কিংবদন্তি: ১৯৭৪ বিশ্বকাপে বেকেনবাউয়ার। ফাইল চিত্র
ফ্রানজ় বেকেনবাউয়ারের খেলা সরাসরি দেখিনি। কিন্তু ১৯৮৬ বিশ্বকাপে তিনি যখন জার্মানির কোচ ছিলেন, তখন আমার স্বপ্নের নায়ককে খুব কাছ থেকে মাঠে বসে দেখেছি।
আমি যখন খেলতাম, তখন সংবাদ মাধ্যমের অনেকে আমাকে ‘ছোট বেকেনবাউয়ার’ নামে ডাকত বা লিখত। হয়তো আমার খেলার ধরনটা ‘দ্য কাইজার’-এর মতো ছিল বলেই এটা বলা হত। সে কারণেই সম্ভবত সুদর্শন ওই অ্যাটাকিং মিডিও বা সুইপার কাম মিডিও হিসাবে খেলা বেকেনবাউয়ারকে বরাবরই খুব ভাল লাগত আমার। ওঁকে নকল করার চেষ্টা করতাম।
১৯৭৪-সালে বেকেনবাউয়ার যে বার অধিনায়ক হিসাবে ঘরের মাঠে জার্মানিকে বিশ্বকাপ দিয়েছিলেন, সেই দৃশ্য টিভিতে দেখেছি। ইয়োহান ক্রুয়েফ এবং তাঁর নেদারল্যান্ডসকে কী ভাবে পর্যুদস্ত করেছিল জার্মানি, সেটা দেখে চমকে গিয়েছিলাম। আর মেক্সিকোতে বেকেনবাউয়ারের কোচিং দেখেছি। ফুটবলাররা যে জায়গা দিয়ে মাঠে ঢুকতেন, আমি ঠিক সেই জায়গায় বসতাম। কেন জানি না বেকেনবাউয়ার যখন মাঠে ঢুকতেন, তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতাম। স্বপ্ন সফল হলে যে রকম হয়। সে বার দিয়েগো মারাদোনার আর্জেন্তিনার কাছে ফাইনালে হেরে গিয়েছিল জার্মানি। কিন্তু ১৯৯০-তে প্রতিশোধ নিয়েছিলেন বেকেনবাউয়ার। ইতালির মাঠে আর্জেন্তিনাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল বেকেনবাউয়ারের দল। খেলোয়াড় এবং কোচ হয়ে জার্মানিকে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন করার কৃতিত্বের জন্যই আমি তাঁকে ওই দেশের সর্বকালের সেরা মনে করি। তিন- তিনটে বিশ্বকাপ খেলেছেন। একবার করে চ্যাম্পিয়ন, রানার্স ও তৃতীয় স্থান পেয়েছেন। কোচ হয়ে এক বার রানার্স এবং এক বার চ্যাম্পিয়ন। সঙ্গে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়। জার্মানির জার্সিতে এ রকম ঝলমলে ফুটবল জীবন ক’জনের আছে।
বেকেনবাউয়ারের সব থেকে বড় গুণ ছিল নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা। মাঠের মধ্যে পুরো দলকে পরিচালনা করতেন। কোচেদের তৈরি করে দেওয়া রণনীতি তাঁকে বেঁধে রাখতে পারেনি কোনও দিন। মাঠ জুড়ে খেলতেন। দুই স্টপারের সামনে দাঁড়ানো কেউ যে একই সঙ্গে সুইপার এবং প্রয়োজনে আক্রমণ পরিচালনা করতে পারে, সেটা তো ওঁর কাছ থেকেই শেখে বিশ্ব ফুটবল। বলা যায়, নতুন এক পজিশনের জন্মদাতা ছিলেন বেকেনবাউয়ার। ব্রাজিলের কার্লোস আলবার্তোর খেলার মাধ্যমে সুইপার শব্দটা প্রথম শোনা। সেটা জার্মানির প্রাক্তন তারকা আরও আধুনিক করেছিলেন বলা যায়। পাস করার অসাধারণ দক্ষতা ও বিপক্ষ গোলের সামনে আক্রমণ পরিচালনা করার ওঁর একটা অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল। ওঁর কোচিংয়েও দেখেছি জার্মানি একটা দল হিসাবে খেলছে।
গতবার জার্মানি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বিশ্বকাপে। এ বারও তারা খেতাবের অন্যতম দাবিদার। পরপর দু’বার ট্রফি জেতার কৃতিত্ব ওয়াকিম লোর দল দেখাতে পারলে, সেটা বিরাট ঘটনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy