Advertisement
E-Paper

ঠান্ডা মাথা আর বুদ্ধিতে সফল জিজু

ইন্টারনেট ঘাঁটলেই দেখছি রিয়াল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ওঠার পিছনে নাকি প্রধান কারণ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। হ্যাঁ, অবশ্যই রোনাল্ডো একটা বড় কারণ। ওর গোল ছাড়া অনেক ম্যাচ বার করতে পারত না রিয়াল।

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৭ ১৪:০০

ইন্টারনেট ঘাঁটলেই দেখছি রিয়াল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ওঠার পিছনে নাকি প্রধান কারণ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।

হ্যাঁ, অবশ্যই রোনাল্ডো একটা বড় কারণ। ওর গোল ছাড়া অনেক ম্যাচ বার করতে পারত না রিয়াল।

আবার অনেকের মতে টনি ক্রুজ-লুকা মডরিচের মতো মাঝমাঠ থাকলে আর কোনও দলের কিছু ভাবতে হয় না। আমি এখানেও একমত। রিয়ালের মাঝমাঠই নিয়মিত গোল সাজিয়ে দিচ্ছে।

রিয়ালের এই সফল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিযানের পিছনে আর একটা কারণও আছে। তার নাম জিনেদিন জিদান। রিয়ালের কোচ।

জিদানকে দলের ‘ক্যাপ্টেন কুল’ বললে ভুল হবে না। ঠান্ডা মাথা। চতুর সমস্ত স্ট্র্যাটেজি। অবশ্যই মাঠে ফুটবলাররা খেলতে না পারলে কোচের স্ট্র্যাটেজি কার্যকর হয় না। তাতেও বলব জিদানের মগজাস্ত্র ছাড়া এই দল ফাইনালে উঠতে পারত না।

জিদানকে রিয়াল কোচ করে আনার পরে অনেকেই বলেছিল খুব বেশি দিন টিকবে না। প্রথম মরসুমের শেষে রিয়ালকে এগারো নম্বর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানোর পরেও সমালোচনা থামেনি। তখন শুনেছিলাম জিদান নাকি এক মরসুমের বিস্ময়। পরের বার হারিয়ে যাবে। কিন্তু দ্বিতীয়বার দলকে ফাইনালে তুলে জিদান প্রমাণ করে দিল সর্বোচ্চ পর্যায়ে ফুটবল খেলার অভিজ্ঞতার একটা দাম আছে।

বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে ইউরো। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে শুরু করে লা লিগা। এমন কোনও ট্রফি নেই যা ফুটবলার হিসেবে জিদান জেতেনি। নিজে এত অভিজ্ঞ ফুটবলার হওয়ায় ভাল মতোই জানে প্রতিটা পরিস্থিতিতে কী ভাবে দলের থেকে সেরাটা বার করতে হয়। তাই তো ম্যান ম্যানেজার হিসেবে জিদান দশে দশ। রিয়ালের মতো তারকাখচিত দলকে সামলাতে জিদানের মতো ঠান্ডা মাথার কোনও কোচকে লাগে। যার ধৈর্য আছে।

স্ট্র্যাটেজির দিক দিয়েও জিদান কারোর থেকে কম যায় না। ওর সবচেয়ে বড় মাস্টারস্ট্রোক রোনাল্ডোকে স্ট্রাইকারে খেলানো। বয়স বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো মাঠে আর অত বেশি নড়াচড়া করতে পারে না রোনাল্ডো। সেই কারণেই রোনাল্ডোকে স্ট্রাইকারে দিয়ে দেওয়ায় ওর মুভমেন্ট শুধু সীমিত থাকছে পেনাল্টি বক্সের আশেপাশে। তাতে চোট পাওয়ার আশঙ্কা যেমন কমছে রোনাল্ডোর। আবার সঙ্গে গোলটাও করছে। বুধবার রাতে আতলেতিকোর বিরুদ্ধেও তো ৪-৪-২ ফর্মেশনকে দলকে সাজিয়ে রোনাল্ডোকে স্ট্রাইকারে খেলায় জিদান। অফসাইড না হলে একটা গোলও করে দিয়েছিল রোনাল্ডো। লম্বা একটা মরসুমে বিশ্ব ক্লাব কাপ, সুপার কাপের মতো টুর্নামেন্ট খেলতে হয়েছে রিয়ালকে। রোনাল্ডোকে বুঝেসুঝে ব্যবহার করেছে জিদান। লা লিগায় দুর্বল দলগুলোর বিরুদ্ধে ওকে নামায়নি। বিশ্রাম দিয়েছে। তাতেই এখন মরসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রোনাল্ডো ফিট আর ফর্মে।

আতলেতিকোর বিরুদ্ধে তো শুরুর দিকে দু’গোলে পিছিয়ে যায় রিয়াল। তাতেও ভয় পায়নি জিদান। বরং মার্সেলোর ওভারল্যাপ বন্ধ করে দেয় জিদান। ক্রুজ আর মডরিচকেও অনেকটা নীচে নামিয়ে আনে। যাতে ডিফেন্স বাড়তি সুবিধা পায়। নিটফল, আতলেতিকোর আক্রমণ রিয়ালের মাঝমাঠেই আটকে যায়। প্রতিআক্রমণে আবার সুযোগ তৈরি করে রিয়াল। শেষমেশ কাউন্টার অ্যাটাকেই ইস্কোর গোলে দু’পর্বে ৪-২ জিতল রিয়াল।

জিদানের রিয়ালের সামনে এ বার য়ুভেন্তাস। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে কোনও ক্লাব টানা দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়নি। য়ুভেন্তাসও যথেষ্ট ভাল দল। বুফন, দিবালা, হিগুয়াইন কে নেই। তবে একটা জিনিস বলাই যায়, দলের কোচ যখন জিদান কোনও কিছুই অসম্ভব নয়।

Zinedine Zidane Real Madrid Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy