ডিজে-র বাজনার তালে নাচছিলেন র্যান্টি মার্টিন্সের তিন ছেলে-মেয়ে। দেখতে দেখতে নাইজিরিয়ান গোলমেশিন বলছিলেন, “যখন মঞ্চে উঠে হাত নাড়ছিলাম, চিৎকার শুনে অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল। ঘানায় একবার এ রকম অনুষ্ঠানে ছিলাম। কিন্তু এত বড় নয়।”
স্ত্রী মৌমিতার পাশে দাঁড়িয়ে মেহতাব হোসেনের মন্তব্য, “এ রকম তো বিদেশে হয়। অসাধারণ অভিজ্ঞতা।”
অধিনায়ক হরমনজিৎ খাবরা বললেন, “মাঠে নামার আগেই দর্শকদের এই সমর্থন আর উচ্ছ্বাস— এটা কিন্তু বাড়তি মোটিভেশন।
ঘেরা মাঠে লিফটে চড়ে দর্শকরা গ্যালারিতে উঠবেন, এই অভিনব বন্দোবস্ত করে ফেলেছে ইস্টবেঙ্গল। জাকুজি থেকে আধুনিক জিম, ট্রফি রুম, প্রেস কর্নার থেকে কফি শপ— ময়দানে প্রথম লাল-হলুদ তাঁবুতেই। কিন্তু বুধবার দক্ষিণ কলকাতার এক শপিং মলে যে ভাবে আর্মান্দো কোলাসোর টিমকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরকারি ভাবে পরিচয় করানো হল, তা বাংলার ফুটবলে তো বটেই, ভারতীয় ফুটবলে কখনও হয়নি। বিশ্বায়ন আর বাণিজ্যকরণের যুগে যা জরুরি এবং ভবিতব্য। স্পনসররা টাকা দেবেন, কর্তারা দল গড়বেন আর জার্সিতে লোগো লাগিয়ে টিম খেলবে, সে দিন চলে গিয়েছে। এটা ময়দানের দুই বড় ক্লাব মোহনবাগান এবং মহমেডান না বুঝলেও লাল-হলুদ কর্তারা বুঝেছেন। শার্টের পর এ দিন ফুটবলারদের দিয়ে পারফিউম হিসাবে ‘ইস্টবেঙ্গল ডিও’-র উদ্বোধন—ক্লাব কর্তাদের এই ভাবনারই ফল।
শপিং মলের মূল ফটকে ঢুকেই চোখে পড়ছিল লাল-হলুদ পতাকা-বেলুনে মোড়া একটা জায়গা। মধ্যিখানে একটি মঞ্চ। পিছনে বিশাল স্ক্রিন। তার সামনে জমাট ভিড়। ছেলে-মেয়ে-বুড়ো, আধুনিক কেতাদুরস্ত যুবক-যুবতী— আট থেকে আশি, কে নেই সেখানে! চারদিক দিয়ে যে চলমান সিঁড়ি ওঠা-নামা করছে, সেখানে থমকে যাচ্ছেন অনেকে। ইস্টবেঙ্গল ফ্যানস ক্লাবের ছেলে-মেয়েরা তো ছিলেনই। এর আগে দক্ষিণ কলকাতার এক ক্লাবে র্যাম্পে হেঁটে নিজেদের পরিচয় দিয়েছিলেন অ্যালভিটো-মেহতাব-সৌমিকরা। সেটা ছিল স্পনসরদের অনুষ্ঠান। এ বারেরটা একেবারেই ক্লাবের বিপণন টেকনিক। কিপার, ডিফেন্ডার, মিডিও, ফরোয়ার্ড— বিশাল স্ক্রিনে ফুটবলারদের ছবি ফুটে উঠছিল এক এক করে। নিজেদের পরিচয় দিচ্ছিলেন ওঁরা। তার পর র্যাম্পে ক্যাটওয়াক করার ভঙ্গিমায় এসে হাজির হচ্ছিলেন মঞ্চে। আর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ছিল মলের চৌহদ্দি।
এক গামলা দুধে চোনা একটাই— বিদেশি ডুডু আর লিও বার্তোসের নাম মহাতারকা ফুটবলার হিসাবে ঘোষণা করা হলেও, বাদ পড়ল স্থানীয় মহাতারকা লালরিন্দিকার নাম। ডিকা আপাতত জাতীয় দলের সঙ্গে। তবু বিস্মৃতিটুকু দৃষ্টিকটু!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy