Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Wimbeldon

Wimbledon 2021: বাড়ির মাঝখানে ট্রফিটা রাখব! উইম্বলডনের বাঙালি চ্যাম্পিয়ন মুখিয়ে কলকাতায় আসার জন্য

ওর পরিবারের কাছে গর্ব করার দিন। বিশেষ কারণে এ দিন বাবা কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় ছেলের এই কীর্তি সামনে থেকে দেখতে পেলেন না।

উইম্বলডন জিতে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোর পর সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়।

উইম্বলডন জিতে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোর পর সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি - টুইটার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২১ ২১:১৫
Share: Save:

মাত্র ১৭ বছর বয়সে জুনিয়র উইম্বলডন জিতে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়ে ফেলেছে সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘাসের কোর্টে ফাইনালে প্রতিপক্ষ ভিক্টর লিলোভ একেবারে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে তার কাছে। মাত্র ১ ঘণ্টা ২২ মিনিটের মধ্যে ফলাফল ৭-৫, ৬-৩। এই মহার্ঘ্য ট্রফি বাড়ির একেবারে মাঝখানে সাজিয়ে রাখতে চাইছে বঙ্গ সন্তান

উইম্বলডন জেতা তো অনেক দূরের কথা, সে যে ফাইনাল খেলবে, সেটা স্বপ্নেও ভাবেনি। তাই সমীরের প্রতিক্রিয়া, “ফাইনাল পৌঁছে যাওয়ার পরেও উইম্বলডন জিততে পারব, সেটা ভাবিনি। ঘাসের কোর্টে এই প্রথম বার খেলতে নেমেছিলাম। তাই ভেবেছিলাম দু-একটা ম্যাচ হয়ত জিততে পারব। সেখানে আমি উইম্বলডন জিতে ফেললাম! এরপর আমার জীবন কোন দিকে বাঁক নেবে সেটা আমি নিজেও জানি না। তবে এই ট্রফি কিন্তু আমি বাড়ির একেবারে মাঝখানে রেখে দেব, যাতে সব সময় আমার নজরের সামনে থাকে। শুধু খেলা নয়, পড়াশোনা থেকে শুরু করে জীবনের সব কাজে যাতে এই ট্রফিটা উজ্জীবিত করে, সেই চেষ্টাই থাকবে।”

সমীরের পরিবারের কাছে গর্ব করার দিন। নোভাক জোকোভিচের অন্ধভক্ত সমীরের বাবার বেড়ে ওঠা অসমে। মা বিশাখাপত্তনম মানুষ হয়েছেন। কাজের সুবাদে প্রায় ৩৫ বছর আগে ওঁরা আমেরিকা পাড়ি দেন। সেখানেই সমীরের জন্ম। রয়েছে সমীরের দিদি দিব্যাও। পেট্রোলিয়াম শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কুণালবাবুও ছোটবেলায় খেলাধুলা নিয়ে মজে থাকতেন। শিকড়ের প্রতি টান রয়েই গিয়েছে। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “আমরা দুই ভাই খেলাধুলায় বেশ নামডাক করেছিলাম। দারুণ টেনিস ও গলফ খেলতাম। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলতে পারিনি। তাই সমীরের জন্য সব উজাড় করে দিয়েছি। মাত্র ৬ বছর বয়সে ওর র‍্যাকেটের প্রতি ভালবাসা তৈরি হয়। সেটা এখনও বজায় রয়েছে।”

বিশেষ কারণে এ দিন বাবা ছেলের এই কীর্তি সামনে থেকে দেখতে পেলেন না। তবে কাকা কণাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ভাইপোর ইতিহাস গড়ার সাক্ষী থাকলেন। তাই পয়া কাকাকে নিয়েই এ বার থেকে ভবিষ্যতের টেনিস যুদ্ধে নামতে চাইছে সমীর। হাসতে হাসতেই জানিয়েছে, ‘‘কাকাকে নিয়েই যাব সব জায়গায়।’’

খেলার শেষে উইম্বলডনের ওয়েব সাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সমীর বলে, “আমার প্রশিক্ষক কার্লোস এস্তেভানের স্ত্রী প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই শেষ পর্যন্ত কাকাকে সঙ্গে নিয়ে উইম্বলডন খেলতে এসেছিলাম। কাকা তো আর পেশাদার কোচ নন। তবুও শেষ মুহূর্তে আমাকে সঙ্গ দিতে চলে আসেন। তাই এ বার থেকে কাকাকে সঙ্গে নিয়েই সব জায়গায় খেলতে যাব।”

গত কয়েকটা দিন সমীরের যেন ঘোরের মধ্যে কেটেছে। ফাইল চিত্র।

গত কয়েকটা দিন সমীরের যেন ঘোরের মধ্যে কেটেছে। ফাইল চিত্র।

১৯৯০ সালে এই ঘাসের কোর্টেই জুনিয়র উইম্বলডন জিতেছিলেন লিয়েন্ডার পেজ। তারপর বাকিটা ইতিহাস। দীর্ঘ ৩১ বছর পর সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাল আর এক বঙ্গ সন্তান। সামনে লম্বা পথ। অনেক বাধা আসবে। তবে এহেন সমীর কিন্তু লিয়েন্ডারের মতোই এগিয়ে যেতে চায়। ওর প্রতিক্রিয়া, “পেশাদার সার্কিটে যারা র‍্যাকেট হাতে ধরে, তারা সবাই লিয়েন্ডারের নাম খুবই সম্মানের সঙ্গে নেয়। আমার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই। আমিও ওঁকে অনুসরণ করে এগোতে চাই। তবে সেটা খুব সহজ নয়। কারণ আমাকেও যে লিয়েন্ডারের মতো অনেক কঠিন পথ পেরোতে হবে।”

শুধু সিঙ্গলস নয়, ডাবলসেও অংশ নিয়েছিল সমীর। তবে শনিবারই সেমিফাইনালে হেরে তাকে বিদায় নিতে হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE