Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Sports News

টাইব্রেকারে নায়ক রুশ গোলরক্ষক, মেসি-রোনাল্ডোর পর বিদায় ইনিয়েস্তাদের

আর্জেন্টিনা, পর্তুগালের পর স্পেন। লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর এবার বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। অবিশ্বাস্য দক্ষতায় টাইব্রেকারে স্পেনের দুটো শট রুখে দিয়ে নায়ক হয়ে উঠলেন রাশিয়ার গোলরক্ষক ইগর আকিনফিভ। ম্যাচেও বার বার তিনিই বাধা হয়ে উঠেছিলেন। টাইব্রেকারেও রাশিয়ার অধিনায়কই জেতালেন দলকে।

ম্যাচ জিতে আনন্দে মাতল রাশিয়া। হতাশ স্পেন। ছবি: এএফপি।

ম্যাচ জিতে আনন্দে মাতল রাশিয়া। হতাশ স্পেন। ছবি: এএফপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৮ ২৩:২১
Share: Save:

আর্জেন্টিনা, পর্তুগালের পর স্পেন। লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর এ বার বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। অবিশ্বাস্য দক্ষতায় টাইব্রেকারে স্পেনের দুটো শট রুখে দিয়ে নায়ক হয়ে উঠলেন রাশিয়ার গোলরক্ষক ইগর আকিনফিভ। ম্যাচেও বার বার তিনিই বাধা হয়ে উঠেছিলেন। টাইব্রেকারেও রাশিয়ার অধিনায়কই জেতালেন দলকে।

১২০ মিনিটের পর ফলাফল ছিল ১-১। এ বারের বিশ্বকাপের প্রথম টাইব্রেকারে রাশিয়া জিতল ৪-৩ গোলে। স্পেনকে মোট ৫-৪ গোলে হারিয়ে আয়োজক দেশ উঠল কোয়ার্টার ফাইনালে। সেখানে তারা খেলবে ক্রোয়েশিয়া-ডেনমার্ক ম্যাচের জয়ীর বিরুদ্ধে।

টাইব্রেকারে স্পেনের হয়ে ইনিয়েস্তা, পিকে, র‌্যামোস গোল করলেও ব্যর্থ হলেন কোকে ও ইয়াগো আসপাস। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পিকের পর তিন নম্বরে মারতে আসা কোকের শট আটকে দিলেন আকিনফিভ। রাশিয়ার হয়ে ফেদর স্মোলেভ, সের্জেই ইগনাশেভিচ, আলেকসান্ডার গোলোভিন, ডেনিস চেরিশেভরা সকলেই গোল করায় আসপাস যখন মারতে এলেন, তখন লুঝনিকি স্টেডিয়াম উত্তেজনায় ফুটছে। মিস করলেই রাশিয়া উঠবে, স্পেন শিবির টেনশনে আক্রান্ত। এই চাপেরই শিকার হলেন আসপাস। আকিনফিভ অবিশ্বাস্য দক্ষতায় পড়তে পড়তেও পা চালিয়ে আসপাসের শটকে বের করে দিলেন বাইরে। সঙ্গে সঙ্গে উত্সবে মেতে উঠল মস্কো। বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল আট বছর আগের চ্যাম্পিয়নরা।

আরও পড়ুন
খেলা দেখে মারাদোনা এবার কত টাকা পেলেন জানেন?

ম্যাচ জয়ের পর উচ্ছ্বাস রাশিয়ান ফুটবলারদের। ছবি: এএফপি।

তিকিতাকা বনাম পাসিং ফুটবল। স্পেন বনাম রাশিয়া ম্যাচকে এ ভাবেই দেখছিল ফুটবলবিশ্ব। পাশাপাশি, স্পেনের দুর্বল রক্ষণ নিয়েও ছিল চর্চা। আর সেই রক্ষণের ভুলই চাপে ফেলল প্রথমার্ধের শেষে। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল হেড করতে গিয়ে হাতে লাগিয়ে ফেললেন জেরার্ড পিকে। পেনাল্টি পেল রাশিয়া়। ৪১ মিনিটে আর্তেম ডিজিউবা পেনাল্টি থেকে সহজেই গোল করলেন ডেভিড দি গিয়াকে উল্টো দিকে ফেলে।

তার অনেক আগে ম্যাচের ১২ মিনিটে স্পেন এগিয়ে গিয়েছিল। ফ্রি-কিক থেকে আসা বলে সের্জেই র‌্যামোসকে আটকাতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল করে বসেছিলেন সের্গেই ইগনাশেভিচ। তাঁর পায়ে লেগেই বল জালে জড়ায়। এ বারের বিশ্বকাপে এটা রাশিয়ার দ্বিতীয় আত্মঘাতী গোল। এবং প্রতিযোগিতার দশম।

আরও পড়ুন
এয়ারপোর্টে পৌঁছেই মেসির মেসেজ, তাড়াতাড়ি আয় রোনাল্ডো!

স্পেন এর পর প্রথমার্ধের প্রায় পুরো সময়ই নিয়ন্ত্রণ করল ম্যাচ। বলের দখল রাখা, ছোট ছোট পাসে আক্রমণ গড়া, একেবারে নিজেদের মেজাজে মাঝমাঠে ঝলমল করলেন ইস্কো, দাভিদ সিলভা, বুসকেটসরা। ইনিয়েস্তাকে রিজার্ভ বেঞ্চে রেখে প্রথম এগারোয় আসেনসিওকে নামিয়েছিলেন স্পেন কোচ ফার্নান্দো হিয়েরো। আক্রমণে গতিই আনাই ছিল উদ্দেশ্য। হতাশ করেননি আসেনসিও। তবে স্পেন ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। বরং বিরতির আগে পেনাল্টি থেকে ১-১ করে লড়াইয়ে ফিরেছিল রাশিয়া।

বিরতির পর রণকৌশল পালটে ডাইরেক্ট ফুটবলে ঝুঁকল স্পেন। বক্সে তোলা হচ্ছিল বল। উদ্দেশ্য ছিলেন স্ট্রাইকার দিয়েগো কোস্তা। কিন্তু, আক্রমণে তীক্ষ্ণতার অভাব ধরা পড়ছিল। কারণ, বল দখলে থাকলেও সৃষ্টিশীলতা থাকছিল না। গোলমুখ খোলাও যাচ্ছিল না। ৬৫ মিনিট পর্যন্ত ৬০০ পাস খেলে ফেলেছিল স্পেন। রাশিয়া সেখানে ২০০ পাসও নয়। যদিও লাভ হচ্ছিল না।

ইনিয়েস্তাকে নামানো হয়েছিল ৬৬ মিনিটে। ৩৪ বছর বয়সির এটাই শেষ বিশ্বকাপ। ৮৪ মিনিটে তাঁর ডান পায়ের শট ডান দিকে ঝুঁকে আটকালেন রুশ গোলরক্ষক। ফিরতি বলে শট নিয়েছিলেন কোস্তার পরিবর্ত হিসেবে নামা আসপাস। যা আবার বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে আটকালেন আকিনফিভ। পর পর দু’বার বাঁচালেন রাশিয়াকে।

নির্ধারিত সময় ১-১ থাকার পর শুরু হল অতিরিক্ত সময়। নকআউটে প্রথমবারের জন্য। ১০৯ মিনিটে পরিবর্ত হিসেবে নামা রডরিগো দুরন্ত ভাবে বক্সের ভিতর ঢুকে এসে শট নিয়েছিলেন। কিন্তু, আকিনফিভ ফের অটল ছিলেন। ১১৪ মিনিটে ফ্রি-কিকের সময় পিকে ও র‌্যামোসকে বক্সের ভিতর জাপটে ধরে রাখায় পেনাল্টির আবেদন জানিয়েছিল স্পেন। কিন্তু ‘ভিএআর’ দেখে সেই দাবি নাকচ করেন রেফারি। অতিরিক্ত সময়ের শেষ লগ্নে গোলে শট নিয়েছিলেন রডরিগো। কিন্তু, তাতে জোর ছিল না। ফলে, এ বারের বিশ্বকাপে প্রথম বারের জন্য ম্যাচ গড়িয়ে ছিল টাইব্রেকারে।

আর সেখানেও রাশিয়ার পরিত্রাতা হয়ে উঠলেন আকিনফিভ। অধিনায়কের মতোই দলকে নিয়ে গেলেন শেষ আটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE