Advertisement
E-Paper

ইস্টবেঙ্গলের দশ নম্বরই ভাবাচ্ছে হাবাসের বন্ধুকে

যুবভারতীর এক প্রান্তে ডুডু-র‌্যান্টিকে পাঠিয়ে দিলেন অনুশীলন শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই। নাগাড়ে গোলে বল মারার জন্য। অন্য প্রান্তে ডিফেন্ডার আর মিডিওদের নিয়েই সোমবার সকালে অনুশীলনের ষাট শতাংশ সময় পড়ে রইলেন এলকো সতৌরি। ‘হংকং বার্সা’-র বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে যা আরও প্রকট করে দিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গলের লক্ষ্য‘হারব না ভাই হারব না... মরব না ভাই মরব না’। বিদেশি দলের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল খেলতে নামছে মানেই সোনালি স্মৃতি। পুরোনা দিনের পিয়ং ইয়ং, পাজ ক্লাব, সাম্প্রতিক অতীতের টেম্পাইন রোভার্স, পাদাং-কে হারানো।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪১
নজরে জুটি। কোচ এলকোর চোখ র‌্যান্টি-ডুডুর দিকে। ছবি: উৎপল সরকার।

নজরে জুটি। কোচ এলকোর চোখ র‌্যান্টি-ডুডুর দিকে। ছবি: উৎপল সরকার।

যুবভারতীর এক প্রান্তে ডুডু-র‌্যান্টিকে পাঠিয়ে দিলেন অনুশীলন শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই। নাগাড়ে গোলে বল মারার জন্য।

অন্য প্রান্তে ডিফেন্ডার আর মিডিওদের নিয়েই সোমবার সকালে অনুশীলনের ষাট শতাংশ সময় পড়ে রইলেন এলকো সতৌরি।

‘হংকং বার্সা’-র বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে যা আরও প্রকট করে দিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গলের লক্ষ্য‘হারব না ভাই হারব না... মরব না ভাই মরব না’।

বিদেশি দলের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল খেলতে নামছে মানেই সোনালি স্মৃতি। পুরোনা দিনের পিয়ং ইয়ং, পাজ ক্লাব, সাম্প্রতিক অতীতের টেম্পাইন রোভার্স, পাদাং-কে হারানো। এএফসি কাপের সেমিফাইনালে যাওয়া। কিন্তু আজ, মঙ্গলসন্ধ্যায় পরিস্থিতি তো অন্য রকম। একে আই লিগের ভরা বাজারে ক্লান্তির মধ্যেই এই ম্যাচ খেলতে হচ্ছে ডুড-মেহতাবদের। দ্বিতীয়ত, টিমের সেরা চার ফুটবলারই জাতীয় শিবিরে আটকে। এলকো শুধু লালরিন্দিকার অনুপস্থিতি নিয়েই সাংবাদিক সম্মেলনে এসে যা হা-হুতাশ করলেন তা দেখে অবাক হতে হয়!

লাল-হলুদের নতুন ডাচ কোচ এমনিতে হাওয়ায় ভাসার লোক নন। হংকং-এর ক্লাব কিটচির বিরুদ্ধে এএফসি কাপের দু’নম্বর ম্যাচ খেলতে নামার আগে তাই তিনি সতর্ক। বিপক্ষ টিমের একটা পুরনো সিডি জোগাড় করেছেন কয়েক দিন আগে। তা দেখে এলকো নোটবুকে যা তুলে রেখেছেন, তার মূল প্রতিপাদ্যরক্ষণাত্মক খেলতে খেলতে হঠাৎই গোলের জন্য ঝাঁপায় কিটচি। আর তাতেই গোল তুলে নেয় অনায়াসে। নিজেই বলছেন, “ওদের জেতাটা দেখবেন সব সময় ৩-০, ৪-১ এ রকম হয়। প্রচুর গোল করে ওরা।” বিপক্ষের ৪-৩-৩ ফর্মেশনের সামনে তাই আত্মরক্ষার বর্ম পরেই শুরু করতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল।

মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রথম ম্যাচেই বিশ্রী হার। কিটচি যে আরও শক্তিশালী! জোড়া স্প্যানিশ স্ট্রাইকারের সঙ্গে কোরিয়ান ডিফেন্ডার। সঙ্গে ছ’জন জাতীয় দলের ফুটবলার। কোচ হয়ে যিনি এসেছেন সেই স্পেনের জাতীয় দলের প্রাক্তন কিপার হোসে ফ্রান্সিসকো মোলিনার আগ্রাসী মনোভাব দেখেও চমকে যেতে হয়। “দেখুন আমরা পেশাদার। দল ভাল খেললে তো গর্বিত হবই। কিন্তু আসল কাজ হল জেতা। এখানে জিততেই এসেছি আমরা,” কোনও রাখ-ঢাক না করেই বলে দেন মোলিনা।

কোনও টিমের কোচ এক জন কিপারএই ঘটনা কমই দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। আইএসএলে কেরল ব্লাস্টার্সের কোচ হয়ে এসেছিলেন বিশ্বকাপার ডেভিড জেমস। কলকাতায় আসা কিটচির কিপার-কোচ মোলিনার জীবনপঞ্জিও কিন্তু চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়ার মতো। জিনেদিন জিদানের বিপক্ষে খেলেছেন ফুটবলার জীবনে। বড় রোনাল্ডোর গোল আটকেছেন অনায়াসে। আটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে জিতেছেন লা লিগা। জিতেছেন কোপা দেল রে।

শুধু তাই নয়, আইএসএলে কোচিং করতে আসার আগে বন্ধু আন্তোনিও হাবাস তাঁর কাছে কিছু ভাল ফুটবলারও নাকি চেয়েছিলেন এটিকে-র জন্য। কলকাতায় এসে গার্সিয়া, হোফ্রে, বোরহাদের পারফরম্যান্স নিয়েও খোঁজ নিচ্ছিলেন তিনি। এ রকম হাই প্রোফাইল কোচের মুখে ম্যাচের আগে আগ্রাসন শোভা পায় বইকী।

মোলিনা যদি হন বুনো ওল, তা হলে এলকোও কিন্তু বাঘা তেঁতুল। তিনি জানেন, এই ম্যাচটা ড্র করতে পারলেই ধন্যি, ধন্যি পড়ে যাবে তাঁর টিম নিয়ে। জিততে পারলে তো কথাই নেই। আপাতত তাই এক পয়েন্টের সন্ধানেই নেমে পড়তে চাইছেন তিনি। এ দিন অনুশীলনে যা টিম খেলিয়েছেন তাতে রক্ষণ সংগঠনের পাশাপাশি মাঝমাঠেও হয়তো চমক থাকবে। স্টপারে রাজুর সঙ্গে সুসাক খেলছেন। মাঝ মাঠে মেহতাব, জোয়াকিম, তুলুঙ্গার সঙ্গে মহম্মদ রফিক। তা হলে লিও বার্তোস কি এই ম্যাচে নেই? প্রশ্ন শুনে হাসেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। “এ রকম ম্যাচে কিছু নির্দিষ্ট স্ট্র্যাটেজি থাকে। যেমন অভিজ্ঞ এবং ধারাবাহিক দীপক মণ্ডলকে এই ম্যাচে অধিনায়ক করেছি।”

পরিস্থিতি যা তাতে স্প্যানিশ বনাম ডাচ কোচের লড়াই এক তরফা হবে না বলেই মনে হয়। বরং একটা ধুন্ধুমার লড়াইয়ের ইঙ্গিতই মিলছে। ইস্টবেঙ্গলের খেলা দেখার পর কিটচির শিবিরে আলোচনা হচ্ছে শুধু র‌্যান্টি মার্টিন্সকে নিয়ে। “মালয়েশিয়ার ক্লাবের বিরুদ্ধে এবং আই লিগের দু’টো ম্যাচে দেখেছি। ওই দশ নম্বরটা (র‌্যান্টি) খুব গতিশীল। ছটফটে। গোলটা চেনে। ওকে আটকাতেই হবে,” বলছিলেন কিটচি অধিনায়ক লো কোয়ান। র‌্যান্টির ফর্ম ভরসা দিচ্ছে এলকোকেও। ডাচ কোচের আশা, দর্শক সমর্থনও তাদের বাড়তি শক্তি জোগাবে।

কিন্তু কত দর্শক আসবেন প্রিয় দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখতে? ইস্টবেঙ্গল কর্তারা বসন্তেই চৈত্রের সেল চালু করে দিয়েছেন। একটা টিকিট কিনলে একটা ফ্রি। তাতেও যেন আগুন লাগেনি মশালে। টিকিট বিক্রির হাল খুব খারাপ। তা হলে কি শুধু আই লিগ-ফেড কাপই মোক্ষ সদস্য-সমর্থকদের কাছে। এএফসি কাপের কোনও গুরুত্ব নেই? যে টুর্নামেন্ট জিততে পারলে উয়েফা-ইউরোপা লিগের সমান।

কলকাতার দর্শক কবে যে সাবালক হবেন কে জানে? কুয়োর ব্যাঙ হয়েই পড়ে থাকবেন তাঁরা?

মঙ্গলবারে এএফসি কাপ— ইস্টবেঙ্গল: কিটচি এফ সি (যুবভারতী ৭-০০)।

elko satori ratan chakrabarty east bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy