Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তরুণ ব্রিগেডই ভরসা করিমের

ডু অর ডাই। ডার্বি জেতা চাই-- বড় ম্যাচের আগের সকালে এটাই রিং টোন মোহনবাগানে। কিন্তু জেতাবেন কে? সাতসকালে তাঁবুতে এসেই তো গটগট করে বেরিয়ে গেলেন ওডাফা ওকোলি। গোষ্ঠ পাল সরণি দিয়ে বেরিয়ে গেল তাঁর গাড়িটা! যা দেখে সমর্থকদের প্রশ্ন, চোটের জন্য দলে নেই তো কী আছে! অনুশীলনে তো থাকতে পারতেন? উত্তরটা দিলেন মোহনবাগান কোচ করিম বেঞ্চারিফা।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৪ ০৯:৩০
Share: Save:

ডু অর ডাই। ডার্বি জেতা চাই-- বড় ম্যাচের আগের সকালে এটাই রিং টোন মোহনবাগানে।

কিন্তু জেতাবেন কে? সাতসকালে তাঁবুতে এসেই তো গটগট করে বেরিয়ে গেলেন ওডাফা ওকোলি। গোষ্ঠ পাল সরণি দিয়ে বেরিয়ে গেল তাঁর গাড়িটা! যা দেখে সমর্থকদের প্রশ্ন, চোটের জন্য দলে নেই তো কী আছে! অনুশীলনে তো থাকতে পারতেন? উত্তরটা দিলেন মোহনবাগান কোচ করিম বেঞ্চারিফা। “অনুশীলনে নামতে চাইছিল। আমিই বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম নিতে বললাম।”

ওডাফা যাঁদের রেখে গেলেন তাঁরা কারা? গড়িয়ার পঙ্কজ মৌলা, জৌগ্রামের রাম মালিক, উত্তরপাড়ার প্রীতম কোটাল। চিডি-মেহতাবদের অভিজ্ঞতার সামনে তাঁরা তো নেহাতই বামন। ডার্বির অভিজ্ঞতা এক কিংবা দুই। কসবার চিজোবা ক্রিস্টোফারের আবার এটাই প্রথম বড় ম্যাচ। ইস্টবেঙ্গলের অভিজ্ঞ ব্রিগেডকে হারাতে করিমের তুরুপের তাস তারুণ্য। তার জোশ এতটাই যে, বাগানের রাইট ব্যাক উত্তরপাড়ার প্রীতম কোটাল বলেই ফেললেন, “মোগা-চিডিদের আটকাতে পারলেই তো নিজেকে চেনাতে পারব। ভাল খেললে আগামী মরসুমের চুক্তিটাও আকর্ষণীয় হবে।” আর করিমের ইয়ং ব্রিগেডের অন্যতম প্রধান অস্ত্র জৌগ্রামের শান্তশিষ্ট রাম মালিকের চোয়াল শক্ত করে হুঙ্কার, “কাল মাঠে দেখা যাবে।” কিন্তু মাঠে প্রীতমদের লিড করবেন কে? করিমের প্রথম পছন্দ ছটফটে কাতসুমি।

যা শুনে হাসছেন বৃহস্পতিবার রাতে শহরে আসা তোশিহিরো ইউসা। ফুকুশিমার এই সিভিল ইঞ্জিনিয়ার কাতসুমির ছোট ভাই। স্ত্রী হারোহিকে নিয়ে দাদার বীরপুজো দেখে বলে উঠলেন, “মাই গড! ও তো এখানকার হিরো গিয়েছে।” একটু থেমেই ফের বললেন, “দাদার খেলা দেখতেই কলকাতা এলাম। ওর গোলে ইস্টবেঙ্গল হারলে স্যাটারডে নাইট দারুণ কাটবে।” সস্ত্রীক ভাইকে নিয়ে বাগানের ‘ফুকুশিমা বম্বার’ লাঞ্চ সারতে যাওয়ার আগে বলে গেলেন, “কাল খেলা দেখুন আর আমার জন্য প্রার্থনা করুন। তা হলে জিতবই।”

কিন্তু ইস্টবেঙ্গল অনুশীলনে তো ওপারা নেমে পড়েছেন। শুনেই পাশ থেকে পাহাড়ি তরুণ আইবরের সোজাসাপটা জবাব, “কে খেলবে কে খেলবে না, অত দেখতে চাই না। জিততে চাই।”

রাম, পঙ্কজদের মতো ছটফটে জুনিয়রদের জন্য শিল্টনের টিপস, “আমাদের গোলের দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে ওদের গোলের দরজা খুলে দে। তা হলেই অস্ত্রোপচারের আগে সচিব অঞ্জন মিত্রকে জয় উপহার দিতে পারবি।”

চোখে রোদচশমা। পরনে নীল শার্ট আর অফ হোয়াইট ট্রাউজার। গলায় মাফলারের মতো জড়ানো স্কার্ফ। সতীর্থ আইবরকে বাইকে তুলে বাড়ি যাওয়ার আগে মালয়ালি তরুণ সত্যেন সাবিথও বলে গেলেন। “আমার হিরো আইএম বিজয়নের মতো ডার্বিতে গোল করে দলকে জেতাতে চাই।” কিন্তু চিডি-মোগারা যখন হানা দেবে? ইচের চটজলদি উত্তর, “ওদের তো আগেও সামলেছি।”

আর ক্রিস্টোফার? অনুশীলনের পর ডার্বির জন্য একাগ্র থাকতে একা গোটা মাঠ দৌড়াচ্ছিলেন। বলছেন, “ডার্বি ম্যাচে খেলার স্বপ্ন অবশেষে সত্যি হবে!” সঙ্গে আরও বললেন, “ওডাফা নেই। তাই আমাকে ঘিরে সমর্থকদের এই প্রত্যাশা স্বাভাবিক। যে ভাবেই হোক গোল করতেই হবে। তিন পয়েন্ট চাই।” নিজের গাড়ি নেই। কেরিয়ারের প্রথম ডার্বি ম্যাচের আগের সকালে ট্যাক্সি ধরতে ইডেনের দিকে হাঁটতে শুরু করে দিলেন করিমের এই নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার। ততক্ষণে গঙ্গাপারের তাঁবুতে তাঁর জন্য স্লোগান উঠে গিয়েছে, “ডালের সঙ্গে পোস্ত/গোল করবে ক্রিস্টো।”

ইস্টবেঙ্গলে ওমোলো: ইস্টবেঙ্গলের ইউথ ডেভলপমেন্টের জন্য আসছেন ময়দানের প্রাক্তন ফুটবলার স্যামি ওমোলো। ক্লাব সূত্রে খবর, খুদে প্রতিভা বেছে লাল-হলুদে ভবিষ্যতের ফুটবলার তৈরি করবেন তিনি। এই মুহূর্তে কিনিয়াতে ইউথ ডেভলপমেন্টের কাজের সঙ্গেই যুক্ত নয়ের দশকের শেষ দিকে লাল-হলুদে খেলে যাওয়া কিনিয়ার জাতীয় দলের এই ফুটবলার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mohun Bagan A.C. iLeague Karim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE