তিনি আবার ছন্দে ফিরছেন। ফিরোজ শাহ কোটলার হাফ সেঞ্চুরি আবার তাঁর আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে। ধর্মশালায় সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে নামার ২৪ ঘণ্টা আগে সে রকমটাই দাবি করছেন বিরাট কোহলি।
ইংল্যান্ড সফর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে ব্যর্থ হয়ে চলেছেন কোহলি। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে রান পাওয়ার পর পরিস্থিতিটা ঘুরতে পারে বলে মনে করছেন ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। বৃহস্পতিবার এখানে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কোহলি বলে যান, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সময় তিনি ক্রিকেট থেকে যে ছুটিটা নিয়েছিলেন, সেটাই তাঁকে ছন্দে ফিরতে সাহায্য করছে। “দুটো সিরিজের মাঝের এই ব্রেকটা দারুণ কাজে এসেছে। যে যে জায়গাগুলো ঠিকঠাক করার দরকার ছিল, সেগুলো করেছি। শেষ দুটো ম্যাচে একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে ব্যাটিং করতে নেমেছিলাম। অন্তত নিজেকে অনেক আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছিল। কী করব না করব, সেটা মাথার মধ্যে ঠিক করে রেখেছিলাম। একটা ইনিংসের প্রয়োজন ছিল। কোটলায় সেই ইনিংসটা এসেছে,” বলছেন আগের ম্যাচে ৬২ রান করা কোহলি।
ইদানীং মিডিয়া আর প্রাক্তন ক্রিকেটারদের মুখে কোহলি নিয়ে একটা সমালোচনাই ছিল। বার বার অফ স্টাম্পের বাইরে মুভ করা বলে তিনি খোঁচা দিয়ে আউট হচ্ছেন। যে সমালোচনাটাকে কোহলির বেশ ‘মজাদার’ লাগছে। “যখনই দু-তিনটে ইনিংসে আমি রান করতে পারি না, লোকে বলতে থাকে, এ বার আপনার বড় রান করার সময় এসেছে। সবাই ভুলে যায়, গত চার-পাঁচ বছর ধরে আমি সব রকম ফর্ম্যাটে ধারাবাহিক ভাবে রান করে এসেছি। আমি কিন্তু চটকদার কিছু করে দেখাতে চাইছি না। আমার প্রকৃতিগত খেলাটা খেলছি। ওই ভাবেই আমি ক্রিকেটটা খেলতে চাই আর রান করে যেতে চাই। সবার মনে রাখা উচিত যে আমরা মানুষ, যন্ত্র নই।”
টেস্টে ৪০ আর ওয়ান ডে-তে ৫০-এর উপর গড় রাখা কোহলি কিছুটা দার্শনিক হয়ে পড়ছেন নিজের খারাপ সময়ের কথা বলতে গিয়ে। “আপনার কেরিয়ারে খারাপ সময় আসবেই আর তখনই আপনি বুঝতে পারবেন, কে আপনার পাশে দাঁড়াতে তৈরি আর কে আপনাকে ছিঁড়ে ফেলতে। আমি অনেক কিছু শিখেছি। দেখেছি, মানুষ কী ভাবে বদলে যায়। ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে যায়। তবে এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। আমি এ সব এত দিন শুনে এসেছি। এ বার নিজে দেখলাম। এক দিক দিয়ে ভালই হল। এখন নিজেকে অনেক শক্তিশালী মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমার ক্রিকেটটাও আরও ভাল হবে।”
কিন্তু ওই সময় কী মনে হচ্ছিল, যখন প্রতিটা রানের জন্য আপনাকে লড়াই করতে হচ্ছিল? “এক জন ক্রিকেটার হিসেবে তখনই আপনি উন্নতি করার কথা ভাবেন, যখন ব্যাটে রানের খরা চলতে থাকে। যখন আপনি একই ভাবে আউট হতে থাকেন। আমি ড্রয়িংরুমে ফিরে গিয়ে আমার বিশেষ বিশেষ সমস্যাগুলো নিয়ে খাটি। জানি, আবার এ রকম ব্যাড প্যাচ আসবে। তবে এ বার মনে হয়, আমি ভাল ভাবে তৈরি থাকব।”
এর আগে তাঁর বেশ কয়েক জন সতীর্থ যাঁর সম্পর্কে প্রশংসা করেছেন, তাঁর কথা শোনা যাচ্ছে বিরাট কোহলির মুখেও। তিনি-- রবি শাস্ত্র, ভারতের টিম ডিরেক্টর। “রবি সেই কাজটা করছে, যেটা অনেকেই করেননি। টিমকে আত্মবিশ্বাস দেওয়া। পরিস্থিতি যা-ই থাক না কেন, ও আপনার পাশে আছে। আর সেটাই হল সবচেয়ে বড় কথা। কাউকে ধ্বংস করা বা সমালোচনা করাটা তো খুব সোজা কাজ,” বলছেন কোহলি।
ম্যাচের আগের দিনই দু’দল এসে পৌঁছেছে ধর্মশালায়। তা সত্ত্বেও কোহলি মনে করছেন, মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে না। “এখানকার আবহাওয়াটা বিশেষ সমস্যার নয়। দিল্লিতেও আমরা এ রকম ঠান্ডা পাই। দেখতে হবে এখানকার উইকেটটা কী রকম। মনে হচ্ছে ব্যাট-বলে লড়াইটা জমবে,” বলে দিচ্ছেন আত্মবিশ্বাসী কোহলি।