Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
পেসারদের নিয়ে বিশেষ ক্লাস

আজ প্রতিশোধের যুদ্ধে বাংলা

শীতের ইডেনে দুই টিমের প্র্যাকটিসের সময় নাকি কর্নাটক টিম ম্যানেজমেন্টের এক মুখ্য ধরেছিলেন বাংলা ম্যানেজারকে। শোনা গেল বলেছেন, আপনাদের ম্যাচটাকেই আমরা সবচেয়ে কঠিন ধরছি। মেনে নিচ্ছি, বিজয় হাজারেতে যা হয়েছিল তা রোজ রোজ হবে না। কত দূর প্রতিপক্ষকে সম্মান প্রদর্শন, মন থেকেই বা কতটা বলা, সন্দেহ আছে। রঞ্জি ট্রফির অধুনা গ্রহে পেশি শক্তিতে কোনও টিম যদি ক্রমাগত আস্ফালন দেখিয়ে থাকে, তা হলে সেটা মুম্বই নয়।

মনোজ-লক্ষ্মী-সুদীপের ছবি তুলেছেন শঙ্কর নাগ দাস

মনোজ-লক্ষ্মী-সুদীপের ছবি তুলেছেন শঙ্কর নাগ দাস

প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:১২
Share: Save:

শীতের ইডেনে দুই টিমের প্র্যাকটিসের সময় নাকি কর্নাটক টিম ম্যানেজমেন্টের এক মুখ্য ধরেছিলেন বাংলা ম্যানেজারকে। শোনা গেল বলেছেন, আপনাদের ম্যাচটাকেই আমরা সবচেয়ে কঠিন ধরছি। মেনে নিচ্ছি, বিজয় হাজারেতে যা হয়েছিল তা রোজ রোজ হবে না।

কত দূর প্রতিপক্ষকে সম্মান প্রদর্শন, মন থেকেই বা কতটা বলা, সন্দেহ আছে। রঞ্জি ট্রফির অধুনা গ্রহে পেশি শক্তিতে কোনও টিম যদি ক্রমাগত আস্ফালন দেখিয়ে থাকে, তা হলে সেটা মুম্বই নয়। গত বছর থেকে ধরলে ভারতের ঘরোয়া ট্রফি আর একটাও পড়ে নেই যা রবিন উথাপ্পাদের কর্নাটক জেতেনি। রঞ্জি, বিজয় হাজারে, ইরানি, আবার বিজয় হাজারে। রবিবারের ইডেনে বাংলার বিরুদ্ধে তারা নামবে, প্রথম ম্যাচ থেকে পাওয়া ছ’পয়েন্টের আত্মবিশ্বাস নিয়েই। কর্নাটক স্কোয়াড দেখেও শিহরিত হতে হয়। উথাপ্পা, মণীশ পাণ্ডে, বিনয় কুমার, স্টুয়ার্ট বিনি বিজয় হাজারে প্রসঙ্গ তুলে বাইশ গজের বাইরে হলেও হতে পারে, কিন্তু বাইশ গজে বাংলাকে কতটাই বা শ্রদ্ধা করবেন এঁরা?

বিজয় হাজারেটা বরং বাংলার প্রতিশোধের আগুনে ঘৃতাহুতি হতে পারে। লক্ষ্মীরতন শুক্ল যেমন এখনও ভোলেননি সে দিনের ঘাতক বারোটা বল। ভোলেননি পুরো ম্যাচে একাধিপত্য রেখেও মাত্র বারোটা বলে ম্যাচ দিয়ে আসা। অশোক দিন্দা মুখে কিছুতেই মানতে চাইলেন না প্রতিশোধের কোনও ভাবনা রানআপে যাওয়ার সময় কাজ করবে বলে। কিন্তু একটু খোঁচাখুঁচির পরই ‘গরমাগরম’ দিন্দা। “বড় ব্যাটসম্যান উল্টো দিকে থাকলে তেতে তো যাই-ই। ইগোর লড়াইটা চলে আসে। আর ওদের প্লেয়াররা বিশ্বকাপের ব্লু-প্রিন্টে থাকলে আমিও আছি। এটা বরং ব্যাক অব দ্য মাইন্ড চলবে।”

শোনা গেল, প্র্যাকটিস-পরবর্তী টিম মিটিংয়ে পেসারদের নিয়ে ক্লাস করেছেন কোচ অশোক মলহোত্র। দিন্দাদের বলা হয়েছে, প্রতিপক্ষকে শুরুতেই যে ধাক্কাটা দাও, সেটা এ বার এখনও দেখছি না। মনে রেখো, বাংলার আসল শক্তি বোলিং। দিন্দার নেতৃত্বাধীন পেস ব্যাটারিকেও দেখা গেল ইডেনের সবুজ পিচ নিয়ে ঊর্ধ্ববাহু হচ্ছে না। এটা মাথায় রাখা হচ্ছে, ঘরে সবুজ পিচ মানে ম্যাচ সত্তর ভাগ পকেটে, ভাবার কারণ নেই। লাইন-লেংথ উল্টোপাল্টা হলে বরং অ্যাডভান্টেজের বারোটা বাজবে। মনোজ তিওয়ারির মতো কেউ কেউ এমন আশঙ্কার কথাও শুনিয়ে গেলেন যে, কর্নাটক উইকেটের ফায়দা তুলে নিলে অবাক হওয়ার থাকবে না।

ও দিকেও তো বিনয় কুমার, বিনি, অভিমন্যু মিঠুন আছেন।

সবুজ উইকেট বাংলার কাছে ঠিক কতটা গ্রহণযোগ্য, কর্নাটকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের চব্বিশ ঘণ্টা আগেও পরিষ্কার হল না। ঘাস ছাঁটা নিয়ে শনিবার সন্ধে পর্যন্ত দু’রকম মত পাওয়া গেল। মুখ্য প্লেয়ারদের কেউ কেউ বললেন, ঘাস ছাঁটার কথা বলা হবে না। যা আছে, তাতেই খেলা হবে। ইরেশ সাক্সেনার জায়গায় নেওয়া হবে শিবশঙ্কর পালকে। আবার টিম ম্যানেজমেন্টের কোনও সদস্য চলে গেলেন কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের কাছে। অল্প কিছু ছাঁটার অনুরোধ নিয়ে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কিউরেটরকে নাকি বলে দিয়েছেন, ঘাস বিশেষ ছাঁটা চলবে না। কিন্তু বাংলাকে যদি টস হেরে এমন সবুজ পিচে ব্যাটিং করতে হয়, তখন?

প্রবীরবাবু বললেন, “তো? ইন্ডিয়া পারছে না অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে?” কিন্তু প্রশ্ন হল, বিপন্নতায় বাংলার ‘কোহলি’ কে হবেন? তিনটে ভরসার নাম একযোগে বলা হচ্ছে। শ্রীবত্‌স গোস্বামী, চার দিনের যুদ্ধে যাঁর টেকনিক এবং মনোভাব এখন তুখোড় দেখাচ্ছে। সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, যাঁকে এ দিনও বলা হল ভবিষ্যতের সেরা লগ্নি। লক্ষ্মী, ব্যাটিং ও বোলিং দুটোতেই ‘শ্রীযুক্ত নির্ভরযোগ্য’। চতুর্থ নাম যাঁর, তিনি গত দুটো ইনিংসে রান পাননি। মনোজ তিওয়ারিকে দেখা গেল এ দিন দ্বিতীয় বার নেটে ঢুকতে।

আসলে মুখে কেউ না বললেও সবাই একটা কথা খুব ভাল বুঝতে পারছে। বাংলা পারছে, কর্নাটকও। গ্রুপের প্রকৃত যুদ্ধ বলে যদি কিছু হয়, তা হলে এটা, রবিবারেরটা।

‘দ্য ম্যাচ’!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE