বিস্ফোরণই বটে!
গত তিন মরসুম আইপিএলে সে রকম একটা পারফরম্যান্স ছিল না ইউসুফ পাঠানের। শনিবারের ওর ইনিংসটা তাই মহাচমক। আসলে ইউসুফের মতো ম্যাচ উইনাররা ধারাবাহিক নাও হতে পারে। কিন্তু যে দিন খেলবে বোলারকে স্রেফ খুন করে ফেলবে। এ দিন ঠিক সেটাই হল।
পাওয়ার হিটারদের মধ্যে এবি ডেভিলিয়ার্স, বিরাট কোহলির মতো কিছু ব্যাটসম্যান আছে, যারা যে কোনও স্টেডিয়ামে, গোটা মাঠ জুড়ে শট খেলার ক্ষমতা রাখে। আর কিছু ব্যাটসম্যানের ব্যাটে এক এক দিন উঠে আসে খুনে মেজাজ, বিশুদ্ধ পাওয়ার হিটিং। সে দিন কোনও বোলার দেখবে না, পিচ দেখবে না, বিপক্ষকে স্রেফ ধ্বংস করে দেবে। ইউসুফ ঠিক এই ধরনের ব্যাটসম্যান।
বছর সাতেক আগে আইপিএলের শুরু থেকে ইডেনে অনেক বিধ্বংসী ইনিংস দেখেছি। শনিবারের পর বলতে বাধ্য হচ্ছি, ইডেনে এটাই আমার দেখা সেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংস।
এই আইপিএলটা ইউসুফের মোটেও ভাল যাচ্ছিল না। সমালোচনার শিকারও হচ্ছিল। আগেও বলেছিলাম ইউসুফের সমস্যা হচ্ছিল শট বাছাইয়ে। শনিবার সব কিছুই ওর পক্ষে গিয়েছে। আরও একটা ব্যাপার, এ দিন কিন্তু ও মাথা স্থির রেখে, শরীর সোজা রেখে ডেল স্টেইনদের বিরুদ্ধে খেলছিল। মাথায় রেখেছিল একটা সোজা নিয়ম, ‘ওয়াচ দ্য বল অ্যান্ড হিট দ্য বল’।
ইউসুফের ২২ বলে ৭২ রানের এই মারকাটারি ইনিংসের জন্য অবশ্য কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্টকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। টানা ব্যর্থ হলেও ইউসুফের উপর ভরসা হারায়নি। টানা ব্যর্থ হলেও ব্যাটিং অর্ডারে কখনও চারে বা কখনও পাঁচে পাঠিয়ে পরীক্ষা করে গিয়েছে। বারবার ইউসুফকে সুযোগ দিয়েছে। ঠিক সময়ে তার পুরস্কারটা পেয়ে গেল কেকেআর। শুধু জিতলই না, প্লে অফে ঘরের মাঠে খেলার সুবিধাও পেয়ে গেল নাইটরা। প্রথমে টানা কয়েকটা ম্যাচে হারের পর এ বার কেকেআর একেবারে ঠিক সময়ে ফর্মের চূড়োয় উঠছে।
বোলিং তো কেকেআরের শক্তি ছিলই। সুনীল নারিন, সাকিবরা অসাধারণ ফর্মে রয়েছে। পেস বিভাগে মর্নি মর্কেলরা টিমকে ভরসা জোগাচ্ছে। এ বার ব্যাটিংয়েও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে গম্ভীররা। এক দিকে রবিন উথাপ্পার স্বপ্নের ফর্ম। তার উপর ইউসুফের এই বিধ্বংসী মেজাজ। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ইডেনের উইকেট কী রকম থাকে সেটা একটা বড় ফ্যাক্টর। উইকেট থেকে পেসাররা না স্পিনাররা সাহায্য পাবে তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। তার সঙ্গে আরও একটা কথা কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, কেকেআরের ব্যাটিং লাইনের সবাই কিন্তু উপমহাদেশের উইকেটে ভালই খেলে। তার উপর পাঠানের এই ফর্ম। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে পঞ্জাবের কপালেও কিন্তু দুঃখ রয়েছে।
ইডেনে ইউসুফ পাঠানের ছবি তুলেছেন শঙ্কর নাগ দাস
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy