট্রেনার কার্লোস নোদারকে নিয়ে ডাইনিং রুমের টেবলে গভীর আলোচনায় মগ্ন তিনি। সামনে রাখা ক্লাবের তরফে দেওয়া স্মারক। গোকুলম এফসি-কে হারিয়ে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার যন্ত্রণা থেকে শিক্ষা নিয়ে সুপার কাপে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনায় ব্যস্ত ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়ার কোনও দিকেই মন নেই। ব্যস্ততার মধ্যেই একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজারকে।

প্রশ্ন: এত কাছে এসেও খেতাব অধরা। আই লিগের ব্যর্থতা থেকে কী শিক্ষা নিলেন?

আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া: বিশ্বের কোনও লিগেই চ্যাম্পিয়ন হওয়া সহজ নয়। তা সে যে দেশেই হোক। ভারতে আসার আগে অনেক কোচই মনে করেন, সাফল্য পাওয়া খুবই সহজ। বাস্তবের ছবিটা কিন্তু সম্পূর্ণ উল্টো।

প্র: ইস্টবেঙ্গলের চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার কারণ কী?

আলেসান্দ্রো: ম্যাচের পরেও বলেছিলাম, নির্দিষ্ট কোনও কারণ নেই। সারা মরসুম প্রচুর পরিশ্রম করেও অনেক সময় সাফল্য পাওয়া যায় না। আমাদের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। ফুটবলে এ রকম হতেই পারে।

প্র: সুপার কাপের পরেই মরসুম শেষ হয়ে যাবে।নতুন মরসুমের পরিকল্পনা কবে শুরু করবেন?

আলেসান্দ্রো: শুরু তো ইতিমধ্যেই করে দিয়েছি। ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নিয়ে যে লক্ষ্য স্থির করেছিলাম, তার মাত্র চল্লিশ শতাংশ শেষ করতে পেরেছি। এখনও অনেক পথ বাকি। লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে এ ভাবেই পরিশ্রম করে যেতে হবে। আমি মনে করি, পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই।

প্র: আগামী মরসুমে কী ধরনের ফুটবলার নেওয়ার কথা ভাবছেন?

আলেসান্দ্রো: আমি তাদেরই নিতে চাই, যারা আমার খেলার স্টাইলের উপযোগী।

প্র: আপনার তালিকায় কারা কারা আছেন?

আলেসান্দ্রো: (হাসি) এই মুহূর্তে বলা যাবে না।

প্র: ইস্টবেঙ্গল এই কয়েক মাস কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

আলেসান্দ্রো: অসাধারণ। স্বাধীনভাবে কোচিং করিয়েছি। সমস্ত রকম সহযোগিতা পেয়েছি। সমর্থকদের ভালবাসায় অভিভূত। ওদের জন্যই খারাপ লাগছে।

প্র: আপনি তিকিতাকার দেশের কোচ। অথচ আপনার আদর্শ ইয়োহান ক্রুয়েফ নন, জোসে মোরিনহো। যিনি মনে করেন, সাফল্যই আসল। তার জন্য কুৎসিত ফুটবল খেলতেও রাজি।

আলেসান্দ্রো: পেশাদার কোচদের কাছে ট্রফির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু হয় না। সেই অর্থে মোরিনহোর সঙ্গে আমি একমত। একটা পুরনো ঘটনা মনে পড়ে যাচ্ছে। আমি তখন রিয়াল মাদ্রিদের রিজার্ভ দলের দায়িত্বে। একটা ম্যাচের পরে মোরিনহোর সঙ্গে দেখা। আমার কাছে ম্যাচের ফল জানতে চাইলেন। আমি খুব হতাশ হয়ে বলেছিলাম, আমরা জিতেছি ঠিকই। কিন্তু খুব বাজে খেলেছি। মোরিনহো বলেছিলেন, মনে রাখবে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জয়। কী ভাবে জিতলে তা নয়।

প্র: দ্য স্পেশ্যাল ওয়ানের কাছে আর কী কী শিখছেন?

আলেসান্দ্রো: মোরিনহো শিখিয়েছেন, কী ভাবে ফুটবলারদের নিজের মত অনুযায়ী চলতে রাজি করাতে হয়। চারপাশে কী ঘটছে বা ঘটতে পারে তা খুব ভাল বুঝতে পারেন। একটা উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটা বোঝা সহজ হবে। রিয়াল মাদ্রিদে দায়িত্ব নেওয়ার দু’দিনের মধ্যেই ফুটবলার থেকে ক্লাবের সাধারণ কর্মী, প্রত্যেকের যাবতীয় তথ্য মোরিনহো জোগাড় করে নেন। ওঁর মতে, এটা না করতে পারলে দলকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। কারণ, কে কী ভাবছে তা জানা খুবই জরুরি।

প্র: আপনিও কি ইস্টবেঙ্গলে যোগ দিয়ে সেটাই করেছেন?

আলেসান্দ্রো: (হাসি) চেষ্টা করেছি। তবে একা মোরিনহো নন, ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনি, ফাবিয়ো কাপেলো, কার্লো আনচেলোত্তিরও আমি ঘনিষ্ঠ।

প্র: আপনার কোচিংয়ে তা হলে কার প্রভাব বেশি?

আলেসান্দ্রো: আমি প্রত্যেকের কাছে থেকেই শিখেছি। তার পরে পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজের বুদ্ধি প্রয়োগ করে রণকৌশল সাজাই।

প্র: আপনার রণকৌশলের বিশেষত্ব কী?

আলেসান্দ্রো: অবশ্যই আক্রমণাত্মক ফুটবল। কিন্তু রক্ষণ মজবুত করে। কারণ, শুরুতেই গোল খেয়ে গেলে ম্যাচ জেতা কঠিন হয়ে যায়। আমি কখনও সেই ঝুঁকি নিতে চাই না।

প্র: মোরিনহোর সঙ্গে ফের কাজ করতে ইচ্ছে হয় না।

আলেসান্দ্রো: ওঁর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা ব্যক্তিগত। আমাদের মধ্যে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু আমাকে সঙ্গে নেওয়ার জন্য কখনওই মোরিনহোকে বলব না।

প্র: শোনা যাচ্ছে জবি জাস্টিন আগামী মরসুমে এটিকে-তে খেলতে পারেন। অন্যতম সফল স্ট্রাইকারকে আটকানোর চেষ্টা করবেন না?

আলেসান্দ্রো: ইতিমধ্যেই আমি জবির সঙ্গে কথা বলেছি। ওকে বলেছি, ইস্টবেঙ্গলে থাকলে তুমি যা উন্নতি করতে পারতে, তা কিন্তু অন্য কোথায় গেলে হবে না। ভেবে দেখো, এ বার তুমি কী করবে।

Football I League 2018-19 East Bengal Alejandro Menedez
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy