কলকাতায় উইম্বলডনজয়ী ইয়ারোস্লাভা শ্বেদোভা। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতায় চলছে বিশ্ব যুব টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপ। সেই প্রতিযোগিতায় কাজাখস্তানের কোচ হিসাবে এসেছেন ইয়ারোস্লাভা শ্বেদোভা। ডাবলসে উইম্বলডন এবং ইউএস ওপেন জিতেছিলেন ২০১০ সালে। ৩৬ বছরের শ্বেদোভা ভারতীয় টেনিসকে আরও পেশাদার হওয়ার উপদেশ দিলেন।
বেঙ্গল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের কোর্টে ১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা। সেখানে প্রশিক্ষক হিসাবে এসে শ্বেদোভা আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “ভারতে অনেক টেনিস খেলোয়াড়। আমাদের দেশে এত জন খেলোয়াড়ই পাওয়া সম্ভব নয়। আসলে আমাদের দেশে বক্সিং অনেক জনপ্রিয়। ছোটদের সেই দিকেই আগ্রহ। ভারতের মতো আমাদের দেশে তেমন কোনও তারকাও নেই টেনিসে, যাঁকে দেখে তরুণেরা অনুপ্রাণিত হবে।”
২০০৭ সালে বেঙ্গালুরু ওপেনে খেলতে এসেছিলেন শ্বেদোভা। কোয়ার্টার ফাইনালে তিনি হারিয়ে দিয়েছিলেন সানিয়া মির্জাকে। গ্র্যান্ড স্ল্যামের সিঙ্গলসে তেমন সাফল্য না পেলেও দু’বার (২০১০, ২০১২) ফরাসি ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছেন। উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিলেন ২০১৬ সালে। শ্বেদোভা বললেন, “টেনিস খেলাটায় ভাগ্যের প্রয়োজন হয়। এখানে সাফল্য আসবে কি না সেটা আগে থেকে বলা সম্ভব হয় না। তাই বাবা-মায়েরা ছেলেমেয়েকে পুরোপুরি টেনিস খেলার মধ্যে পাঠাতে রাজি হন না। পড়াশোনা করতে করতে টেনিস খেলতে দেখেছি আমি দলের অনেককে। ভারতেও সেটা হয়। আমার মনে হয় ছেলেমেয়ের উপর থেকে যদি পড়াশোনার চাপ সরিয়ে নেওয়া যায়, তাহলে তারা আরও অনেক ভাল টেনিস খেলবে। আরও পেশাদার হতে হবে ভারতীয় টেনিসকে।”
গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী শ্বেদোভা সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন আর্থিক দিকটাও। গত বছর সুমিত নাগাল জানিয়েছিলেন তাঁর আর্থিক অবস্থার কথা। শ্বেদোভা বললেন, “টেনিস খেলতে সত্যিই আর্থিক দিকটাও দেখতে হয়। সারা বছর বিভিন্ন দেশ ঘুরতে হয়। সেখানে থাকা, খাওয়ার খরচ তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে কোচদের পারিশ্রমিক। আর এটা তো একা একা খেলতে হয়, তাই সে ভাবে আর্থিক সাহায্যও পাওয়া যায় না।”
সেই কারণেই কি দেশের হয়ে খেলতে খুব একটা আগ্রহ দেখান না টেনিস খেলোয়াড়েরা? শ্বেদোভা বললেন, “দেশের হয়ে খেললে তো র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হয় না। অলিম্পিক্স খেলার একটা আলাদা প্রাপ্তি আছে। সেটা বাদ দিলে দেশের হয়ে খেলতে সত্যিই খুব একটা আগ্রহ দেখান না খেলোয়াড়েরা। দেশের জন্য দু’তিন সপ্তাহ খেলতে যাওয়াকে সময় নষ্ট মনে করেন অনেকে। আর সেই প্রতিযোগিতা খেলতে গিয়ে চোট পেলে আরও অসুবিধায় পড়তে হয়। খুব বেশি অর্থও পাওয়া যায় না দেশের হয়ে খেললে। তাই ধীরে ধীরে খেলোয়াড়েরা দেশের জন্য খেলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। টেনিস তো ব্যক্তিগত খেলা, তাই দেশের হয়ে খেলতে চায় না অনেকে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy