Advertisement
E-Paper

ঋদ্ধির ইনিংসটা খেলতে পারলে আমারও গর্ব হত

মুম্বই থেকে সকালে শহরে ঢুকে সোজা ইডেন গার্ডেন্স। তার ফাঁকে দ্বিতীয় বারের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতি থেকে শুরু করে ঋদ্ধিমান সাহা, সব কিছু নিয়ে আনন্দবাজারের সঙ্গে কথা বললেন সাকিব আল হাসান। দু’বারের আইপিএল জয়ী টিমের প্রথম এগারোর একমাত্র বাঙালি সদস্য, যিনি এ বারের টিমের অলিখিত ‘ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট’ও।

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০২:০৯
উচ্ছল। শাহরুখের সঙ্গে সস্ত্রীক সাকিব।

উচ্ছল। শাহরুখের সঙ্গে সস্ত্রীক সাকিব।

মুম্বই থেকে সকালে শহরে ঢুকে সোজা ইডেন গার্ডেন্স। তার ফাঁকে দ্বিতীয় বারের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতি থেকে শুরু করে ঋদ্ধিমান সাহা, সব কিছু নিয়ে আনন্দবাজারের সঙ্গে কথা বললেন সাকিব আল হাসান। দু’বারের আইপিএল জয়ী টিমের প্রথম এগারোর একমাত্র বাঙালি সদস্য, যিনি এ বারের টিমের অলিখিত ‘ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট’ও।

প্রশ্ন: চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইডেনে ঢুকলে কী হয়, আজকেরটা ধরে দু’বার আপনি জেনে গেলেন। প্রথম বারের সঙ্গে কোনও তফাত বুঝলেন?
সাকিব: মনে হচ্ছে এ বার উন্মাদনাটা আরও বেশি। তবে তাতে আশ্চর্য হইনি। আমি জানি, ইডেনের আবেগটা কী রকম হয়।


প্র: দ্বিতীয় বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে আপনার ব্যক্তিগত অনুভূতি কী রকম?
সাকিব: দেখুন, প্রথমের সঙ্গে দ্বিতীয়ের তুলনা চলে না। প্রথম কিছু অ্যাচিভ করার অনুভূতি, আবেগ সবই আলাদা। দু’বছর আগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উচ্ছ্বাস অনেক বেশি ছিল। এ বার সেটা কম। আমি কেন, সবার মধ্যেই। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা কম খুশি হয়েছি। আসলে জানতাম, যে ভাবে খেলছি তাতে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা সম্ভব। প্রত্যাশিত।

প্র: প্রত্যাশিত?
সাকিব: হ্যাঁ। ফাইনালের আগে টানা আটটা ম্যাচ জিতেছি। টিমটা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল, ইতিহাস রিপিট করা কঠিন হবে না।


প্র: কী দেখে বিশ্বাস করেছিল? শুধু পারফরম্যান্সে টানা ন’টা ম্যাচ জেতা সম্ভব না। অনেক ফ্যাক্টরও পাশাপাশি কাজ করে। আপনাদের ক্ষেত্রে কী কী কাজ করেছে?
সাকিব: আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলাম, নিজেদের সেরা খেলাটা খেললে খুব কম টিমই আছে যারা সে দিনই আবার নিজেদের সেরা খেলাটা খেলে আমাদের হারাবে। প্রথম কয়েকটা ম্যাচ হারলেও ওই বিশ্বাসটা চলে আসার পর আর সমস্যা হয়নি।

প্র: ফাইনালে দু’শো তাড়া করতে নেমে কখন মনে হল যে ম্যাচটা জেতা যেতে পারে?
সাকিব: দশ ওভারের পর। আমাদের স্কোর তখন নব্বই প্লাস। মাত্র দু’টো উইকেট পড়েছে। দশ-এগারো করে ওভারে তুলতে হত। চিন্নাস্বামীর উইকেটে সেটা অসম্ভব মনে হয়নি। তা ছাড়া দু’বছর আগের ফাইনালে চিপকে ১৮৯ তাড়া করে জিতেছি। ফাইনালে দু’শো তোলার অভ্যেস ছিল বলতে পারেন (হাসি)।

প্র: আইপিএল ফাইনাল নিয়ে একটা মত হচ্ছে, ম্যাচটাকে যে দিক থেকেই দেখা যাক না কেন বাঙালি জিতেছে। কেকেআর চ্যাম্পিয়ন। আবার পঞ্জাবের হয়ে ঋদ্ধিমান সাহা সেঞ্চুরি করে গেলেন। মাঠে দাঁড়িয়ে ঋদ্ধির ইনিংসটা দেখার পর বাঙালি হিসেবে আপনার কী অনভূতি হচ্ছিল?
সাকিব: মোটেও ভাল অনুভূতি হচ্ছিল না (আবার হাসি)। ঋদ্ধি যে ভাবে ব্যাট করল, অসাধারণ।

প্র: ফাইনালে সাকিব আল হাসান ওই ইনিংসটা খেলতে পারলে গর্বিত হতেন?
সাকিব: নিশ্চয়ই। ফাইনালে ও রকম ব্যাটিং, ভাবা যায় না। ঋদ্ধি তো আমাদের কাছে শক্ হিসেবে উপস্থিত হয়েছিল। বিশেষ করে নারিনকে ও ভাবে মারতে আমি খুব ক্রিকেটারকে দেখেছি।

প্র: ক্রিকেটে গেমচেঞ্জার বলে একটা কথা আছে। কেকেআরে এ বার সেটা আপনি ছিলেন।
সাকিব: গত দু’বারের চেয়ে আমার কাজটা এ বার অনেক বেশি ছিল। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। আগের বছরগুলোয় লোয়ার অর্ডারে নামতাম। এ বার চার বা পাঁচে নেমেছি। মিডল অর্ডার সামলানোর দায়িত্বটা আমার ছিল। যেখানে দশ-বারো ওভার থেকে খেলতে হবে।

প্র: বোলিংটাও দুর্ধর্ষ করেছেন। কখনও কখনও নারিনের চেয়েও আপনাকে বেশি কৃপণ দেখিয়েছে।
সাকিব: আমার বোলিং অনেক ভাল হয়েছে। কম দিন ধরে তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি না। তবে ভাল বোলিংয়ের পিছনে রহস্য কী, বলতে পারব না। আমি কখনওই বোলিং নিয়ে বিশেষ ভাবিনি। আজও বুঝতে পারি না, আমার কোন বলটা ঘুরবে আর কোনটা ঘুরবে না!

প্র: আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফেরার আগে কি স্বস্তি হচ্ছে? টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যর্থতার পর সাকিবকে কাঠগড়ায় তুলেছিল পদ্মাপারের মানুষ। তার দু’মাসের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফিরছেন।
সাকিব: আমি কখনওই এটা নিয়ে বেশি ভাবিনি। জানিও না কে কী চিন্তা করছে। আমার কাজ তো মাঠে নেমে পারফর্ম করা।

প্র: কিন্তু আপনার পারফরম্যান্স দেখে বাংলাদেশ নাকি বলছে, সাকিব বরাবরই অসাধারণ ক্রিকেটার। বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের ব্যর্থতা যে, তারা সাকিবের সেরাটা বের করে আনতে পারে না। যেটা কেকেআর পারে।
সাকিব: ও সব জানি না। শুধু জানি, মাঠ ও মাঠের বাইরে যে কাজগুলো করা আমার কর্তব্য, করে যাব। পারব কি পারব না, পরের ব্যাপার। কিন্তু যখন যে টিমের জন্য নামব, একশো শতাংশ দেব। আর সাকিব আল হাসান ক্রিকেট খেলে কারও কথায় বা কাউকে দেখানোর জন্য নয়। খেলে, নিজে শান্তি পায় বলে। ভাল খেললে, সাকিবই সবচেয়ে বেশি শান্তি পায়। নিশ্চিন্তে ঘুমোতে যেতে পারে।

rajarshi gangopadhyay sakib al hasan interview
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy