Advertisement
E-Paper

কর্নেলও পারলেন না যুদ্ধে মোহনবাগানকে হারাতে

আরও একটা নাটকীয় জয়। চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরুকে দুমড়ে দেওয়ার পর পাহাড়েও দুর্বার। কর্নেল গ্লেনের দাপট সত্ত্বেও আই লিগে এই মুহূর্তে শীর্ষে অপরাজিত মোহনবাগান। শিলংয়ের স্কোরলাইন দেখলে ভেসে উঠতে পারে যুবভারতীর মধুর স্মৃতি! পার্থক্যের মধ্যে সপ্তাহখানেক আগে পিছিয়ে পড়েও ৪-১ গোলে বেঙ্গালুরু-বধ করেছিল সঞ্জয় সেনের দল। আর শুক্রবার সারাক্ষণ এগিয়ে থেকে শেষমেশ রোমাঞ্চকর ৪-৩ গোলে লাজং শিকার করলেন সনি নর্ডিরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩২
লাজংয়ের কর্নেল গ্লেনকে এ ভাবেই আটকানোর চেষ্টা।

লাজংয়ের কর্নেল গ্লেনকে এ ভাবেই আটকানোর চেষ্টা।

মোহনবাগান-৪ (বলবন্ত-২, কাতসুমি, বোয়া-পেনাল্টি)

লাজং-৩ (কর্নেল-২, উইলিয়ামস)

আরও একটা নাটকীয় জয়। চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরুকে দুমড়ে দেওয়ার পর পাহাড়েও দুর্বার। কর্নেল গ্লেনের দাপট সত্ত্বেও আই লিগে এই মুহূর্তে শীর্ষে অপরাজিত মোহনবাগান।

শিলংয়ের স্কোরলাইন দেখলে ভেসে উঠতে পারে যুবভারতীর মধুর স্মৃতি! পার্থক্যের মধ্যে সপ্তাহখানেক আগে পিছিয়ে পড়েও ৪-১ গোলে বেঙ্গালুরু-বধ করেছিল সঞ্জয় সেনের দল। আর শুক্রবার সারাক্ষণ এগিয়ে থেকে শেষমেশ রোমাঞ্চকর ৪-৩ গোলে লাজং শিকার করলেন সনি নর্ডিরা।

কোন জয়টা বেশি তৃপ্তি দিচ্ছে আপনাকে? ম্যাচ শেষে বাগান কোচ সঞ্জয় সেন ফোনে বললেন, “দু’টো দু’রকমের। দু’টো ট্রফি জিতে একটা টিম ভারতীয় ফুটবলে নিজেদের অপরিহার্য মনে করতে শুরু করেছিল। ধরাকে সরা জ্ঞান করত। বেঙ্গালুরুকে চার গোল দেওয়াটা ছিল ওদের সেই ঔদ্ধত্যের জবাব।” একটু দম নিয়ে বাগান কোচ যোগ করলেন, “লাজং মানে একটা মিথ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এখানে এলে নাকি মোহনবাগান জিততে পারে না। আশা করি, এ বার সেই মিথের অবসান ঘটবে!”

আই লিগে এ দিন জয়ের হ্যাটট্রিকের পর বাগানে ৬ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট। অনেক মরসুম পরে পয়েন্ট টেবলে এক নম্বরে সবুজ-মেরুন। সঞ্জয় অবশ্য বলছেন, “এক নম্বর, দু’নম্বর ভেবে লাভ নেই। পরের ম্যাচেই পরিসংখ্যান বদলে যেতে পারে! তাই আমার কাছে আজকের জয়টাই বেশি জরুরি। বেশি সন্তোষজনক। বেঙ্গালুরু ম্যাচের পরে টিমের পা মাটিতে রাখতে পারাটাই ছিল আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। শিলংয়ের রেজাল্ট দেখে এখন মনে হচ্ছে, হ্যাঁআমি পেরেছি।”

আই লিগে হাফডজন ম্যাচ অপরাজিত বাগান। রেকর্ডের গাড়িতে চেপে যে স্বপ্নের দৌড় শুরু করেছেন কাতসুমি-বলবন্তরা, তা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ করতে চাইছেন তাঁরা! আর সঞ্জয়ের দলে এ বছর মশলারও অভাব নেই। মাঠে দাপুটে ফুটবলের সঙ্গে টিম কম্বিনেশনের চমত্‌কার মিশেল বাগানকে ক্রমশ অপ্রতিরোধ্য করে তুলছে! নর্ডি-বলবন্তদের নেতৃত্বে যেমন ধুন্ধুমার অ্যাটাকিং লাইন, তেমনই বেলো-কিংশুকের যুগলবন্দিতে শক্তিশালী ডিফেন্স। মাঝমাঠে শুধু শেহনাজ-বিক্রমজিত্‌দের মধ্যে একটু বাড়তি প্রচেষ্টা থাকলে, লাজং ম্যাচের স্কোর আরও সম্মানজনক হতে পারত। তাতেও অবশ্য সাড়ে চার বছর ট্রফিহীন বাগান সমর্থকরা ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।

শুরুর পনেরো মিনিটের মধ্যেই বলবন্ত সিংহের জোড়া গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর বাগানের ‘মিডল অর্ডার’ ধসে পড়ে। মাঝমাঠের ব্যর্থতায় পুরো টিম তখন ডিফেন্স করতে ব্যস্ত। একটা সময় মনে হচ্ছিল, লাজং-ই ২-০ এগিয়ে! পাহাড়ে হঠাত্‌ কিছু সময়ের জন্য কম্পনের কারণ কী? সঞ্জয়ের ব্যাখা, “আত্মতুষ্টি এবং খারাপ মার্কিং। আই লিগের মতো লম্বা টুর্নামেন্টে টিমের ধারাবাহিকতা ধরে রাখাটাই আসল চ্যালেঞ্জ যে কোনও কোচের কাছে। কলকাতায় ফিরে আমি আজকের ভুল-ত্রুটি নিয়ে বসব ফুটবলারদের সঙ্গে।”

তবে কয়েকটা ভুল করেও হাসিমুখে মাঠ ছাড়তে পেরেছেন এ দিন সবুজ-মেরুন জার্সিধারীরা প্রধানত লাজংয়ের একঘেয়ে ফুটবলের জন্য। কোনও উইং প্লে নেই। শুধু ‘ডাউন দ্য মিডল’ দৌড় আর লং বল। লাজং কোচ হয়তো বিপক্ষের মাঝমাঠের দুর্বলতাকে কাজে লাগাতে চাইছেন। একটা সময় পর্যন্ত সফলও হলেন। কিন্তু এক ঘণ্টার মাথায় বিক্রমজিতের বদলে শৌভিক চক্রবর্তীকে নামিয়ে বাগান কোচ ৪-৩-৩ থেকে ৪-৪-২ যেতেই গোলের সব রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে যায় পাহাড়ি দলের সামনে। যদিও বা কিংশুকের ভুলে সেই সময়ই পেনাল্টি থেকে ২-২ করেন গ্লেন, তবু পরের পঁচিশ মিনিট বিপক্ষকে আর এক ইঞ্চি জমি ছাড়েনি সঞ্জয়-ব্রিগেড। সেই সময়ই ২-২ থেকে ৪-২ কাতসুমি আর বোয়ার গোলে।

এখানেই অবশ্য নাটকের শেষ নয়। বাগান কোচ যে আশঙ্কার কথা শুরুতে বলছিলেন, সেই আত্মতুষ্টির রোগ ম্যাচের শেষ মিনিটেও পিছন ছাড়েনি তাঁর টিমের। বিপক্ষকে ফের হালকা ভাবে নেওয়ার ‘জরিমানা’ উইলিয়ামসের গোল।

লাজং স্ট্রাইকাররা যেন জানিয়ে গেলেন-- সঞ্জয় স্যার, আপনাকে এখনও প্রচুর খাটতে হবে!

মোহনবাগান: দেবজিত্‌, ধনচন্দ্র, বেলো, কিংশুক, প্রীতম, শেহনাজ (লালকমল), কাতসুমি (ভার্গব), বিক্রমজিত্‌ (শৌভিক), বলবন্ত, নর্ডি, বোয়া।

mohun bagan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy